‘প্রথম দেখায় প্রেম’ কথাটায় কোনো দিন বিশ্বাস করিনি। কারণ, মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্যে আমি কখনো অকৃষ্ট হই না। তার প্রেমে পড়ার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।

নাম না হয় না–ই বলি। একটা প্রজেক্টে তার সঙ্গে দেখা। অনেক মানুষের ভিড়ে খুব যে একটা আলাদা, প্রথম দেখায় তা মনে হয়নি। কিন্তু একটা সময় খেয়াল করলাম, সবাই তার আচরণ, কাজ, কথায় মুগ্ধ। এ মুগ্ধতা আমাকে সেভাবে স্পর্শ করেনি; কারণ, দূরত্ব ছিল। সকালে যখন হাঁটতে বের হতাম, দেখতাম, সে জঙ্গলে ঘুরছে। নানা কিছু কুড়াচ্ছে, নয়তো কুকুরের বাচ্চা কোলে নিয়ে টংদোকানে ধোঁয়া–ওঠা চা খাচ্ছে। সাধারণ সৌজন্য বিনিময় হতো, ছোটখাটো সম্ভাষণ—এ পর্যন্ত।

আরও পড়ুনপ্রথম প্রেম কেন ভোলা যায় না২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

একদিন ভোরে দেখি একটা গাছের নিচে চোখ বুজে ধ্যানের ভঙ্গিতে বসে আছে। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। এরপর সুপ্রভাত জানালাম। চোখ মেলে চাইল, যেন ধ্যানভঙ্গ হলো। এত ভোরে গাছের নিচে বসে আছে কেন, জানতে চাইলাম। আমাকে ইশারায় কথা বলতে বারণ করল এবং কাছে ডাকল। মন্ত্রমুগ্ধের মতো কাছে গেলাম, সে উঠে দাঁড়াল এবং তার বসার জায়গায় চোখ বন্ধ করে বসতে বলল। আমি চোখ বুজে ধ্যানে বসলাম।

মিষ্টি একটা সুবাস, বুক ভরে শ্বাস নিলাম। পরের ঘটনাটার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। আমার ওপর যেন শত শত পাপড়ি ঝরে পড়ল। চোখ মেলে দেখি, কোথাও কেউ নেই। আমি একা আর চারপাশে ঝরে পড়া তারার মতো শুভ্র শিউলি ফুল। বুঝতে পারলাম, সে গাছটায় ঝাঁকি দিয়ে আমার ওপর ফুল ফেলে চলে গেছে।

আরও পড়ুনসুখী দাম্পত্য সম্পর্কে থেকেও কেন মানুষ প্রেমে পড়ে?১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এক দিন পর প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তার সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। দুজন দুদিকে চলে গেছি। ভেবেছিলাম, এ ক্ষণিকের মোহ। কিন্তু এখনো খুব ভোরে ঘুমের ঘোরে শিউলির সুবাস আমাকে আচ্ছন্ন করে। মনে হয়, শতসহস্র শিউলি আমার ওপর ঝরে পড়ছে।

আমি তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। শুনেছি, অন্য শহরে আরেকটা প্রজেক্টে কাজ করছে। এখন শুধু মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষা।

আরও পড়ুনআম্মার ভয়ে প্রেম করিনি, এখন আম্মাই বলে, তুমি খুঁজে আনো০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম মা-বাবা হতে যাওয়া দম্পতিদের জন্য নির্দেশনামূলক গবেষণার ফল প্রকাশ

প্রথমবারের মতো মা-বাবা হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন, এমন দম্পতিদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ও সঠিক নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। এসব সেবা ও নির্দেশনা নিয়ে কিছু গবেষণা পরিচালনা করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ। ‘সংযোগ প্রকল্প’ নামের একটি প্রকল্পের আওতায় এসব গবেষণা চালানো হয়েছে। এসব গবেষণা নতুন মা-বাবা হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন, এমন দম্পতির স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য, ফলাফল ও অভিজ্ঞতা আমন্ত্রিত অতিথিদের জানানো হয়। আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেভ দ্য চিলড্রেন ও জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় চলমান প্রকল্পটির নেতৃত্বে রয়েছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। বহুদেশীয় প্রকল্পটি নোয়াখালী ও মাদারীপুর জেলার মোট আটটি উপজেলায় গবেষণা কার্যক্রম শেষ করেছে। এই প্রকল্পে করা গবেষণাগুলো হলো ব্যারিয়ার অ্যান্ড ফ্যাসিলিটেটর অ্যানালিসিস, পিএনসি এক্সপেক্টেশন ভার্সেস রিয়েলিটি স্টাডি, র‍্যাপিড সার্ভে, ইম্প্যাক্ট ইভালুয়েশন ও রিয়েলিস্ট ইভালুয়েশন।

অনুষ্ঠানে দুটি উপস্থাপনার মাধ্যমে গবেষণার ফল তুলে ধরেন আরসিএইচের উপপরিচালক ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সহযোগী বিজ্ঞানী বিধান কৃষ্ণ সরকার।

এরপর সংযোগ প্রকল্পের সার্বিক বিষয় নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক মুক্ত আলোচনা হয়। এটি পরিচালনা করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রোগ্রামের (সিসিএসডিপি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার। তিনি বলেন, ‘সংযোগ প্রকল্পটি এপ্রিলে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এটি থেকে পাওয়া ফলাফল ও তথ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেবাদানকারীদের মাধ্যমে প্রসব–পরবর্তী পর্যায়ে মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। সরকারের সীমিত লোকবলের সাহায্যেও এই প্রকল্পের অর্জনগুলোর প্রভাব ধরে রাখতে সক্ষম হবে।’

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি বিভাগের ডিরেক্টর রিফাত বিন সাত্তার বক্তব্যে বলেন, ‘সংযোগ প্রকল্পটি মামণি প্রকল্পের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুটি জেলায় বাস্তবায়ন করা হয়। আমরা আশা করছি, সংযোগ প্রকল্পের পাইলটিং থেকে পাওয়া তথ্য আমাদের অন্যান্য প্রকল্প এলাকায়ও বাস্তবায়ন করা যাবে। এ ছাড়া সরকারও এই তথ্য ও ফলাফল বিভিন্ন নীতিনির্ধারণ এবং প্রকল্পের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারবে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘সংযোগ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এতে প্রথমবারের মতো মা–বাবা হওয়া দম্পতিদের প্রসব–পরবর্তী সেবা ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা হয়েছে। আশা করি, গবেষণা থেকে পাওয়া এসব তথ্য ও ফলাফল সরকারের নীতিনির্ধারণে সহায়তা করবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসি অ্যান্ড এএইচের লাইন ডিরেক্টর ডা. এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএমের পরিচালক মো. তসলিম উদ্দিন খান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ইউনিটের পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর সাবিনা পারভীন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অর্থ বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হক প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ