বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যক্তি ইলন মাস্কের স্টারলিংকের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. এমদাদ উল বারী।

আজ সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘রিকমেন্ডেশনস বাই দ্য টাস্কফোর্স অন রিস্ট্র্যাটেজাইজিং দ্য ইকোনমি’ শীর্ষক শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে এ কথা বলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘ডিজিটাল রূপান্তর এবং এমএসএমই বৃদ্ধির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্ককে পাঠানো আনুষ্ঠানিক চিঠিতে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবার উপযোগিতার বিষয়টি তোলেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরে আসার আমন্ত্রণ এবং আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো.

এমদাদ উল বারী বলেন, অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে ভোক্তাদের কাছে ইন্টারনেট–সেবা পৌঁছায়। প্রতিটি ধাপেই ভালো অঙ্কের অর্থ কেটে রাখা হয়। ইন্টারনেটের দাম না কমার পেছনে এটি অন্যতম বাধা। আশা করছি মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে কিছু অগ্রগতি দেখা যাবে। এ সময় তিনি স্টারলিংকের বিষয়টি তোলেন।

নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নিজেরাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে

নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নিজেরাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে মনে করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. এমদাদ উল বারী। তিনি আরও বলেন, সমন্বয়ের অভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। বিটিআরসিকে প্রথমে স্বাধীন সংস্থা করা হলেও পরে আইন সংশোধন করে বলা হলো যে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারের (মন্ত্রণালয়ের) পূর্বানুমতি লাগবে; অর্থাৎ স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিজেই সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এ কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কঠিন হচ্ছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশে ইন্টারনেটের খরচ অনেক বেশি। কারণ, ইন্টারনেট ব্যয়ের বেশির ভাগই চলে যায় সরকারকে কর দিতে গিয়ে। ফলে সরকার করহার না কমালে ইন্টারনেটের দাম কমবে না। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়বে না।

অন্য আলোচনা

এই অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাসরুর ও বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মনজুর হোসেন। তাঁরা দুজনেই অর্থনীতির কৌশল পুনর্নির্ধারণ–সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্য।

ফাহিম মাসরুর বলেন, শহরের তুলনায় গ্রামে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিমাণ অনেক কম। এর পেছনে তিনটি প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যবহারকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা, সরবরাহ শৃঙ্খলে অধিক ধাপ এবং ডেটা পরিবহনের উচ্চ ব্যয়।

অন্যদিকে ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য একটি আলাদা এসএমই ব্যাংক করার পরামর্শ দিয়েছেন মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, এসএমই নীতিমালায় আলাদা এসএমই ব্যাংকের কথা বলা থাকলেও সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। সরকারি ব্যাংকগুলোতে এসএমই বিভাগ থাকলেও সেগুলো পুরোপুরি এসএমই–বান্ধব নয়। অথচ দেশে এসএমই খাতের পরিসর বাড়ছেই। এমন বাস্তবতায় আলাদা একটি এসএমই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, শেয়ারট্রিপের প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হক প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক এসএমই ব ব ট আরস সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। একইসঙ্গে বিদায়ী সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১.১১ পয়েন্ট বা ০.০২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২০০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৯.২২ পয়েন্ট বা ০.৪৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯০৯ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭.১৯ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ০.৯২ পয়েন্ট বা ০.০৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬ পয়েন্টে।

আরো পড়ুন:

৬ মিউচুয়াল ফান্ডের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ

পুঁজিবাজারে সূচকের পতন

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫ হাজার ৪৫১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১০৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২৪৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টি কোম্পানির, কমেছে ২০৩টির ও অপরিবর্তিত আছে ৩৭ টির। তবে, ১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়নি।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩১.৮৭ পয়েন্ট বা ০.২১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ০.৪৯ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৯০৫ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ০.০৮ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৭৯৪ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ০.১৩ শতাংশ কমে ৯৪১ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ১.৮৭ শতাংশ কমে ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ৪৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২ হাজার ৪৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ৯৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১১৯টি কোম্পানির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৭টির।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ফি কালেকশন সেবা দেবে ব্র্যাক ব্যাংক 
  • জিরো কুপন বন্ডের মাধ্যমে দেড় হাজার কোটি টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব পেল ব্র্যাক ব্যাংক
  • পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা