যুবদলের কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের জায়গা হবে না : সজল
Published: 24th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেছেন, যুবদলের কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের জায়গা হবে না। আমরা চিনি ও জানি কারা যুবদলের বিগত সময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
রাজপথে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদেরকে যুবদলের স্থান দেওয়া হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদেরকে কেউ আশ্রয় প্রশ্রয় দিবেন যুবদলের সেই সুযোগ নাই।
সোমবার ( ২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর থানা ও উপজেলার ২৭টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়ন যুবদলের কর্মীসভা ১০নং ওয়ার্ড যুবদল ও ১নং ওয়ার্ড উদ্বোধন শেষে কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, আর যারা আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবেন তাদের আমলনামা কিন্তু আমাদের কাছে জমা দিতে হবে। বিগত দিনে কারা কোন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন তার ছবিসহ আমলনামা দিতে। আমাদের সাথে রাজনীতি করতেন আর আওয়ামী লীগের নেতার সাথে আঁতাত করে আপনারা কাজ করেছে সেই সব নেতারাও কিন্তু কমিটিতে স্থান পাবেন না।
আর অর্থের লেনদেনে কাউকে যুবদলের কমিটিতে স্থান দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। মহানগর যুবদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে কেউ বলতে পারবে না যে একটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১দফা যে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সেখানে কিন্তু যুবকদের কথা বলা হয়েছে। যুব সমাজকে আত্মিকভাবে ও ব্যবসায়িকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। আপনারা আমাদের ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠমো মেরামতের দাবি গুলো তোমাকে মানুষের মাধ্যমে তুলে ধরবেন এবং তাদেরকে বুঝাবেন।
তিনি বলেন, আজকে যে রেমিটেন্স যোদ্ধা আমাদের রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে তার অবদান কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের। তিনি বলেছিলেন আমি করুণা চাই না আমার দেশের ১০ কোটি লোক আছে ২০ কোটি হাত কাজ করে খেতে চায় আমাদেরকে কর্মস্থানের ব্যবস্থা সুযোগ করে দেন। সেই সময়ে তিনি আমাদের দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য আমাদের দেশের লোকদেরকে বিদেশে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যুবদলের রাজনৈতিক করতে গিয়ে বিগত এই ১৬টি বছর অনেক বিএনপি ও হাজার হাজার যুবদলের নেতাকর্মী হত্যা ও গুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সর্বশেষে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আমাদের মহানগর যুবদল নেতা স্বজন নিহত হয়েছে।
আর আমাদের শত শত নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছে। সুতরাং আমাদের এই কষ্টের ফলকে আপনারা ধ্বংস করতে পারবেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন দলের নীতি ও আদর্শ মেনে সবাইকে রাজনীতি করতে হবে। আর সেই নির্দেশনা যুবদলের নেতাকর্মীদেরকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। আমি আর শাহেদ হয়তোবা একদিন থাকবো না কিন্তু এই আমাদের এই সংগঠন যুবদল কিন্তু থাকবে। সুতরাং কাউকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে দিব না।
তিনি আরও বলেন, যারা বিগত দিনে রাজপথে আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তারা সমাজের জন্য কাজ করতে হবে। সমাজের মানুষের উপকার করতে হবে তাদের কাছে যেতে হবে তাদের কথা শুনতে হবে ।
সে যদি সমাজে কাজ না করে মানুষের সাথে থামবিজ্ঞতা দেখাও অহংকারী দেখায় নিজেকে বড় বড় নেতা জাহির করে বেড়ায় আমরা তাদেরকে যুবদলের স্থান দেব না। কারণ তাদের জন্য যুবদল না তাদের স্থান অন্য জায়গায়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মী সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমল, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার, যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান খলিল শ্যামল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন সেন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান মৃধা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, শহিদুল ইসলাম,ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, পারভেজ খান, মোঃ আরমান হোসেন, কামরুল ইসলাম রনি, মিনহাজ মিঠু, আশিকুর রহমান অনি, জুয়েল রানা, কামরুল হাসান মাসুদ, এরশাদ আলী, ফয়েজ উল্লাহ সজল,আলী ইমরান শামীম, তরিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম আপন, শাহীন শরীফ, মাগফুর ইসলাম পাপন, জুনায়েদ আলম ঝলক, ফয়সাল আহমেদ, সাইদুর হাসান রিপন, আরিফ খান, কায়সার আহমেদ, এড.
এছাড়াও মহানগর যুবদলের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর থানা ও উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র য বদল র য বদল র স ল ইসল ম র রহম ন ক জ কর কম ট ত আম দ র সরদ র
এছাড়াও পড়ুন:
লাশ পুতে রেখে জায়গাটি ঘুরে ঘুরে পাহারা দেয় ইয়াসিন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার মিজমিজিতে স্ত্রী-সন্তানসহ তিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার ইয়াছিন। বুধবার পুলিশ চার দিনের রিমান্ডের পর তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মাদ শামসুর রহমানের আদালতে হাজির করে। এ সময় ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ইয়াছিন জবানবন্দী দিয়েছেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানিয়েছেন।
স্ত্রী লামিয়া আক্তার, চার বছরের সন্তান আব্দুল্লাহ লাবীব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে ইয়াছিন একাই হত্যা করেছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন তিনি।
ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের পর আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলেও চার দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার তাকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠায় পুলিশ। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার বাড়ির কাছের একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা বটি উদ্ধার করে পুলিশ। একই পুকুর থেকে রক্তমাখা জামা-কাপড় ভরা একটি ব্যাগও উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মাদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া, তাদের সন্তান আব্দুল্লাহ ও স্বপ্নার লাশ গত ১১ এপ্রিল উদ্ধার করা হয়। একই দিন গ্রেপ্তার করা হয় ইয়াছিনকে। তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি একাই স্ত্রী সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছেন। মাদকের টাকার জন্য উচ্ছৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে সৎ মায়ের মামলায় ইয়াছিনকে গত ২৭ রমজানের দিন গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঈদুল ফিতরের দুদিন আগে ইয়াছিন জামিনে ছাড়া পান। পুলিশ জানিয়েছে, তার স্ত্রী লামিয়া, সন্তান আব্দুল্লাহ এবং স্বপ্না মিজমিজি পুকুরপাড় এলাকার আক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ইয়াছিন জামিনে আসার পর গত ৮ এপ্রিল বাসায় যান। এ সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় লামিয়ার বোন মানসিক রোগী স্বপ্না বটি নিয়ে তেড়ে আসেন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, স্বপ্নার কাছ থেকে ইয়াছিন বটিটি কেড়ে নিয়ে স্ত্রী লামিয়ার গলায় কোপ দিলে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় স্বপ্না চিৎকার দিলে তাকেও কুপিয়ে গলা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করেন। শিশু আব্দুল্লাহর গলায় থাকা তাবিজের সুতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাকে। এরপর লামিয়া ও স্বপ্নার মাথা ও হাত-পা একটি বস্তায় এবং দেহ দুটি আরেকটি বস্তায় ভরে কাথা কম্বলে পেঁচিয়ে নেয়। পরে আব্দুল্লাহরসহ তিন লাশ রাস্তার পাশে ইট-সুরকির নিচে চাপা দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, লামিয়া ও স্বপ্নার রক্তমাখা জামা-কাপড় একটি ব্যাগে ভরে সেটিসহ বটি বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। এরপর অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় লামিয়ার বাসায় ছিলেন। ঘুরে ঘুরে লাশ চাপা দেওয়া স্থান পর্যবেক্ষণে রাখেন। গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, আদালত ইয়াছিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড দিলেও হত্যার দায় স্বীকার করায় চতুর্থ দিনেই তাকে আদালতে জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়েছে। তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লামিয়া ও স্বপ্নার বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে গত ১১ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা মামলায় লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে প্রধান আসামি করা হয়। তার বাবা মো. দুলাল ও বোন শিমুকেও আসামি করা হয়েছে।