ভাড়াটিয়ার ঘরের ট্রাঙ্কে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ
Published: 24th, February 2025 GMT
বাড়ির পাশের দোকানে জুস কিনতে গিয়েছিল আবু তালহা মুহিন মোল্লা। পঞ্চম শ্রেণির এ ছাত্র আর ফেরেনি। এ ঘটনার দু’দিন পর সোমবার ভোরে নিজ বাড়ির ভাড়াটিয়ার কক্ষে পাওয়া গেছে মুহিনের (১১) লাশ। ট্রাঙ্কের ভেতর বস্তাবন্দি অবস্থায় ছিল শিশুটির মরদেহ। ঘটনাটি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রদিঘলিয়া উত্তর চরপাড়ার।
নিহত মুহিন একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাঞ্জারুল ইসলাম মঞ্জু মোল্লার ছেলে। সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত রাবেয়া-আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধে হত্যার পর মুহিনের মরদেহ বস্তায় বেঁধে গুমের উদ্দেশ্যে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কেন হত্যা করা হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে জানাতে পারেনি তারা।
স্বজনের ভাষ্য, বাবার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে অন্য কোথাও তাকে সরাতে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় মুহিনকে।
মুহিনের চাচা ওলিয়ার রহমান মোল্লার ভাষ্য, তাঁর ভাই মঞ্জু মোল্লা ইউপি সদস্য। ইটভাটার ব্যবসাও রয়েছে তাঁর। এ কারণে তাঁর অনেক টাকা আছে– এমন ধারণা থেকে ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে মুহিনকে অপহরণ করা হয় বলে তারা সন্দেহ করছেন। ভাড়াটিয়া আমিনের ঘরে রাখার পর মুহিনকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে অপহরণকারীরা ব্যর্থ হয়। তারপর তারা শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ বস্তাবন্দি করে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, শনিবার সকালে বাড়ির পাশের দোকানে জুস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মুহিন। পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধান না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার মুহিনদের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমিন, একই গ্রামের শাওন, ইসান ও সিহাবকে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ভোররাতে আমিনের ঘরে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সেখানে বস্তায় বেঁধে ট্রাঙ্কে রাখা মুহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় আমিনের মা শাহানারা বেগমকে আটক করা হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে মুহিনের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
জোহরের নামাজের পর মুহিনের মরদেহের জানাজা হয় রাবেয়া-আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চন্দ্রদিঘলিয়ায় দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। এতে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে মাহিন হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ আটক র মরদ হ র পর ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কলাগাছিয়া ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে ওসমান পরিবারের দোসররা মরিয়া
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে বেশ মরিয়া হয়ে উঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওসমান পরিবারের দোসর জামান মেম্বার ও কচি মেম্বােরের বিরুদ্ধে।
গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারী) উল্লেখিত পরিষদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করার পর সরকারি বিধি মোতাবেক চেয়ারম্যান পদটি শূন্য ঘোষনা করেন বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান গ্রেপ্তারের পর থেকে উল্লেখিত পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে ওসমান পরিবারের দোসর উক্ত পরিষদের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার জামান প্রধান ও বহু অপকর্মের হোতা ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মোমেন কচি বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে।
কলাগাছিয়া ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মামুন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ফ্যাসিবাদ সরকারের শাঁসন আমলে সদ্য গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ার প্রধানের নির্দেশে ওসমান পরিবারের দোসর জামান মেম্বার ও কচি মেম্বার রাতের আধারে কলাগাছিয়া ইউনিয়নে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা।
এলাকাবাসী জানান, ফ্যাসিস্টের দোসর সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধানের ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন জামান মেম্বার ও কচি মেম্বার । জামান ও কচি মেম্বার দীর্ঘ দিন ধরে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ ,সত্যায়ন পত্র প্রদানসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের নামে অবৈধভাবে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।
এছাড়া সাবেক এমপি সেলিম ওসমান ও চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধানের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে নানা ফয়দা লুটেছেন।
কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে জানান, গত ২/৩ বছর পূর্বে কচি মেম্বার বন্দরে বালিয়াগাও এলাকায় ধর্ষনের বিচার করতে গিয়ে দোষি সাব্যস্ত হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন।
এ ছাড়াও তিনি বালিয়াগাও এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে।
এ ব্যাপারে জামান মেম্বার ও কচি মেম্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জামান প্রধান ও কচি মেম্বারের অনৈতিক কর্মকান্ডের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন মহল।