হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণে যুক্ত হচ্ছে ভুয়া ছবি শনাক্তের সুবিধা
Published: 24th, February 2025 GMT
ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক কাজের প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপে নিয়মিত ছবি আদান-প্রদান করেন অনেকেই। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অনলাইনে থাকা বিভিন্ন ছবি সম্পাদনা বা পরিবর্তন করে অন্যদের পাঠান কেউ কেউ। এর ফলে সঠিক তথ্যের বদলে বিভিন্ন বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার হওয়ার পাশাপাশি বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এ সমস্যা সমাধানে অ্যান্ড্রয়েডের পাশাপাশি ওয়েব সংস্করণেও ‘রিভার্স ইমেজ সার্চ’ সুবিধা যুক্ত করতে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ।
ডাব্লিউএবেটাইনফোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিভার্স ইমেজ সার্চ সুবিধার মাধ্যমে কম্পিউটারে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা গুগলের সাহায্যে তাদের কাছে আসা ছবিটি সম্পাদিত, বিকৃত বা প্রাসঙ্গিক কিনা, তা দ্রুত শনাক্ত করতে পারবেন। ফলে ছবির সত্যতা সহজেই যাচাই করা যাবে। ছবি যাচাইয়ের জন্য বাড়তি কোনো অ্যাপ বা টুল ডাউনলোড করতে হবে না, রিভার্স ইমেজ সার্চের শর্টকাটে ক্লিক করলেই নির্দিষ্ট ছবি গুগলে আপলোড হয়ে যাবে এবং ডিফল্ট ব্রাউজারে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফলাফল জানা যাবে।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে যে ৮ কাজ কখনো করবেন না ১০ জুন ২০২৪হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, মিথ্যা তথ্য ও বিকৃত ছবি শনাক্ত করতে ব্যবহারকারীদের সাহায্য করা হোয়াটসঅ্যাপের অন্যতম লক্ষ্য। রিভার্স ইমেজ সার্চ সুবিধা ব্যবহারকারীদের ছবির উৎস চিহ্নিত করতে এবং তার বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করতে সহায়তা করবে। ফলে বিভ্রান্তিমূলক কনটেন্ট বা আধেয় দ্রুত শনাক্ত করা যাবে।
রিভার্স ইমেজ সার্চ সুবিধাটি বর্তমানে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে নির্দিষ্টসংখ্যক ওয়েব সংস্করণ ব্যবহারকারী সুবিধাটি পরখ করতে পারছেন। শিগগিরই এ সুবিধা হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণ ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: লাইভমিন্ট
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প ক ত কর ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
হাত জোড় করছি, ফিরিয়ে দিন সন্তানদের
‘কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। দোষ থাকলে, অন্যায় করলে উপযুক্ত শাস্তি দিন। তবু সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারও বুকে না লাগে। আমি হাত জোড় করছি, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে এমন আকুতিই জানান অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান। বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ির কুকিছড়া থেকে ফেরার পথে গত বুধবার ভোর ৬টার দিকে পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী অপহৃত হন। এ অপহরণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট- ইউপিডিএফকে (প্রসীত) দায়ী করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপহৃতদের উদ্ধরে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।
পিসিপির কেন্দ্রীয় শাখার সভাপতি নিপন ত্রিপুরা বৃহস্পতিবার সমকালকে বলেন, ‘আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি, ইউপিডিএফ অপহৃতদের অভিভাবকদের একটি স্থানে ডেকেছে। বিকেলে অভিভাবকরা সেখানকার উদ্দেশে রওনা হন। পরে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।’ তিনি অবিলম্বে অপহৃতদের সুস্থ শরীরে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অন্বেষ চাকমা বলেন, অপহরণকারীরা সকালে একটি স্থানের নাম বলেছিল অভিভাবকদের। পরে পরিবর্তন করে আরেকটি স্থানে ডাকে। বিকেল থেকে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
অপহৃতরা হলেন– চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তাদের মধ্যে রিশন চাকমার বাড়ি রাঙামাটির জুরাছড়ির মৈদং ইউনিয়নের জামেরছড়িতে। লংঙি ম্রোর বাড়ি বান্দরবানের আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নে; একই জেলায় বাড় অলড্রিন ত্রিপুরার; রাঙামাটির বরকল সদরের চাইল্যাতুলিতে দিব্যি চাকমা ও একই জেলার বাঘাইছড়ির বটতলায় মৈত্রীময় চাকমার।
এর আগে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব উপলক্ষে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যান। উৎসব শেষে গত মঙ্গলবার তারা চট্টগ্রামে ফেরার উদ্দেশ্যে বাঘাইছড়ি থেকে দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে আসেন। সেখানে বাসের টিকিট না পাওয়ায় খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছুদূরে পানছড়ি সড়কের কুকিছড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাতযাপন করেন। গত বুধবার ভোরে কুকিছড়া থেকে অটোরিকশায় খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল নামক জায়গায় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত ১৮৩ আদিবাসী শিক্ষার্থী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথী ভুবন চাকমার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হলেও তাদের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন অপহরণের ঘটনা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে মানবাধিকারবিরোধী ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ রক্ষার পরিপন্থি। অপহৃতদের উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
ইতোমধ্যে অপহৃতদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে আসলে ঘটনাটি কী, কাদের হেফাজতে তারা রয়েছে। যৌথ অভিযানে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।