স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে রাবিতে গায়েবানা জানাযা
Published: 24th, February 2025 GMT
দেশব্যাপী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসী ও ধর্ষকদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তার গায়েবানা জানাযা আদায় করেন তারা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনের জোহা চত্বরে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন তারা।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীদের ‘ধর্ষকদের আস্তানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আমার মাটি আমার মা, ধর্ষকদের দিবো না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’, ‘আমরা আছি থাকব, যুগে যুগে লড়ব’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদি মারুফ বলেন, “আপনারা যদি কাজ করতে না পারেন, তাহলে আমরা এ ধরনের এনজিও মার্কা সরকার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সরকার চাই না। দেশের জন্য একটা ইনক্লিউসিভ সরকার গঠন করুন। যদি আপনারা তা করতে ব্যর্থ হন, তবে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। প্রয়োজনে ছাত্র সমাজ দায়িত্ব গ্রহণ করবে। আমরা যেমন ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে তাড়াতে পেরেছি, আপনাদের সরাতেও বেশি সময় লাগবে না।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী প্রসনজিৎ সরকার বলেন, “দেশে এক ধরনের অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কোন কাজই আমরা দেখতে পাচ্ছি না। তিনি কাঠের পুতুলের মতো গদিতে বসে আছেন। আমাদের সাধারণ মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। কিন্তু তিনি গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে এসে শিশুসুলভ কথাবার্তা বলেছেন। আমরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ চাই।”
ফার্সি ভাষা বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াজেদ শিশির বলেন, “ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। অন্তর্বতী সরকার গঠিত হয়েছিল দেশের আইনশৃঙ্খলাসহ সব মন্ত্রণালয়ের সংস্কার করার জন্য। কিন্তু আমরা তার বিপরীত দিকটা দেখতে পাচ্ছি। ছিনতাই, ধর্ষণ এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কোন পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলে দিতে চাই, এ গদি তার বাবার না। তিনি যদি তার দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে ছাত্র-জনতার উপর ছেড়ে দেন।”
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, “যেই নারীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছাত্রদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই নারীদের ধর্ষকরা ধর্ষণ করে পালিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা চোখ বুজে বসে আছি। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলী চেয়ারে বসে আমাদের সুশীলগিরী দেখায়। সুশীলগিরীর দিন শেষ, বিচার চায় বাংলাদেশ।”
পরে শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার গায়েবানা জানাযা আদায় করে প্রতিবাদী কর্মসূচি শেষ করেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জেল থেকে পালিয়েছে আবরার হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি জেলখানা থেকে পালিয়েছে। গত ৫ আগস্টের পরে এ ঘটনা ঘটলেও ৬ মাস পর সোমবার বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ও বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফেসবুক পোস্টে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি লেখেন, ‘‘আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে গেছে ৫ আগস্টের পরে। অথচ আমাদের জানানো হচ্ছে আজকে, যখন ওর আইনজীবী কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আসেনি তখন। ফাঁসির আসামির তো কনডেম সেলে থাকার কথা ছিল, সে পালায় কীভাবে! পালানোর পরেও এ তথ্য বাইরে না আসা তো এটাই প্রমাণ করে যে, তাকে ধরতেও কোনো চেষ্টা করা হয়নি। পূর্বে থেকেই আরো ৩ জন পলাতক আছে।’’
পোস্টে ওই আসামির নাম-ঠিকানাও দিয়েছেন তিনি।
এর আগে, এদিন বিকেলে আরেকটি পোস্টে ফাইয়াজ জানান, আজ আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিপক্ষের আপিলের শুনানি হাইকোর্টে শেষ হয়েছে। যে কোনো দিন রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ আছে বর্তমানে। আশা করছি, খুবই দ্রুত হাইকোর্ট থেকে রায় আসবে। যদিও এর পরে সুপ্রিমকোর্টে আপিল, রিভিউ এবং সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার ধাপসমূহ বাকি থাকবে। তারপরে রায় কার্যকর হবে।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আবরার হত্যা মামলায় মুনতাসির আল জেমিসহ ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার তৎকালীন এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ