চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোগো থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে নৌকার ছবি। নৌকার পরিবর্তে জাতীয় ফুল শাপলা রেখে নতুন করে লোগো তৈরি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার নতুন লোগো সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন লোগো পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, লোগোর মধ্যে নৌকা ছিল, যা একটি দলের দলীয় প্রতীক। তাই তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর নৌকা বাদ দিয়ে জাতীয় ফুল শাপলা রেখে লোগো করার উদ্যোগ নেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পতন হওয়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, সিটি করপোরেশনের মেয়র লোগো থেকে নৌকা বাদ দিয়ে নতুন করে লোগো করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ অনুযায়ী জাতীয় ফুল শাপলা রেখে নতুন করে লোগো তৈরি করা হয়েছে। মেয়র তা অনুমোদন দিয়েছেন।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের পুরোনো লোগোতে নৌকার পাশাপাশি নদী, পাহাড় ও সড়কবাতি ছিল। নৌকাটি ছিল মূলত সাম্পান। এসব প্রতীকের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও সিটি করপোরেশনের কাজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল।

গত বছরের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন আদালত। এরপর গত বছরের ৩ নভেম্বর মেয়র হিসেবে শপথ নেন শাহাদাত হোসেন।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো.

রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নয়জনকে বিবাদী করে মামলাটি করেছিলেন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট

বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।

বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।

রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট