কক্সবাজার বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানিয়েছে আইএসপিআর।

সোমবার বিকেলে দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'কক্সবাজারে অবস্থিত বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার সংলগ্ন সমিতিপাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার (২৪-২-২০২৫) তারিখে বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য যে, বিয়াম স্কুলের পাশে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট হতে একজন স্থানীয় লোকের মটর সাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমান বাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় সমিতি পাড়ার আনুমানিক দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন বিমান বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমান বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে বাঁধা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমান বাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমান বাহিনীর সদস্য ও সমিতি পাড়ার কতিপয় দুষ্কৃতকারী লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলে কতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমান বাহিনীর সদস্যদের উপর ইট পাটকেল ছুড়ে। এসময় দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হন যার মধ্যে বিমান বাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমান বাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন।'

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমান বাহিনীর সদস্যগণ কর্তৃক বিমান বাহিনীর Rules of Engagement অনুযায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়, তবে স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনোপ্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি। বিমান বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় জনগণের ইটপাটকেলের আঘাতে বিমান বাহিনীর গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ঝোপঝাড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল যা পরে বেশি সম্প্রসারিত হয়নি। এমতাবস্থায়, একটি কুচক্রী মহল বিমান বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিমান বাহিনীর গুলিতে উক্ত যুবক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা সত্যি নয়। এক্ষেত্রে প্রচারিত গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, উক্ত খোসাটি ফাঁকা গুলির (Blank Cartridge) যা প্রাণঘাতি নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে। যুবক নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।'

বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, 'উক্ত ঘটনা প্রকাশে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার এর নাম বিমান বাহিনী ঘাঁটি শেখ হাসিনা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে- যা সত্য নয়। উক্ত ঘাঁটির নাম ২ ডিসেম্বর ২০২১  সালে সরকারি প্রজ্ঞাপনে পরিবর্তন করে বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার রাখা হয় যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে।' 

আইএসপিআর আরও জানায়, 'বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের আপামর জনসাধারণের সাথে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশের মানুষের কল্যাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। দেশের জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ম ন ব হ ন র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল। তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে নজরুল ইসলাম খান এ কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’

সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।

গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি এই সরকারকে সহযোগিতা করছি সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’

যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ নাও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলেন নজরুল ইসলাম খান। সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয় বলেন তিনি। আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায় আমরা জানি।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।

আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনার শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।

আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’

আরও পড়ুনসরকার বলছে ডিসেম্বর–জুনের মধ্যে নির্বাচন, ‘অসন্তুষ্ট’ বিএনপি১০ ঘণ্টা আগে

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চায় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে মতামত দিতে বলা হয়েছিল। মতামতের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করবে ঐকমত্য কমিশন এর ভিত্তিতেই হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদ্যমান সংবিধানের অধীনের সরকারকে বৈধ মনে করি না: ফরহাদ মজহার
  • ১৭ মে আইএসপিএবি নির্বাচন, ১৩ পদে লড়ছেন ২৪ প্রার্থী
  • সয়াবিন তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি গণসংহতি আন্দোলনের
  • টেলিযোগাযোগ খাত সংস্কারে গ্রাহকের স্বার্থ প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, বিটিআরসি চেয়ারম্যান
  • তারা যখন সংস্কারের ‘স’ উচ্চারণ করেনি, তখন খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০
  • তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
  • প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি বিএনপির, কী আছে বর্ণনায়
  • স্টারলিংক আসছে, দেশি ইন্টারনেট ব্যবসার কী হবে
  • প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠিতে যা বলল বিএনপি
  • বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে দেশটির জনগণ: যুক্তরাষ্ট্র