৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা দামের দুর্লভ ঘড়ি হাতেই খেলেছেন পান্ডিয়া
Published: 24th, February 2025 GMT
বাংলাদেশের পর পাকিস্তান—দুই দলকেই অনায়াসে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে ভারত। দুবাইয়ে কাল অপরাজিত সেঞ্চুরিতে বিরাট কোহলি দলকে জেতালেও বল হাতে বড় অবদান রেখেছেন হার্দিক পান্ডিয়া
প্রথমে বাবর আজমকে ফিরিয়ে ভেঙেছেন পাকিস্তানের উদ্বোধনী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা নিয়েছেন এরপর। শিকার করেছেন সর্বোচ্চ ৬২ রান করা সৌদ শাকিলকে, যা পাকিস্তানকে অল্পতে বেঁধে ফেলতে সাহায্য করেছে।
তবে পান্ডিয়া কাল থেকে আলোচনায় অন্য কারণে। বোলিং করার সময়, বিশেষ উইকেট উদ্যাপনের সময় তাঁর হাতে একটি ঘড়ি দেখা যায়, যা অনেকের নজরে এসেছে। নেট দুনিয়ার এ নিয়ে শোরগোলও চলছে। কারণ, ঘড়িটি খুবই দামি এবং দুর্লভ।
ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পান্ডিয়া কাল যে ঘড়ি পরে বল করেছেন, সেটি সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত ব্র্যান্ড রিচার মিলের। আরএম ২৭-০২ মডেলের এই ঘড়ির দাম ৮ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের মুদ্রায় যা ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। বিশ্বে এমন ঘড়ি মাত্র ৫০টি আছে।
সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির এই ঘড়ি মূলত টেনিস কিংবদন্তি রাফায়েল নাদালের জন্য নকশা করা হয়েছিল। এটি বানানো হয়েছে গাড়ির চেসিস দিয়ে। গত বছরের নভেম্বরে খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় বলে দিয়েছেন নাদাল। ক্লে কোর্টের রাজা হওয়ায় তাঁর ঘড়ির ফিতায় শোভা পেয়েছে ‘ক্লে কালার’।
ঘড়িতে কেসব্যান্ড এবং বেসপ্লেট একসঙ্গে জুড়ে তৈরি হয়েছে। এর ফলে দুটি উপাদান আলাদা করে রাখার দরকার হয়নি। বেসপ্লেট তৈরি করা হয়েছে গ্রেড-৫ টাইটেনিয়াম দিয়ে। ঘড়িতে নীলকান্তমণি স্ফটিকের সঙ্গে কার্বন ফাইবারের সংমিশ্রণও আছে।
কালকের ভিআইপি গ্যালারিতে বসে ম্যাচটি উপভোগ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ গায়িকা ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব জেসমিন ওয়ালিয়া। উইকেট পাওয়ার পর পান্ডিয়াকে উদ্দেশ্য করে জেসমিনকে উড়ন্ত চুম্বন দিতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সার্বিয়ান মডেল ও নৃত্যশিল্পী নাতাশা স্তানকোভিচের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর এই জেসমিনের সঙ্গে প্রেম করছেন পান্ডিয়া।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের ‘স্বাধীনতা দিবস’ বুধবার, অধিকাংশ পণ্যে ২০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে আসছেন। চীন থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্র কানাডা এবং যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের ঐতিহাসিক মিত্র দেশগুলোকেও ছাড়েননি। এ জন্য পাল্টাও খেয়ে চলেছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে তিনি আবার নতুন একগুচ্ছ শুল্ক প্রস্তাবের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন। আগামীকাল বুধবার এই ঘোষণা দেবেন, যা আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন।
কিন্তু বুধবার ট্রাম্প কি ঘোষণা করতে পারেন তা নিয়ে যেন জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। কারণ, তিনি এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন যে ছোট–বড় নির্বিশেষ কোনো দেশকেই ছাড়বেন না। সেটি বুঝা যায়, ট্রাম্পের বক্তব্যে। তিনি এই বুধবারকে ‘লিবারেশন ডে’ বা ‘স্বাধীনতা দিবস’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যালয় হোয়াইট হাউসের কর্মীরা নতুন করে শুল্ক আরোপের একটি প্রস্তাব তৈরি করেছেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হয়, এ রকম পণ্যের বেশির ভাগের ওপরই প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হবে।
নতুন শুল্ক আরোপের প্রস্তাব তৈরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন তিনজন ব্যক্তিকে উদ্ধৃত ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে শুল্ক আরোপের বিষয়ে বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে; যার অর্থ ২০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর না–ও হতে পারে। সংবাদ মাধ্যমটির মতে, এমন একটি বিকল্প পরিকল্পনার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হতে পারে।
আগামীকাল ২ এপ্রিল বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বৃহত্তর পরিকল্পনা ঘোষণা করতে চলেছেন। এই ঘোষণা অবশ্য আগেই দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে ওয়াল স্ট্রিট তথা যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ, শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবে বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিক্রি ও মুনাফায় সরাসরি প্রভাব পড়বে, এমন আশঙ্কায় তাদের শেয়ারের দর কমছে। বিনিয়োগকারীরা ভয় ও আতঙ্কে এসব কোম্পানির শেয়ার ছেড়ে দিয়ে সেফ হ্যাভেন বা বিনিয়োগের জন্য ‘নিরাপদ স্বর্গ’ খ্যাত সোনায় বিনিয়োগ করছেন। ফলে সোনার দাম বেড়ে ইতিমধ্যে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ১৪৮ মার্কিন ডলারে উঠেছে। এটি সোনার সর্বকালের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড। এই প্রবণতা বিশ্বে আবার মন্দার আশঙ্কা তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে শুল্ক আরোপ নিয়ে যেসব ঘোষণা দিয়েছেন, আগামীকাল সেগুলোকে নতুন পরিকল্পনায় আরও বিস্তৃত স্থায়ী করার কথা বলতে পারেন। তা অবশ্য নির্দিষ্ট কিছু দেশ বা শিল্পকে লক্ষ্য করে হবে না। ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টারা বলে আসছেন যে তাঁদের লক্ষ্য হলো, অন্যান্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে আরও ন্যায়সংগত তথা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলা; যাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ে।
কতিপয় অর্থনীতিবিদ সতর্ক করে দিয়েছেন, নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে যেতে পারে। মূল্যস্ফীতিও বাড়তে পারে। আবার বিভিন্ন দেশও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নিতে পারে।
ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যযুদ্ধ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিনিয়োগকারী, ভোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের আস্থাকে আঘাত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যেমন চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৪ দশমিক ৬ শতাংশ পড়ে গেছে। নাসড্যাক সমন্বিত সূচক তো রীতিমতো ১০ দশমকি ৪ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ভোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের ওপর পরিচালিত এক জরিপেও বলা হয়েছে, চলতি ২০২৫ সালের শুরু থেকে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা ক্রমে বাড়ছে।
হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে ওয়াশিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সূত্র: সিএনবিসি, ডয়চে ভেলে, এএফপি ও বিবিসি।