চার দফা দাবিতে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 24th, February 2025 GMT
ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক চার দফা দাবির বিরুদ্ধাচারণ ও ডিপ্লোমা মেডিকেল কোর্সকে ছয় মাসের কোর্স আখ্যা দিয়ে এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশন ও সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন সাধারণ ম্যাটস ঐক্য পরিষদ ও প্রাইভেট প্রাকটিশনার ফেনীর যৌথ আয়োজনে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিপ্লোমা মেডিকেল (ডিএমএফ) শিক্ষার্থীরা চার বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ৬ মাস সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সমাপ্ত করে দেশের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা রেখে আসছে। কতিপয় কিছু এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে তাদের চার দফা দাবির বিরুদ্ধাচারণ করছেন। তার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ডিএমএফ শিক্ষার্থীরা।
ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো: অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃজন। প্রতিষ্ঠানের নাম ও কোর্স কারিকুলামের সংশোধন। ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি। এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড বাতিল করে মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড গঠন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান বলেন, “চার বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ছয় মাস সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্নি শেষে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার কথা থাকলেও গত এক যুগের বেশি সময় এ পদে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাজার হাজার ডিএমএফ শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যতে নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। আমরা দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তারা এর সমাধানে কোন ভূমিকা নেননি। এর মাঝে নতুন করে কতিপয় চিকিৎসক ও এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা আমাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দিচ্ছে যা অত্যন্ত হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
ফারজানা আক্তার প্রমা নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড কার্যত ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছেলেখেলায় মত্ত হয়েছেন। অনতিবিলম্ব এ বোর্ড বাতিল করে মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে হবে।”
আহমেদ ইয়ামিন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “যদি পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনের সুযোগই না থাকে তাহলে ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হোক। আমাদের জীবন নিয়ে খেলার অধিকার কারো নেই। এক যুগ ধরে বন্ধ হয়ে থাকা শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃজন করতে হবে। ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে সৃষ্টি করতে হবে।”
মিমি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের অধিকার আদায়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের নেতারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরাও ঘরে ফিরবো না।”
ফেনী/সাহাব/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম য টস শ ক ষ র থ আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। এছাড়া তারা মৌখিকভাবে কুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ৩টায় তারা রাজধানীর ‘যমুনায়’ গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুটি বাসে করে তারা দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে যান। শিক্ষার্থীরা তার কাছে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে অপসারণ এবং নতুন নিয়োগ দেওয়াসহ ৬ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেন। এছাড়া মৌখিকভাবে কুয়েটের সংঘর্ষ পরবর্তী সার্বিক অবস্থা তাকে অবহিত করেন।
তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দেখবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। এখন শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করবেন। আপাতত তাদের আর কোনো কর্মসূচি নেই। তাদের বিশ্বাস, সরকার নিশ্চয়ই সংকটের সমাধান করবে।
এর আগে সকাল ৮টায় কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৮০ জন দুটি বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।
যাত্রা শুরুর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীন। এজন্য তাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাবেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ফিরবেন না তারা। অনলাইনে কার্যক্রম চলবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত, কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম, পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।