অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে টাস্কফোর্স যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা এখনো হাতে পাননি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। অথচ টাস্কফোর্সের সুপারিশ নিয়ে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

আজ সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘রিকমেন্ডেশনস বাই দ্য টাস্কফোর্স অন রিস্ট্র্যাটেজাইজিং দ্য ইকোনমি’ শীর্ষক শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি এই প্রতিবেদন হাতে পাননি এই কথা শুনে অনুষ্ঠানে টাস্কফোর্সের সভাপতি কে এ এস মুরশিদ বিস্ময় প্রকাশ করেন। বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

গত ৩০ জানুয়ারি অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ-সংক্রান্ত টাস্কফোর্স সদস্যরা তাঁদের সাড়ে পাঁচ শ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ওই সময় টাস্কফোর্সের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তার মানে, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ২৫ দিনেও বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে পৌঁছেনি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে টাস্কফোর্সের সুপারিশমালা থেকে অন্তত একটি করে সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুষ্ঠানে শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, গত সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্থনীতি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। ওই সময় বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, একসময় যেভাবে তৈরি পোশাকশিল্পের বিকাশ হয়েছিল, এখন সেভাবে তা হবে না। সে কারণে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য ও রপ্তানি সম্প্রসারণে জোর দেন।

অনুষ্ঠানে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির সমস্যা কী, সে বিষয়ে আমরা সবাই কমবেশি অবগত। অনেক দিন ধরেই এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তিনি নিজে অন্তত এক হাজার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন। কিন্তু কেন সমস্যার সমাধান হয় না বা কোথায় গিয়ে সব আটকে যায়, তার ব্যাখ্যা দরকার। টাস্কফোর্সের কাছে তাঁর প্রত্যাশা ছিল, সংস্কার কেন আটকে যায়, তার ব্যাখ্যা থাকবে।’

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা দেন টাস্কফোর্সের দুই সদস্য গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান ও র‍্যাপিডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। তাঁরা রপ্তানি খাতের সম্প্রসারণে যথাযথ নীতি প্রণয়নে জোর দেন। তাঁরা বলেন, দেশের তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি অন্য খাতের বিকাশের সুযোগ আছে।

সেলিম রায়হান বলেন, তৈরি পোশাক খাতেরও সম্প্রসারণের সুযোগ আছে। দেশে যে পোশাক তৈরি হয়, তা মূলত তুলাভত্তিকি; যদিও বিদেশে কৃত্রিম সুতাভিত্তিক পোশাকের বাজার আছে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক খাতকে যে ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, অন্য খাতেও সে ধরনের সুযোগ দেওয়া হোক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইউনিলিভারের চেয়ারম্যান ও এমডি জাভেদ আখতার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে আগুনে পুড়ল ১৫০ রিসোর্ট-দোকান

রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালিতে আগুনে কমপক্ষে ১৫০টি রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘর পুড়ে গেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌনে ১টায় ইকো ভ্যালি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে মুহূর্তে আগুন আশপাশের রিসোর্টে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিস, সেনা সদস্যদের চেষ্টায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুনে নিয়ন্ত্রণে আসে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে ১টায় একটি রিসোর্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সাজেকের অধিকাংশ রিসোর্ট কাঠ ও বাঁশের তৈরি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া সাজেক ভ্যালিতে ফায়ার সার্ভিসের কোনো স্টেশন না থাকায় এবং পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে নিকটবর্তী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন খাগড়াছড়ি দীঘিনালা উপজেলা ও বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে দুটি ইউনিট রওনা দেয়। পাহাড়ি পথে তাদের পৌঁছতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এরপর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলেও সাজেকে পানি না থাকায় দূর গ্রাম থেকে বার বার পানি এনে বেগ পেতে হচ্ছিল। এর মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর থেকে আরো দুটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। কিন্তু বাতাসের তীব্রতা, পর্যাপ্ত পানির অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। মোট চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত ছিল।

আারো পড়ুন: সাজেকে আগুনে পুড়ছে রিসোর্ট

আরো পড়ুন:

সাজেকে আগুনে পুড়ছে রিসোর্ট

সাভারে কারখানার গুদামে আগুন, এক ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, আগুনের তীব্রতা এবং পানি সঙ্কটের কারণে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিল না। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, সব মিলে ১৫০টি রিসোর্ট, দোকান ও বসতঘর পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পানি ছিটানোর আলোচনা হলেও সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সেটা করা হয়নি। 

ঢাকা/শংকর/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ