ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিকে ফ্যাসিবাদী আচরণ বলছে শিবির
Published: 24th, February 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও চলমান গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে মধুর ক্যান্টিনের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের দেওয়া বিবৃতিকে ফ্যাসিবাদী আচরণে বহিঃপ্রকাশ বলেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এ বিবৃতি দেওয়াকে রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংগঠনটি।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সৌন্দর্য। দীর্ঘ ১৬ বছর যা ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। নানা চেতনার বাটখারা দিয়ে বিরোধী দলকে খারিজ করে দেওয়ার যে সংস্কৃতি তা আজো শেষ হয়নি। কতিপয় সংগঠন সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করছে।
তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্র্যাকডাউন শুরু করে। এর নেপথ্যে ছিল জেনারেল টিক্কা খান এবং পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ইসলামবিদ্বেষী জুলফিকার আলী ভুট্টো। হাসিনার ট্রাইব্যুনাল যখন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করে তখন পাকিস্তানের আরেক রাজনীতিবিদ ইমরান খান পাকিস্তান পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করলে মূলধারার দলগুলির মধ্যে একমাত্র ভুট্টোর দল নিন্দা প্রস্তাবের বিরোধিতা করে।
তারা আরো বলেন, ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির জনসভায় বিএনপির মহাসচিব ফখরুল পাকিস্তান আর্মির অপকর্মের দায় দেশবাসীর ওপর চাপানোর তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ ছাড়াও হাসিনা আমলে একাধিকবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান টিক্কা-ভুট্টো চক্রের দায় এ দেশের মানুষের ওপর চাপানোর বিরোধিতা করে মজলুম বিএনপি-জামায়াতের রাজবন্দিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।
শিবিরের এ দুই নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজো বাংলাদেশের মাটিতে টিক্কা-ভুট্টোর দালালরা সক্রিয়। ইসলামবিদ্বেষী টিক্কা-ভুট্টো চক্র তাদের পাপের বোঝা এ দেশের গণমানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়ে টিক্কা-ভুট্টো চক্রের দায়মুক্তি নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। ১৯৭৭ সালে জন্ম নেওয়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকে ধারণ করেই তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের এ বিবৃতি তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এখানে ডাকসু নির্বাচন ও গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবনা শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন করে। সে সময় ছাত্র সংগঠনগুলো থেকে কোনো ধরনের বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি।
আজ তাদের বিবৃতি প্রমাণ করে যে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), সিলেটের এমসি কলেজ, টঙ্গির তামিরুল মিল্লাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অপকর্মের দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপাতে ব্যর্থ হয়ে তারা নতুন ইস্যু তৈরি করে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করছে। সুতরাং ছাত্রশিবির সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বিবৃতি প্রদান করা সংগঠনগুলো তাদের নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও ফ্যাসিবাদী আচরণের পরিচয় দিয়েছে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ওপর চ প ছ ত রদল র জন ত ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধু কি আপনাকে ঈর্ষা করেন? যেভাবে বুঝবেন
বন্ধুর জন্য নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের বহু উদাহরণ আছে। তবে সব বন্ধুত্ব একই রকম নয়। বন্ধু নামের আড়ালে অনেক রকম মানুষই থাকেন। বন্ধুদের মধ্যে কেউ কেউ আপনাকে ঈর্ষাও করতে পারেন। তবে বন্ধুত্বে ঈর্ষা থাকলে সেটি সব সময় একইভাবে প্রকাশিত না-ও হতে পারে।
মনে রাখতে হবে, ঈর্ষা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ঈর্ষার ব্যাপারটি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে ‘বন্ধু’ আপনার ক্ষতি পর্যন্ত করতে পারেন। বন্ধু হিসেবে কারও ক্ষতি করা বেশ সহজ। কারণ, বন্ধুত্বে থাকে দৃঢ়বিশ্বাস। তাই বন্ধুত্বে ঈর্ষা থাকলে আগেভাগে সাবধান হওয়া ভালো। কিছু ক্ষেত্রে এর সমাধানও করা যেতে পারে। সাধারণ কিছু বিষয় লক্ষ করলে আপনি অনুভব করতে পারবেন, আপনার প্রিয় বন্ধু হয়তো আপনাকে ঈর্ষা করছেন। যদিও বন্ধুত্বের মায়ায় আমরা অনেক সময় বন্ধুর ঈর্ষাকে ঠিক ঈর্ষা বলে মানতে চাই না। এমনটাই বলছিলেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক।
আরও পড়ুনছদ্মবেশী বন্ধু চিনবেন কীভাবে২২ মে ২০২৪আচরণে ঈর্ষার ছাপঈর্ষার প্রশ্ন তখনই আসে, যখন আপনি সফলতা পান কিংবা সুখে থাকেন। আপনার ক্যারিয়ার বা ব্যক্তিগত জীবনের নানান দিক নিয়েই কারও ঈর্ষা হতে পারে। যে বিষয়টি নিয়ে আপনি ভালো আছেন, আপনার বন্ধু যদি সেই বিষয়টিকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন তিনি হয়তো আপনাকে ঈর্ষা করছেন। তাঁর কথার ধরন এবং আচরণ থেকেই আপনি বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবেন। আপনি যখন পরিশ্রমের ফল হিসেবে পদোন্নতি পান, আপনার বন্ধু তখন এই সফলতাকে ‘ভাগ্য’ বলে আখ্যা দিতে পারেন কিংবা ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার সুফল হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। আবার সাফল্যের উদ্যাপনে আপনি একজন ঈর্ষান্বিত বন্ধুকে না-ও পেতে পারেন। কিংবা আপনি যখন ব্যক্তিগত সম্পর্কে সুখী, তখন হয়তো অতীতের কোনো তিক্ততার কথা তিনি মনে করিয়ে দিলেন। আবার আপনি যখন ভালো আছেন, তখন তিনি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়েও দিতে পারেন। বুঝতেই পারছেন, নির্দিষ্ট একধরনের আচরণেই ঈর্ষা প্রকাশিত হয় না। বরং তাঁর আচরণ, কথা, কণ্ঠস্বর—সব মিলিয়েই আপনি পাবেন ঈর্ষার ছাপ।
আরও পড়ুনআপনার বন্ধু মোটে এক বা দুজন? জেনে নিন আপনি মানুষ হিসেবে কেমন২১ নভেম্বর ২০২৪সমাধান যেভাবেবন্ধু আপনাকে ঈর্ষা করছেন বলে মনে হলেই যে আপনি বন্ধুত্বের ইতি টানবেন, তা কিন্তু নয়। খোলামেলাভাবে তাঁর সঙ্গে আলাপ করুন। তবে সরাসরি ঈর্ষার প্রসঙ্গ তুলবেন না। ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণেও তিনি নেতিবাচক আচরণ করে থাকতে পারেন, যেটিকে হয়তো আপনি ঈর্ষা ভেবে ভুল করছেন। তাই তাঁর আচরণের অসংগতিগুলো নিয়ে কথা বলুন। এর কারণ জানতে চান। আপনার সাফল্যের যে তিনিও একজন অংশীদার, সেটি তাঁকে বুঝিয়ে দিন। তিনি কোনো ব্যক্তিগত সমস্যায় থাকলে তা সমাধানে সাহায্য করুন অবশ্যই।
সাবধানের মার নেইসব চেষ্টার পরও যদি বন্ধুর আচরণের সেই খারাপ দিকগুলোর কিছুটা রয়েই যায়, তাহলে একটি সীমারেখার ভেতর নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া ভালো। এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আর এই বন্ধুটির সঙ্গে ভাগ করে নেবেন না, যেটির কারণে আপনার কিংবা আপনার পরিবারের ক্ষতি হতে পারে। এটা ঠিক যে বন্ধুত্ব নষ্ট হলে আপনার কষ্ট হবে। তবে জীবনে নিরাপদ থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভালো থাকার জন্য তাই নিজের পরিবার এবং ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিন। নতুন বন্ধুত্বও গড়ে তুলতে পারেন, তবে অবশ্যই বুঝেশুনে।
আরও পড়ুনআপনার জীবনে কি এই সাত ধরনের বন্ধু আছে?১৪ ডিসেম্বর ২০২৪