সারা দেশের সব অবৈধ ইটভাটা চার সপ্তাহের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সব বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১৭ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিদ মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক, ডেপুটি অ্যাটনি জেনারেল তানিম খান এবং আসাদ উদ্দিন।

এর আগে অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এর ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার; নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ডিসি এবং সাভার ও ধামরাই উপজেলার ইউএনও আদালতে হাজির হন।

গত ২৯ জানুয়ারি অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তার ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে তলব করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ডিসি এবং সাভার ও ধামরাই উপজেলার ইউএনওকে তলব করা হয়।

সমগ্র বাংলাদেশে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে ২০২২ সালে জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন দাখিল করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। রিট পিটিশনের ওপর শুনানি শেষে আদালত ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনাররা এখন পর্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৮ নভেম্বর প্রতিটি বিভাগের কমিশনারকে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই আদেশ পাওয়ার পর বিভাগীয় কমিশনার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগে বন্ধ করা ইটভাটাগুলোর নাম পুনরায় বন্ধ করা ইটভাটার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে এবং সব অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে না পারায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার; নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং সাভার ও ধামরাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য এইচআরপিবির পক্ষে আদালতে একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক ষ প ইটভ ট র ক র যকর

এছাড়াও পড়ুন:

ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এখন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার শুনানি গ্রহণ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

ওই মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা। আসামিদের এই ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হয়।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। আজ শুনানি গ্রহণ শেষ হলো।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, খন্দকার বাহার রুমি, নূর মুহাম্মদ আজমী ও রাসেল আহম্মেদ এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার জুয়েল, লাবনী আক্তার, তানভীর প্রধান ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, মাসুদ হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ শিশির মনির প্রমুখ শুনানিতে অংশ নেন।

শুনানি শেষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে শুনানি গ্রহণ করেন আদালত। মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য কার্যতালিকায় আসবে। যেদিন কার্যতালিকায় আসবে, সেদিন রায় ঘোষণা করা হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন
  • ৪ সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ
  • ‘পরীর বাচ্চাদের তথাকথিত বাপের দরকার নাই’