ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করায় ৪ জন গ্রেপ্তার
Published: 24th, February 2025 GMT
ঈশ্বরদীতে এক মৎস্য খামারিকে আটকে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের পর তাকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করা চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার ওসি।
গ্রেপ্তাররা হলো- পৌর শহরের মধ্য অরনকোলা এলাকার বাসিন্দা মৃত শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মোছা.
পুলিশ জানায়, উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের মৎস্য খামার ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে এক নারীর মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয়। ওই নারী অপহরণ চক্রের সদস্য। মুঠোফোনে ওই নারীর ডাকে রুহুল শহরের আলহাজ মোড় এলাকায় স্থানীয় মো. আতিকের বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. মিজানুর রহমানের বাড়িতে যায়। পরে তাদের দুজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রুহুল আমিনের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি। এসময় তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়।
পরে রুহুল আমিন তার মুঠোফোনের মাধ্যমে ঘটনাটি তার বড় ভাই মকছেদ আলীকে জানালে পুলিশি সহায়তায় তাকে উদ্ধার ও চক্রটির চার সদস্যকে শনিবার রাতে আলহাজ মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রুহুল আমিন উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
রুহুলের বড় ভাই মকছেদ আলী বলেন, আমার ছোট ভাই সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতে বাসায় ফিরে না আসায় উদ্বিগ্ন ছিলেন পরিবারের সবাই। এরই মধ্যে রাতে মুঠোফোনে ছোট ভাই জানায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে, তিন লাখ টাকা না দিলে তাকে হত্যা করা হবে। সঙ্গে সঙ্গে বিকাশে এক লাখ টাকা দিয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করি। পরে পুলিশি সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, একটি চক্র এই অপহরণ কার্যক্রমে জড়িত থেকে এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। উল্লিখিত রুহুল আমিনকেও কৌশলে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে মারধর ও জোরপূর্বক অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে মুক্তিপণ দাবি করে এই চক্র। ওই এলাকায় গোপনে অসামাজিক কার্যকলাপও চলে আসছিল। এসব ঘটনার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। ঘটনাটি শোনামাত্রই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রটির অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার ও চক্রটির ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার রাতে তাদের পাবনা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র হ ল আম ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানের লামার অপহরণ চক্রের চারজন গ্রেপ্তার, আদালতে স্বীকারোক্তি দিলেন একজন
বান্দরবানের লামায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। রাবারবাগানের ২৬ শ্রমিক অপহরণ ও মুক্তিপণ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। জবানবন্দি দেওয়া ব্যক্তির নাম শিমন ত্রিপুরা। তিনি আজ শনিবার বান্দরবানের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম জানিয়েছেন।
জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য লামা ও বান্দরবান সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন থানচি উপজেলার রেমাক্রির হালিরামপাড়ার পিতরাম ত্রিপুরার ছেলে শিমন ত্রিপুরা, রোয়াংছড়ি উপজেলার সাজু ত্রিপুরার দুই ছেলে জ্যাকসন ত্রিপুরা ও প্রশান্ত ত্রিপুরা এবং লামার গজালিয়ার গতিরামপাড়ার খবিচন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে জয়ন্ত ত্রিপুরা। তাঁরা ১৬ ফেব্রুয়ারি লামা ফাঁসিয়াখালীর মুরুংঝিরির ছয়টি রাবারবাগান থেকে ২৬ শ্রমিককে অপহরণ করেন। দুই দিন পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
চারজনকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহৃত সিম, সাতটি মুঠোফোন, দুটি মোটরসাইকেল, দুটি টর্চলাইট পাওয়া যায় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল করিম জানিয়েছেন, এই অপহরণকারী চক্র চলতি বছরের শুরু থেকে লামায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। তাঁদের দলে ১৪ থেকে ১৬ জন সদস্য রয়েছেন। গ্রেপ্তার শিমন ত্রিপুরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার করে বলেছেন, তাঁরা মুরুংঝিরি থেকে ২৬ শ্রমিক ছাড়াও সরই ইউনিয়নে গত ৪ জানুয়ারি তামাকখেতের একজন ও ১৬ জানুয়ারি সাতজন শ্রমিককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছেন। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।