Risingbd:
2025-03-31@03:31:43 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

Published: 24th, February 2025 GMT

প্রসঙ্গ: আত্মকথা ইতিকথা

বইয়ের প্রথম লাইন ‘মাকে আমার মনেই পড়ে না।’ এই কথাটা যেকোনো মানুষের মন শূন্য করে দেবে নিঃসন্দেহে। গবেষক গোলাম মুরশিদের মৃত্যুর ঠিক ছয় মাস পর প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক বই ‘আত্মকথা ইতিকথা’র প্রথম লাইন এটি। এবং বইয়েই মাতৃহীন একটি মানুষের অস্থিরতা টের পাওয়া যায়। আত্মজীবনী পুরোটা শেষ করে যেতে পারেননি। যা পাওয়া গেলো তাই নিয়ে এই বই। ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’ এ এভাবেই নিজেকে মেলে ধরলেন গোলাম মুরশিদ। 

পাঁচ বছর হতে মাত্র কয়েক মাস, ঠিক এ সময় বসন্ত রোগে মারা গিয়েছিলেন গোলাম মুরশিদের মা। সেই থেকে তাঁর একাকী জীবন। নানুর স্নেহ, পিতার শাসন, বিয়ের পর স্ত্রী এলিজা মুরশিদের ভালোবাসা আর সারা জীবনের অধ্যাবসয় ‘আত্মকথা ইতিকথায়’ উঠে এসেছে। এতে রয়েছে এগারোটি বিষয়: মায়ের কথা, বাবার কথা, শিক্ষাজীবনের কথা, অশিক্ষার কথা, অসাংবাদিকতার ইতিকথা, বিবিসির কথা, প্রবাসের নানা কথা, বিলেতে শিক্ষকতার কথা, লেখালেখির কথা। 

জীবনের কতো প্রসঙ্গ বাদ রয়ে গেছে! মৃত্যুর মাসখানেক আগেও বলেছিলেন, যদি আরও কিছু দিন সময় পেতাম! কিন্তু সময় বড়ো নিষ্ঠুর। তাই সময় শেষ হয়ে গেলো। 

আরো পড়ুন:

বইমেলায় ঝুমকি বসুর তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘ছাতিম ফুলের গন্ধ’

আমাদের একজন ডা.

জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী ছিলেন!

তবে ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় যা পাওয়া গেছে, তা কম নয়। এই একনিষ্ঠ গবেষকের অনেক খামখেয়ালি কাজ এবং সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে। জানা গেছে অনেক পাগলামির কথা। যেমন, আইএসসি পরীক্ষা চলাকালীন গণিত পরীক্ষার আগের রাতে রাত একটা পর্যন্ত ওস্তাদ গুল মোহাম্মদের উচ্চাঙ্গসংগীত শুনে নিজের হোস্টেলে ফিরেছিলেন। আবার তিনি ভালো রেজাল্ট করলে শিক্ষকতা করতে হবে এই ভয়ে এম. এ. ক্লাসে ভালোভাবে লেখাপড়া করেননি। তাঁর ‘অশিক্ষার ইতিকথা’ থেকে উদ্ধৃত করছি: ‘... আমার আশঙ্কা হইয়াছিল যে কোনো কারণে আমি যদি প্রথম শ্রেণী পাই, তাহা হইলে আমার কী হইবে? লোকে ভাবিবে, আমি লেখাপড়ায় ভালো, আমি ময়ূরপক্ষী। কিন্তু আমি তো জানি, আমি আসলে তিতির, ময়ূরের কয়েকটি পালক নিজের পাখায় গুঁজিয়া দিয়া ময়ূর সাজিতে চেষ্টা করিতেছি। ধরা যাউক, আমাকে কোনো কলেজে পড়াইতে বলিলে, কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞতার সহিত আমার সত্যিকার চেহারা দাঁত মেলিয়া দেখা দিবে। সেই লজ্জা এবং দুর্গতি হইতে আমাকে তখন কে রক্ষা করিবে? সুতরাং ভাবিলাম, টেইক ইট ইজি। লেখাপড়া করার তেমন দরকার নাই!’ 

তারপরও তিনি প্রথম শ্রেণী পেয়েছিলেন! লিখেছেন, ‘আমার মূর্খতা এবং অজ্ঞানতা চারিদিকে ছড়াইয়া দেওয়ার প্রথম শ্রেণীর সনদ দেওয়া হইল। বস্তুত দশচক্রে বিদ্বান সাজিয়া কর্মপথে যাত্রা করিলাম।’ তাঁর কর্মযজ্ঞের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এর আড়ালের সেই পরিশ্রম, একনিষ্ঠতা, ছোটো ছোটো গল্পকথা, হাসি-কান্নার কথা কম মানুষেরই জানা আছে। ‘আত্মকথা ইতিকথা’য় সেই কথাগুলো রয়েছে। রয়েছে তাঁর বিভিন্ন গবেষণার নেপথ্যকথাও। 

গোলাম মুরশিদ আপদমস্তক গবেষক ছিলেন। গবেষককে কী কী করতে হয়, কতো দিকে দৃষ্টি দিতে হয়, কী ধরনের প্রশ্ন গবেষণাকে এগিয়ে নেয়  ইত্যাদি বিষয়গুলো রয়েছে এ বইয়ে। তাই যে কোনো গবেষকের জন্যও বইটি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যাঁরা তাঁর জীবন সম্পর্কে জানতে চান, তাঁদের জন্য তো অবশ্যই। বইটি সম্পাদনা করেছেন স্বরোচিষ সরকার। এবং প্রকাশ করেছে অবসর। গোলাম মুরশিদের আরও কিছু অসম্পূর্ণ-অগোছালো পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত তা প্রকাশিত হবে।   

তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের জামাতে বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ঢল

যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। 

সোমবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম জামাত ও সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে। 

বায়তুল মোকাররমে ঈদ জামাতে নাশকতা ঠেকাতে পল্টন মোড়সহ মসজিদের আশেপাশে ব্যাপক পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিনে সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যেই বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। পুলিশি তল্লাশি শেষে মুসল্লিরা প্রথম জামাতে অংশ নেন। 

এদিকে বায়তুল মোকাররমে ঈদের আরও তিনটি জামাত পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদের নামাজের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিবুল্লাহিল বাকী। মুকাব্বির ছিলেন মসজিদের অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির মসজিদের প্রধান খাদেম মো. নাসিরউল্লাহ।

সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় জামাত। এতে ইমামতি করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান। মুকাব্বির জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আবদুল হাদী।

সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ জামাত। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. আলাউদ্দীন।

সকাল পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আক্তার মিয়া।

প্রসঙ্গত, পাঁচটি জামাতের কোনোটিতেই নির্দিষ্ট ইমাম উপস্থিত না থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মাওলানা মো. জাকির হোসেনকে রাখা হয়েছে। 

ঢাকা/এনটি//

সম্পর্কিত নিবন্ধ