বাসায় ফেরার পথে নারী শ্রমিকের মৃত্যু, সড়ক আটকে বিক্ষোভ
Published: 24th, February 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় রাতের ডিউটি শেষে কারখানা থেকে বাসায় ফেরার পথে সুবর্ণা আক্তার (৩৫) নামের এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় ছিনতাইকারীর হামলায় মৃত্যু দাবি করে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ ঘটনায় মহাসড়কটিতে প্রায় দেড়ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কের কবিরপুর এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তানজিলা গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা। সকাল সাড়ে ১০টর দিকে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান। বর্তমানে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে, গতকাল রবিবার রাত ৩টার দিকে বাসায় ফেরার পথে মারা যান সুবর্ণা আক্তার।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
গাজীপুরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
মারা যাওয়া সুবর্ণা আক্তারের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরে বলে জানা গেছে। তিনি আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া বাজার এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থেকে তানজিলা গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় কাজ করতেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, শ্রমিকের কোনো নিরাপত্তা নেই। রাতে ডিউটি শেষে শ্রমিকদের নিরাপত্তার সঙ্গে বাসায় পৌঁছে দেওয়া কারখানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। একজন শ্রমিককে ছিনতাইকারীদের হামলায় জীবন দিতে হয়েছে। শ্রমিকরা এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থেই তানজিলার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন। প্রশাসনের আশ্বাসে সাড়ে ১০ টার দিকে সড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকরা।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মহাসড়কে কোনো পরিবহনের ধাক্কায় তার মৃত্যু হতে পারে। তদন্ত শেষে নিশ্চিত করে বলা যাবে, কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি আমরা দেখছি, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।”
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, “এক শ্রমিকের মৃত্যুকে ঘিরে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক অবর ধ ক অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে: জামায়াতের আমির
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
গত রোববার লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে শফিকুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যে প্রায় ১১ দিনের সফর শেষ করে গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন। এই সফর সম্পর্কে জানাতে আজ দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেল ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলটি।
জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর মতো বিএনপিও জুলুমের শিকার হয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও জুলুমের শিকার। দেশ থেকে যাওয়ার আগে আমরা চিন্তা করেছিলাম (খালেদা জিয়ার সঙ্গে) একটা সাক্ষাৎ হবে। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক, সেটি আমরা করতে পারিনি। ইউরোপ সফরে যাওয়ার পর আমার এক পরিবারের সদস্যের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে (যুক্তরাজ্য) গিয়েছি। এরপর খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছি।’
এই দেখা করার মূল উদ্দেশ্য তাঁর (খালেদা জিয়া) খোঁজখবর নেওয়া ছিল বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, তাঁরা তাঁদের অতি সম্মান ও ভালোবাসার সঙ্গে গ্রহণ করেন। যেহেতু তিনি তাঁর ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বাসায় অবস্থান করছেন, কাজেই তিনিও (তারেক রহমান) সেখানে থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক। তিনিও ছিলেন। দুই দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এক জায়গায় বসলে সেখানে রাজনীতির কথা হবে না, এটা কি বাস্তব! বাস্তব নয়। কথা তো হয়েছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, বিচারপ্রক্রিয়া কীভাবে হবে, না হবে—বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে।
জামায়াতের আমির বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটা যেন মতবিরোধে রূপ না নেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মতপার্থক্য থাকুক, নয়তো রাজনীতিবিদেরা অন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এ–ও প্রত্যাশা করি, এটি যাতে মতবিরোধে রূপ না নেয়। ওটা পার্থক্য পর্যন্ত থাকুক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদেরা অনেক সময় বিষয়গুলো খেয়াল করেন না বা করি না। এটা করতে হবে। যদি আমরা দেশকে ভালোবাসি, তাহলে এই ভালোবাসার, শ্রদ্ধার জায়গায়, মিউচুয়াল রেসপেক্টের জায়গায় আসতে হবে। আমার ওপিনিয়ন (মতামত) আমি দিব, কিন্তু এটা বলতে পারব না যে এটাই করতে হবে। আমি ওপিনিয়ন দিয়ে বলব যে এটা করলে আমার দেশ ও জাতির উপকার হবে। আর এটা আমি করতে দিব না, যে যা–ই চাক, এটাও রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভাষা নয়।’
আরও পড়ুনলন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমিরের সাক্ষাৎ১৫ এপ্রিল ২০২৫ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমন্ত্রণে সম্প্রতি ব্রাসেলসে সফরে যায় জামায়াতের প্রতিনিধিদল। সেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটি নিয়ে অবশ্যই কথা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ব্যাপারে তাঁরা জানতে চেয়েছেন? হ্যাঁ, চেয়েছেন। সবাই চাননি, দুয়েকটি জায়গায় তাঁরা চেয়েছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, আমাদের দেশে কেবল একটা গণহত্যা হয়ে গেছে। শহীদের মা, শিশুরা এখনো কান্নাকাটি করছে। স্ত্রীরা কান্নাকাটি করছে। আহতরা কেউ কেউ এখনো হাসপাতালের বেডে আছে। আমরা জাতি হিসেবে তাদের আমাদের যা করণীয়, সেটাও পুরোপুরি করে উঠতে পারিনি। গোটা জাতি ট্রমাটাইজড। কারণ, জুলাই-আগস্ট এই সময়টায় সরকার কার্যত গোটা জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা পক্ষের ছিল না। এটা ছিল জনতার আন্দোলন।’
আরও পড়ুনআগামী রমজানের আগেই নির্বাচন চায় জামায়াত১৬ এপ্রিল ২০২৫আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া তিনটি নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) তো অপার সুযোগ পেয়েছিল। একটানা তিনটা নির্বাচন তাদের অধীনে করেছে, কিন্তু সেই নির্বাচনগুলোকে নির্বাচন রাখল না কেন! তারা তো নির্বাচনের জান কবজ করেছে। এমনকি জনগণ তো বলে, তাদের (আওয়ামী লীগ) যারা সমর্থন করে, তারাও নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল, তারাও ভোট দিতে যায়নি। দিস ইজ ফ্যাক্ট। তো সে রকম একটা দলকে বাংলাদেশের জনগণ এই মুহূর্তে গ্রহণ করবে কি না এবং আওয়ামী লীগও তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করেছে কি না, এটা বিশাল প্রশ্ন। এ কথা বলার পর তারা (বিদেশি) আর কিছু বলেনি। তারা ওখানেই থেমে গেছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) সবাইকে মেনে নিতে হবে এবং দিস ইজ রিয়েলিটি।’
আরও পড়ুনতিন দাবি পূরণ হলেই আগামী রোজার আগে নির্বাচন হতে পারে: জামায়াতের আমির৩ ঘণ্টা আগে