আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিন, না হলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন: জামায়াতের আমির
Published: 24th, February 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিন, না হলে আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠান। আমাদের ভাই আজহারুলকে মুক্তি দিলে একজন মজলুম মুক্তি পাবে।’ আজ সোমবার সকালে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের পাশে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
শরীয়তপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির কে এম মকবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান, জেলা আমির মুহা.
শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকে প্রহসনের ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। ওই প্রহসনের শিকার আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারের প্রকোষ্ঠে বন্দী। এখনকার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও তাঁকে মুক্তি দিচ্ছে না সরকার।
আজহারুল ইসলাম মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পুরোপুরি মুক্তি পাবে না। তবে একজন মজলুম মুক্তি পাবে মন্তব্য করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হলে এ দেশের যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। টানা সাড়ে ১৫ বছর আমাদের ওপর জুলুম চলেছে, আমরা আন্দোলন করেছি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরানোর জন্য। আমরা রাজনীতিবিদেরা তাদের সরাতে পারিনি। কিন্তু সেই সমস্ত কষ্ট–দুঃখ–যাতনা, জুলুম একত্র হয়ে যে শক্তি তৈরি হয়েছিল, আমাদের ছাত্রদের নেতৃত্বে সেই শক্তিতে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। আমাদের সেই সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
যুবকদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, ‘সমাজ গড়ার জন্য দায়িত্ব নিতে হলে তোমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যে সমাজের যুবকেরা এগিয়ে আসে বিপ্লবের জন্য, সেই সমাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিপ্লব সফল হয়। আমি যুবকদের থেকে দুইটি জিনিস চাই, একটি হচ্ছে গভীর দেশপ্রেম ও আরেকটি হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ভয়। এই দুইটা জিনিস নিয়ে যদি যুবকেরা এগিয়ে আসে, তারাই হবে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হিমালয় পর্বত। এই পর্বত যারাই খসে দিতে আসবে, তাদের মাথা চুরমার হয়ে যাবে।’
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে শফিকুর রহমান বলেন, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। আওয়ামী লীগও শিক্ষা নেয়নি। তারা দেশের মানুষের ওপর জুলুম করেছে, নির্যাতন করেছে। দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। সেই সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় বেগমপাড়া গড়ে তুলেছে। তাদের দেশ থেকে কেউ তাড়ায়নি, তারাই দেশ থেকে পালিয়েছে। যারা পালাতে পারেনি, তারা এখন জালে ধরা পড়ছে।
আজ সোমবার সকালে হেলিকপ্টারযোগে শফিকুর রহমান ভেদরগঞ্জে আসেন। পথসভায় বক্তব্য দিয়ে তিনি উপজেলার মহেশকান্দি এলাকায় প্রয়াত বেলায়েত হুসাইনের বাড়িতে যান। বেলায়েত হুসাইন ঢাকার দারুস সালাম থানার সাবেক আমির। ২০১৪ সালে আন্দোলনের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজহ র ল ইসল ম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ মানুষকে মানুষ মনে করত না, রাজনৈতিক নেতাদের উপহাস করত: জামায়াতের আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারা নির্বিঘ্নে চুরি-ডাকাতি, খুন-গুম করার জন্য আমাদের জেলে নিয়েছে। তারা মনে করেছে, তারা যা চাবে, তা–ই পাবে। তারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা (আওয়ামী লীগ) মানুষকে মানুষ মনে করত না। রাজনৈতিক নেতাদের উপহাস করে কথা বলত। তাদের ধারণা, তারা দীর্ঘকাল শাসন করে বেড়াবে। তারা ভুলে গেছে, সবকিছুর মালিক আল্লাহ। তিনি বসাতেও পারেন, খসাতেও পারেন।’
আজ শনিবার বেলা তিনটায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড এলাকায় জামায়াতের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির আমির এ কথা বলেন। জেলা জামায়াত এ পথসভার আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা এমনভাবে শাসন করল, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকেই পালিয়ে গেল। সামান্য অজুহাতে আমাদের ডাকাত, চোর, ধর্ষক—এগুলো বলত। আওয়ামী লীগের একটি পরিবার দেশের মানুষকে দাস মনে করত। তারা ভুলে গেছে, মানুষ অনেক কিছু পরিকল্পনা করে, তার কিছু বাস্তবায়ন হয়, কিছু হয় না। কিন্তু আল্লাহ যা পরিকল্পনা করেন, তার পুরোটাই বাস্তবায়ন হয়।’
পথসভায় জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আমরা তো তাদের (আওয়ামী লীগ) যাইতে বলি নাই। তারা দেশের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে গেছে, জুলম-অত্যাচার করেছে। এর ফল তারা পেয়েছে, আরও পাবে।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনদুর্ভোগ নিরসনের জন্য স্থানীয় নির্বাচনটা দিতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন হলেই জনগণের এই দুর্ভোগ কাটবে। তারপর অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনও দিতে হবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে জনগণ কিছু মৌলিক সংস্কার চায়।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মো. মাসুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি শাহজাহান মিয়ার সঞ্চালনায় পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এ টি এম মাসুদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সহকারী সেক্রেটারি কামাল উদ্দিন, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আবদুর রহিম পাটোয়ারী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল হোসাইন জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, চাঁদপুর শহর জামায়াতের আমির আইনজীবী মো. শাহজাহান খান প্রমুখ।