খেজুরের আমদানি বেশি, দাম কিছুটা কম
Published: 24th, February 2025 GMT
পবিত্র রমজানে গত বছর দাম বেড়েছিল খেজুরের। শুল্ক–কর বাড়ানোর কারণে প্রভাব পড়েছিল খেজুরের দামে। দাম সহনীয় রাখতে এবার রোজার তিন মাস আগে খেজুরের শুল্ক–কর কমানো হয়। তাতে আমদানিতে খরচ কমে যায়। এতে বাড়তে শুরু করেছে আমদানিও।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ১ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেজুর আমদানি হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ১৯ হাজার ৬৮৮ টন। অবশ্য ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে, রোজায় খেজুরের চাহিদা ৬০ হাজার টন। বন্দর দিয়ে এখন প্রতিদিন খেজুর খালাস হচ্ছে। তাতে রোজা শুরুর আগে খেজুরের আমদানি চাহিদার চেয়ে বেশি হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের খেজুর আমদানি শুল্ক–কর কমানোর সুফল পাচ্ছেন ভোক্তারা। আমদানিতেও অনেকে যুক্ত হয়েছেন। তবে বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিলিয়ে শুল্কায়ন মূল্য (যে মূল্যের ওপর শুল্ক–কর হিসাব করা হয়) কমানো হলে শুল্ক–কর আরও কমত। ভোক্তারাও আরও কম দামে খেজুর কিনতে পারতেন।
কেজিতে কমেছে ৫০-৩০০ টাকা
বাজারে ১৫ থেকে ২০ রকমের খেজুর পাওয়া যায়। আবার একই খেজুরের ভিন্ন ভিন্ন দাম রয়েছে। গত বছরের দামের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, সাধারণ মান থেকে উন্নত মানের খেজুরের দাম কেজিতে কমেছে সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা।
সরকারের খেজুর আমদানি শুল্ক–কর কমানোর সুফল পাচ্ছেন ভোক্তারা। আমদানিতেও অনেকে যুক্ত হয়েছেন। তবে বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিলিয়ে শুল্কায়ন মূল্য (যে মূল্যের ওপর শুল্ক–কর হিসাব করা হয়) কমানো হলে শুল্ক–কর আরও কমত। ভোক্তারাও আরও কম দামে খেজুর কিনতে পারতেন।বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলামগতকাল রোববার চট্টগ্রাম স্টেশন রোডে খেজুরের পাইকারি বাজার ফলমন্ডিতে গিয়ে দেখা যায়, ইরাকের ‘জাহিদি’ খেজুর গত বছর রোজায় বিক্রি হয়েছিল ২৩০ টাকা কেজি। এবার একই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। মাঝারি আকারের মেডজুল গত বছর বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি। এবার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩২০ টাকা কেজি।
এ ছাড়া প্রতি কেজি দাব্বাস খেজুর ৩০০-৩৬০ টাকা, মাশরুখ ৪০০ টাকা, সাফারি ৬০০ টাকা, সৌদি আরবের আম্বর ৬০০ টাকা, নাকাল ২৮০ টাকা ও ছড়া খেজুর ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার একটু দামি খেজুরের মধ্যে মান অনুযায়ী আজোয়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, মেডজুল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, মিসরের আম্বর ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রামের খেজুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আল্লাহর রহমত স্টোরের কর্ণধার মো.
পাইকারির মতো খুচরা বাজারেও খেজুরের দাম কমছে। রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাব্বাস খেজুর বিক্রি হচ্ছে মানভেদে প্রতি কেজি ৪০০-৪২০ টাকায়, নাকাল ৩২০-৩৫০ টাকা, জাহিদি ২২০-২৫০ টাকা, আজোয়া ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা এবং মেডজুল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়।
রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে প্রতিবছর রোজার আগে খেজুর কেনেন শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। গতকাল সকালে তাঁকে পাওয়া গেল ভিআইপি ডেটস নামের দোকানে। সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই বোন ও নিজের শ্বশুরবাড়িতে প্রতিবছর রোজায় খেজুর পাঠান তিনি। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। তিনি মধ্যম মানের আজোয়া খেজুর কিনেছেন ১০ কেজি। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা।
দামি খেজুরের মধ্যে মান অনুযায়ী আজোয়া ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, মেডজুল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, মিসরের আম্বর ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দাম কমলেও এখনো শুল্ক–কর বেশি
পবিত্র রমজান সামনে রেখে গত নভেম্বরে খেজুরের আমদানি শুল্ক কমায় সরকার। বিভিন্ন ধরনের খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে ২৫ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত অগ্রিম কর পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে এই সুবিধা আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
শুল্কায়ন মূল্য কমানো হলে প্রতি কেজিতে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে।ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটসের কর্ণধার মো. শফিউল আজমআমদানিকারকেরা বলছেন, শুল্ক–কর কমানো হলেও এখনো খেজুর আমদানিতে কেজিপ্রতি শুল্ক–করের পরিমাণ বেশি। এর প্রধান কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে উচ্চ শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করার কথা বলেছেন আমদানিকারকেরা। এ নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ৬ ফেব্রুয়ারি একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়। রোজার চাহিদার সিংহভাগ খেজুর খালাস হওয়ায় ব্যবসায়িক বৈষম্য এড়াতে শুল্কায়ন মূল্য বহাল রাখা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে শুল্কায়ন মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হবে বলে ওই সভায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়।
জানতে চাইলে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ডেটসের কর্ণধার মো. শফিউল আজম প্রথম আলোকে বলেন, শুল্কায়ন মূল্য কমানো হলে প্রতি কেজিতে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১ হ জ র ৫০০ ট ক র খ জ র আমদ ন ফ র শ ফ র টস আমদ ন ত ৩০০ ট ক ল ইসল ম আরও কম গত বছর র কম ন বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
সাভারে কাপড়ের কারখানায় আগুন
ঢাকার সাভারের পাকিজা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার একটি গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পরে সাভার ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে সাভারের ওই গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, সকালে বৈদ্যুতিক সট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজ শুরু করে। পরে আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় সাভার ট্যানারি ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক সট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত করে জানানো হবে।