সেঞ্চুরিতে দশে দশ কোহলির, এমনকিছু নেই আর কারও
Published: 24th, February 2025 GMT
২০০৮ সালে ওয়ানডে অভিষেক বিরাট কোহলির। সেই কোহলি সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথমবার ওয়ানডে খেললেন চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই। ভারতীয় ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে দারুণ একটি কীর্তিও গড়েছেন। কীর্তিটা যত দেশে ওয়ানডে খেলেছে তত দেশে সেঞ্চুরি করার।
কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া সেঞ্চুরিটা এই সংস্করণে কোহলির ৫১তম। ৫০তম সেঞ্চুরিটা করে ২০২৩ সালেই শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড কেড়েছিলেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। ওয়ানডে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক এ পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছেন ১০টি দেশে। এই দশ দেশেই অন্তত একবার তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন কোহলি। একাধিক দেশে যাঁরা ওয়ানডে খেলেছে তাঁদের আর কারওরই সব দেশে সেঞ্চুরি নেই।
ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত—কোহলি এ পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছে এই দশ দেশে।
২০০৯ সালে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি করার পথে বিরাট কোহলি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্মরণ: সৈয়দ আবুল মকসুদ
সৃষ্টিশীলতা এবং প্রতিভা যাঁদের বহুমুখী, তাঁদের মূল্যায়ন সমস্যাসংকুল। কারণ, তাঁদের সৃষ্টিকর্মের বৈচিত্র্য মূল্যায়নকারীদের বিভ্রান্ত করে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ ধরনের বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যক্তি বঞ্চিত হন যথাযথ মূল্যায়ন থেকে। সাংবাদিকতা, রাজনীতি ও গবেষণা—এই তিন মাধ্যমে সৈয়দ আবুল মকসুদ (১৯৪৬—২০২১) ছিলেন সক্রিয়। ফলে কোনো একটা পরিচয়ে চিহ্নিত করতে না পারায় প্রতিটি ক্ষেত্রে মূল্যায়ন থেকেই প্রায়ই বাদ পড়ে গেছেন তিনি। বিশ্বাস করি, সৎ লেখকমাত্রই সংগ্রামী। লেখা ছাড়া লেখকের আর কী হাতিয়ার আছে? সামাজিক আর রাষ্ট্রীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে সম্বল করে একাই শুভ্র সফেদ বসনে প্রতিবাদী হাঁটা হেঁটেছেন বহুদিন রাজপথে।
রাজনীতি–সমালোচক হিসেবে স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হলেও তাঁর সমালোচনার যথার্থ নিরূপণকারী সমালোচক পাওয়া যায়নি। হয়তো এসব কারণেই তাঁর সাফল্যসমূহের যথেষ্ট পরিচিতি ঘটেনি। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তাঁর অবদান একত্রে বিবেচনা করে দেখলে তাঁর মতো পরিশ্রমী, নানা গুণ–সমন্বিত ব্যক্তিত্ব কজনকে শনাক্ত করা সম্ভব আমাদের সমাজ-ইতিহাসে?
সততা, সংগ্রাম, বিশ্বাস আর মেধার অপূর্ব সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা কুসমিত ইস্পাত চরিত্রের এক সমাজহিতৈষী লেখক ছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়ে ওঠা একজন মানুষ কী করে সফল হয়ে ওঠে, তারই দৃষ্টান্ত তিনি। জন্মের দুই বছর পরই মাকে হারিয়ে অনুভব করেছেন আর্তের আর্তি, দুঃখিত অশ্রু। তাই আজীবন অসহায়ের ভার বইতে কাঁধ পেতে দিয়েছেন, সচল রেখেছেন কলম।
তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের ক্ষুরধার চিন্তা, গবেষণা ও গবেষণাপ্রসূত ভাবনা থেকে অনেক সমস্যার সমাধানের পথ দেখাতে পারেন। এ সমাধানগুলো যখন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তথা জনগণের অধিকার ও স্বার্থের একীভূত হয়ে যায়, তখন তারা পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল বা গণমানুষের বুদ্ধিজীবীতে পরিণত হন। সৈয়দ আবুল মকসুদ ছিলেন তেমনই একজন গণমানুষের বুদ্ধিজীবী। তবে তাঁর বুদ্ধিভিত্তিক কার্যক্রম তাঁকে এলিটস হিসেবে পরিণত করেনি, তাঁকে জনমানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরেও নিয়ে যায়নি; বরং তাঁকে তাদের কাতারে নিয়ে এসেছে। তিনি নিজে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন এবং এ কাজ করতে গিয়ে তিনি জনস্বার্থের ধারক ও বাহকে পরিণত হয়েছিলেন। আজীবন তিনি তাঁর বহুমুখী প্রতিভা জনকল্যাণে নিবেদিত করেছিলেন এবং তাঁদেরই একজনে পরিণত হয়েছিলেন।
এক পাশে মানুষ ও সমাজ এবং অপর পক্ষে সাহিত্য-সংস্কৃতি-সাংবাদিকতা তাঁর মন-মনন-মানস ও কাজের ভুবন—এই দুই ধারায় বিভক্ত হয়েছে। সাহিত্যচর্চায় যাঁরা নিবেদিত, তাঁদের কেউ কেউ সমাজমনস্ক হতেই পারেন, তার প্রতিফলন লক্ষ করা যায়, তাঁদের রচনায় ক্বচিৎ কেউ সীমিত পরিসরে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করার গরজও বোধ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন স্বভাবত স্বতন্ত্র। নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন মানুষের দুর্দশা লাঘবে, সামাজিক কল্যাণে, অন্যায়-অবিচার-শোষণ-পীড়নের বিপক্ষে প্রতিবাদী ভূমিকা পালনে, রাষ্ট্র-সরকার-প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-জুলুম প্রতিকারে। তাঁর গভীর দায়বদ্ধতা ছিল সমাজের প্রতি, প্রবল মমত্ব-সহানুভূতি-ভালোবাসা ছিল মানুষের প্রতি। এ ক্ষেত্রে প্রাণিত ও পরিচালিত হয়েছেন বিবেকের অনুশাসনে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন জাতি-ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-লিঙ্গনির্বিশেষে সব পীড়িত ও নিরুপায় মানুষের জন্য। অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক-মানবাধিকার–বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। সংখ্যালঘু নিপীড়ন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংকট-সমস্যা, নারী নিগ্রহ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, পরিবেশরক্ষা, নাগরিকের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি ছিলেন সচেতন ও উচ্চ কণ্ঠ। রাষ্ট্রের একজন কর্তব্যনিষ্ঠ নাগরিক ও সামজের সচেতন সদস্য হিসেবে তাঁর ভূমিকা পালন করেছেন, সততার সঙ্গে কোনো ভীতি বা প্রলোভন তাঁকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনি কখনো।
ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী ও বাম ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চের পর মস্কোপন্থী ন্যাপ নেতা ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম চৌধুরীর গঠিত মুক্তিবাহিনীর সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখা ছাড়াও কলকাতা থেকে প্রকাশিত আব্দুল মান্নান সম্পাদিত জয়বাংলা পত্রিকায় বিশেষ বিশেষ প্রতিবেদন পাঠাতেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের ইনফরমেশন সেলে যোগ দেন।
কিছুদিন পর বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ প্রেস ইন্টারন্যাশনালে যোগ দেন, যা পরে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সঙ্গে একীভূত হয়ে যায়। বাসসে ছিলেন বার্তা সম্পাদক ও উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক। সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে পৃথিবীর ১৭টি দেশ সফর করেছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ হিসেবে বাসস থেকে পদত্যাগ করেন। এর পর থেকে তিনি ‘সহজিয়া কড়চা’ এবং ‘বাঘা তেঁতুল’ শিরোনামে প্রথম আলোতে নিয়মিত কলাম লিখতে শুরু করেন। যে লেখাগুলো তৎকালীন সময়ে বেশ আলোচিত ছিল পাঠকমহলে।
অনেক ব্যর্থ কাজের সমালোচনা করে সরকারের তীর্যক সমালোচনা করতে সামান্য দ্বিধা করতেন না। আবার জনকল্যাণের জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে কার্পণ্য করতেন না। সব সরকারের বিরুদ্ধেই তিনি ছিলেন প্রতিবাদী কণ্ঠের অধিকারী। এমনকি তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতেও গিয়েছেন। তিনি ছোট–বড়, দেশীয় আন্তর্জাতিক সব অন্যায়েরই প্রতিবাদ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের প্রতিবাদে তিনি সত্যাগ্রহ শুরু করেন। এরই অংশ হিসেবে পশ্চিমা বেশভূষা ছেড়ে তিনি সাদা খদ্দরের সেলাইবিহীন কাপড় পরা ধরেন। আমৃত্যু তিনি এ প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। এ জন্য তাঁকে অনেক সময় ঠাট্টা-মশকরাও সহ্য করতে হয়েছে। তবু তিনি তাঁর প্রতিবাদ থেকে সামান্য বিচ্যুত হননি।
মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ তাঁর হয়েছিল রাজনীতি ও সাংবাদিকতার সূত্রে। সে কারণে মাওলানা ভাসানীর প্রতি তাঁর অনুরাগ-আকর্ষণ, এমনকি যথেষ্ট দুর্বলতাও গড়ে ওঠে।
তাঁর প্রকাশিত বই প্রায় ৫০টি এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বই লিখেছেন ভাসানীকে নিয়ে। তিনিই প্রথম ভাসানীর প্রামাণ্য ও পূর্ণাঙ্গ জীবনী রচনা করেন; সেই বইয়ের নাম ভাসানী (১৯৮৬)। এতে আলোচিত হয়েছে মাওলানা ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড, রাজনীতি ও দর্শন। এর বাইরেও ভাসানী সম্পর্কে তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে মওলানা ভাসানী: সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের ব্যঙ্গচিত্র (২০১৩), কাগমারী সম্মেলন: মওলানা ভাসানীর পূর্ব বাংলার স্বাধিকার ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম (২০১৭), ভাসানীর ভারত প্রবাস (২০১৯), ভাসানীর ঐতিহাসিক অভিভাষণ (২০২২)। উল্লিখিত বইগুলোতে মাওলানা ভাসানীর সংগ্রাম, সাংগঠনিক ক্ষমতা, দৃঢ় মনোভঙ্গি, দূরদৃষ্টি ও বিচক্ষণতার বিশ্বস্ত পরিচয় ফুটে উঠেছে।
গান্ধীর জীবন ও রাজনৈতিক দর্শন মকসুদকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। গান্ধীর মানবপ্রীতি, সেবাধর্ম, অহিংস নীতি ও সত্যাগ্রহ পন্থার আদর্শকে তিনি নিজের জীবনে গ্রহণের চেষ্টা করেন। ঢাকায় গড়ে তোলেন ‘মহাত্মা গান্ধী স্মারক সদন’,Ñপাশাপাশি গান্ধী গবেষণাতেও মন দেন। ফলে বাংলা ও ইংরেজিতে দুই ভাষাতেই গান্ধীবিষয়ক কয়েকটি বই প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে গান্ধী চর্চায় আবুল মকসুদের মতো এমন প্রগাঢ় ভক্তি ও নিষ্ঠায় আগে-পরে আর কেউ কাজ করেছেন বলে জানা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়েও তাঁর অনন্য কাজ রয়েছে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ পৃথিবী ছেড়েছেন ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। এর ছয় দিন আগে; অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোতে তিনি লেখেন, ‘আজকাল নেতারা কেউ কেউ বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা নন। কিছুকাল যাবৎ এর সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে, তিনি ছিলেন “পাকিস্তানের এজেন্ট”। বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ কথার অর্থ যে কতটা ক্ষতিকর, তা যাঁরা বলছেন, তাঁরা ভেবে দেখেননি। মুক্তিযুদ্ধে জিয়া এবং অন্য কার কী ভূমিকা, তা প্রবাসী সরকার এবং বঙ্গবন্ধুর সরকারের না জানা খুব বড় ব্যর্থতা। জিয়া পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনে ছিলেন, এই অভিযোগ যদি সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পূর্ণ পুনর্লিখনের প্রয়োজন হবে। দীর্ঘ ৯ মাস একজন “পাকিস্তানি চর” প্রবাসী সরকারের সঙ্গে কাজ করলেন, তারা কিছু টেরই পেল না। স্বাধীনতার পর সেই চরকেই সেনাবাহিনীর শীর্ষ দুটি পদের একটি দেওয়া হয়। তিনি যে পাকিস্তানের এজেন্ট, সেটা কেউ জানতেই পারলেন না।’
‘শত্রুকে নিন্দা করারও পরিমিত ভাষা আছে। সেটা অতিক্রম করলে লাভের চেয়ে লোকসান হয় বেশি। আওয়ামী লীগের সবাই অবশ্য এ কাজ করছেন না। জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন প্রত্যাহার করলে মৃত জিয়ার কোনো ক্ষতি নেই। তবে যেকোনো উদ্দেশ্যেই হোক, এমন কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত হবে না, যা ভবিষ্যতের কোনো সরকার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে অপছন্দের বহু ব্যক্তির পদক ছিনিয়ে নিয়ে অপমান করতে পারে।’
আপনজনদের কাছে সব মৃত্যুই অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ, সব পরিবারই আপনজনের মৃত্যুতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষত বয়োজ্যেষ্ঠদের মৃত্যুতে পরিবার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ, বয়োজ্যেষ্ঠদের মৃত্যুতে পরিবার শুধু তাদের অর্থনৈতিক সহায়তা থেকেই বঞ্চিত হয় না, বঞ্চিত হয় তাদের অভিভাবকত্ব থেকেও, যে অভিভাবকত্ব সাধারণত বটবৃক্ষের মতো ছায়া ও সুরক্ষা দেয়।
সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুর ক্ষতির মাত্রা অপূরণীয়। কারণ, তাঁর পরিবার ছিল অনেক বড়, সারা দেশে বিস্তৃত টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত। দেশের অগণিত মানুষের তিনি ছিলেন অভিভাবক, আপনজন। তিনি তাঁদের পক্ষে কথা বলতেন। প্রতিবাদ করতেন। দেনদরবার করতেন। তিনি তাঁদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতেন। সব ধরনের দাবি-দাওয়ার পরিবেশ থেকে ভোটাধিকার পর্যন্ত। এমনকি ব্যক্তিগত দাবি-দাওয়াও। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন ক্রমসংকুচিত নাগরিক সমাজের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
নাগরিক সমাজের কোনো প্রতিবাদই তাঁকে ছাড়া হতো না। তিনি কর্তৃপক্ষের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে প্রতিবাদ করতেন অসমসাহসিকতার সঙ্গে। তাঁর প্রতিবাদের ভাষা ছিল বুদ্ধিদীপ্ত ও অনেক ক্ষেত্রেই জুতসই। তিনি অন্যায়কে অন্যায় বলতে দ্বিধা করতেন না।
মফিজ ইমাম মিলন সাংবাদিক ও গবেষক
ই-মেইল: [email protected]