আজ দেশের সব মেডিকেল কলেজে ‘একাডেমিক শাটডাউন’ কর্মসূচি
Published: 24th, February 2025 GMT
পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল কর্মবিরতি পালন করেছেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। দাবি আদায়ে আজ সোমবার সারাদেশের সব মেডিকেল কলেজে ‘একাডেমিক শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টর’স মুভমেন্ট ফর জাস্টিস।
দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও।
রোববার রাতে সংগঠনটির সভাপতি ডা.
দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরিসহ চার দফা দাবিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় বিক্ষোভ করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টস ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা। সরকারের আশ্বাসে তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রয়েছে। এবার সারাদেশে তাদের পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবি হলো -
১. এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না। বিএমডিসির নিবন্ধন কেবল এমবিবিএস/বিডিএস উত্তীর্ণদের দেওয়া, ম্যাটসদের নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ করা এবং বিএমডিসির আইনের বিরুদ্ধে করা রিট মামলা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি (ওভার দ্য কাউন্টার) তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া আর কেউ ওটিসি তালিকার বাইরে ওষুধ লিখতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ, চিকিৎসকদের বিসিএসে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. সব ধরনের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এবং মানহীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। এরইমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদবি বাতিল করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
লং মার্চ টু হাইকোর্ট মঙ্গলবার
গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস। এর সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না। বিএমডিসির এই আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। গত ১৩ বছরে এই রিটের শুনানি ৯১ বার পেছানো হয়েছে। রায় দীর্ঘায়িত করে আইনের ফাঁক দিয়ে ‘ডাক্তার’ পদবি লেখার অভিপ্রায়ে আরও দুটি রিট করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের দীর্ঘসূত্রতা চাই না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি আদায়ে সোমবার সারাদেশের সব মেডিকেল কলেজে ‘একাডেমিক শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হবে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে লং মার্চ টু হাইকোর্ট কর্মসূচি পালন করা হবে। এর পরও যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ ব ড এস ম য টস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামেও কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন
এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল আটটা থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকেরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। চমেক হাসপাতালে প্রায় ১৮০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক পালা করে মূল চিকিৎসকদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। কর্মসূচির কারণে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
একই দাবিতে চমেক শিক্ষার্থীরাও সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করেছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ দুপুর ১২টায় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও সমাবেশ করার কথা রয়েছে। চমেক পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব হোসেন বলেন, পাঁচ দফা দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। শিক্ষার্থীরাও শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। সবার দাবি, ম্যাটস, ডিএমএফসহ কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না। এ ছাড়া চিকিৎসকদের চাকরিতে ঢোকার বয়স ৩২ বছর থেকে বাড়াতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি হলো, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক আহমদ হাসবাইন বলেন, ‘সকাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। অন্যান্য মেডিকেল কলেজের মতো এই আন্দোলন চলছে। দাবি আদায়ের জন্য কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হলো। আজ মানববন্ধন শেষে আমরা অধ্যক্ষ ও পরিচালক বরাবরে স্মারকলিপি দেব।’
জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. তসলিম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সারা দেশের মতো এখানে ধর্মঘট করছে। আমরা অন্য চিকিৎসকদের দিয়ে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি।’