মনিরামপুরে বাঁধ ভেঙে হাজার বিঘা ফসলি জমি প্লাবিত
Published: 24th, February 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার হরিনা বিলের বাঁধ ভেঙে হাজার বিঘা বোরো ধানের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। পানি প্রবেশ করায় ভেসে গেছে মাছের ঘেরও।
গত শনিবার ভোর রাত ৪টার দিকে বাঁধটির ২০-২৫ হাত ভেঙে যায়। এলাকাবাসী মাইকিং করে ও নিজেদের উদ্যোগে দিনভর চেষ্টা করে পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তারা পানি আটকানোর চেষ্টা করেন।
আরো পড়ুন:
দিতিকন্যার ‘মেয়েদের গল্প’ সিনেমায় থাকছেন না বাঁধন
গোপালগঞ্জে মধুমতি রক্ষায় বাধা ৫০ অবৈধ স্থাপনা
এদিকে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সেখানে উপস্থিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসী জানান, শনিবার ভোর ৪টার দিকে হরিনা বিলের মধ্যে থাকা খালের ২০-২৫ হাত বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর থেকেই বিলের মধ্যে থাকা ফসলি জমিতে পানি প্রবেশ শুরু করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এলাকায় মাইকিং করে এবং নিজেদের উদ্যোগে শনিবার দিনভর চেষ্টা করেও পানি আটকাতে ব্যর্থ হন। ফলে সেখানে কোমর পর্যন্ত পানি জমেছে। রবিবারও চলছে পানি আটকানোর চেষ্টা। পানির স্রোত বেশি থাকায় কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি। এতে করে ৯০০-১০০০ বিঘা জমিতে আবাদ করা বোরো ধান এখন কোমর পানিতে তলিয়ে আছে।
মনিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দিপক কুমার বলেন, “হরিনা বিলে বিমল ও আছাদের বিশাল আয়তনের দুটো মাছের ঘের রয়েছে। ঘের দুইটির মাঝখানে হরিনা খালের অবস্থান। খালের পাড় সরু হওয়ায় ঘের কেটে চওড়া করে পাড় বেঁধে তালের চারা রোপণ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “ঘের মালিকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বোরো মৌসুম আসলে ঘেরের পানি সেচে হরিনা ব্রিজের মুখে বাঁধ দিয়ে খালে পানি ফেলা হয়। খালটি কেশবপুর উপজেলার গাইয়েখালি গেট হয়ে নদীর সঙ্গে মিশেছে। এবার বোরো মৌসুম শুরুর আগে, বিমলের ঘেরের পানি জমির মালিকরা নিজ খরচে সেচে বোরো আবাদ করেন। ঘেরের মধ্যে সরু করে আর একটি ঘের কেটে সেখানে মাছ ধরে রেখেছেন বিমল। হরিনা খালের পানি গাইয়েখালি গেট দিয়ে না সরায় এখন খালে পানি টুইটম্বুর হয়ে আছে।”
ভুক্তভোগী কৃষক অসিম রায় বলেন, “ভবদহ জলবদ্ধতার কারণে বর্ষা মৌসুমে ধান করতে পারি না। এখন পানি কমায় ধান চাষ করেছি, তাও জলের নিচে চলে গেলো। এখন আমরা কিভাবে সংসার চালাব সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না বলেন, “ভেঙে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করেছি। বাঁধ নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা প্রাদান করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে তাদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রয়োজীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবি নাটমণ্ডলে রবিঠাকুরের কালজয়ী নটক ‘রক্তকরবী’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক ‘রক্তকরবী’ মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডল মিলনায়তনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রযোজনায় মঞ্চে আসছে কালজয়ী এ নাটকটি।
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ জানিয়েছে, আজ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সন্ধ্যা ৭টায় এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটকটির প্রদর্শনী হবে। রক্তকরবী মঞ্চে নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর নাহিদ খান। এতে ৩য় বর্ষের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অভিনয় করছেন।
তানভীর নাহিদ বলেন, “বাংলাদেশে সম্প্রতি এক রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা গড়ে উঠেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে, রক্তকরবী নাটকটির রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিতা এ প্রযোজনা সৃজনের নেপথ্যে বিশেষ অনুপ্রেরণা সঞ্চার করেছে। জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাট্যভাষ্যরূপে এ প্রযোজনায় নানা চিহ্ন সৃজিত হয়েছে।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘রক্তকরবী’ নাটকটি লিখেছেন শতবর্ষ আগে। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল নাটকটি রচনার ১০০ বছর পূর্তি হয়। ‘রক্তকরবী’ রচনার শতবর্ষ পূর্তিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নাটকটি মঞ্চস্থ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছের তানভীর নাহিদ।
তিনি বলেন, “রক্তকরবীতে আমরা দর্শক-অভিনেতার নৈকট্য, নিরাভরণ মঞ্চ ও যৎসামান্য দ্রব্যাদি ব্যবহার দ্বারা দেশজ আঙ্গিকে উপস্থাপনের প্রতি মনোযোগ দিয়েছি। ঐতিহ্যবাহী দেশজ নাট্যের আবহে চারপাশে দর্শক পরিবেষ্টিত হয়ে মঞ্চস্থ হবে এই পালা।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রূপক সাংকেতিক নাটক রক্তকরবী। মানুষের প্রবল লোভ কীভাবে জীবনের সৌন্দর্য ও স্বাভাবিকতাকে অস্বীকার করে মানুষকে নিছক যন্ত্রে ও উৎপাদনের উপকরণে পরিণত করে এবং শোষকের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ কী রূপ ধারণ করে তারই রূপায়ণ ঘটে এ নাটকে।
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন কাজী তামান্না হক সিগমা বলেছেন, রক্তকরবী এক দ্রোহ, যা শিল্প এবং সৃষ্টি দিয়ে রাজা নয়, রাজনীতির পরিবর্তন আনে; যা অর্থনৈতিক মুক্তির চেয়ে সৃজনের আলোয় মুক্তির পথ দেখায়।