কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যাত্রা শুরুর তিন বছর পর হতে যাচ্ছে দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিলরদের ভোটে ব্যালটের মাধ্যমে শীর্ষ পদে নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকলেও সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একক প্রার্থী থাকায় সম্মেলন হতে যাচ্ছে ভোটের আয়োজন ছাড়াই। 

রোববার কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট আলী আক্কাস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়– মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং মনোনয়নপত্র জমাদানকারী কোনো প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় তিন পদের প্রার্থীদের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে তালিকা প্রকাশ করা হলো। 

তিন প্রার্থী হচ্ছেন– সভাপতি পদে উদবাতুল বারী আবু, সাধারণ সম্পাদক পদে ইউসুফ মোল্লা টিপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রাজিউর রহমান রাজিব।

জানা গেছে, কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি। এতে ব্যালটের মাধ্যমে মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের দুই হাজার ৭২৭ জন কাউন্সিলর প্রতীক সংবলিত ব্যালট পেপারের মাধ্যমে শীর্ষ ওই তিন পদে প্রার্থী নির্বাচিত করার কথা ছিল। তবে কোনো পদেই একাধিক প্রার্থী না থাকায় আর ভোটগ্রহণের প্রয়োজন পড়ছে না। 

সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে প্রধান বক্তা থাকবেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন ও কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া।

কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী আক্কাস বলেন, তিন শীর্ষ পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রোববার ৩টি পদেই একক ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। ব্যালটে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি থাকলেও একক প্রার্থী থাকায় আর ভোট হচ্ছে না।

দলের সদস্য সচিব এবং আসন্ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু সমকালকে বলেন, ‘ইতোপূর্বে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা নেতৃত্ব সৃষ্টি করেছি। আমরা চেয়েছিলাম মহানগরের সম্মেলন ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক। তবে ভোট না হলেও উৎসবমুখর এ সম্মেলনে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ড থেকে ২ হাজার ৭২৭ জন কাউন্সিলর, চার হাজার প্রতিনিধিসহ প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে।’ তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরবর্তীতে কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক করা হবে। তবে কত সদস্যের হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

২০২২ সালের ৩০ মে প্রথমবারের মতো কুমিল্লা মহানগর বিএনপির ৪৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আমিরুজ্জামান আমিরকে আহ্বায়ক ও কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুকে সদস্য সচিব করা হয়। ওই কমিটিতে উদবাতুল বারী আবুকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ২০২২ সালের ২৭ জুলাই আমিরুজ্জামান আমিরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই বছরের ৩১ আগস্ট উৎবাতুল বারী আবুকে আহ্বায়ক এবং ইউসুফ মোল্লা টিপুকে সদস্য সচিব করে ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউস ফ ম ল ল ব এনপ র সদস য নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপনে নির্বাচনী তৎপরতা, ফাঁস হওয়ায় সমালোচনা

মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল ২২ ফেব্রুয়ারি। অথচ অধিকাংশ সদস্যই জানেন না কবে, কখন বা কীভাবে হচ্ছে নির্বাচন। গোপনে নির্বাচনী তৎপরতার খবর ফাঁস হয়ে পড়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি নামে একটি সংগঠনে।

সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ৪৩। তাদের মধ্যে কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা গ্রামের সাবেক পৌর কাউন্সিলর  বজলুর রশিদ নান্নু, ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল খাঁ, সাকলায়েন মুরাদসহ অন্তত ৩০ জনের দাবি, তাদের ডায়াবেটিক সমিতির নির্বাচন নিয়ে কিছুই জানেন না তারা। সংগঠনের এজিএম বা বার্ষিক সাধারণ সভা করা হয়নি। এখন সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু কোনো নিয়ম ছাড়াই কীভাবে নির্বাচন হবে, তা তাদের বোধগম্য না।

ত্রিবার্ষিক নির্বাচনের জন্য ৩০ জানুয়ারি তপশিল ঘোষণা করা হয়। তপশিলের কপি সংগঠন ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নোটিশ বোর্ডে টাঙানোর কথা। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র বিক্রির দিন সংগঠন ও সমাজসেবা অফিসে গিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি  কোনো নোটিশ বোর্ডও দেখা যায়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, ডা. ইউনুচ আলী ও সাজ্জাত হোসেন নামে তিনজনকে নিয়ে এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত ১৫টি পদের মধ্যে ৪টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। সভাপতি পদে দু’জন, সাধারণ সম্পাদক পদে একজন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে একজন মনোনয়নপত্র কিনেছেন।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সদস্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের ভাষ্য, সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্তরা সদস্যদের তালিকা দিয়ে নির্বাচন করার জন্য বলেছিলেন। এ মর্মে তিনি একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছেন। সংগঠনটি কীভাবে এজিএম করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা জানেন না তিনি। এখন এই নির্বাচন নিয়ে নানা জটিলতা সামনে এসেছে। এসব কারণে নির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

বণিক সমিতির কমিটি নিয়ে বিতর্ক : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মতামত না নিয়ে গোপনে পৌর শহরের বাজার বণিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার সকালে মঠবাড়িয়া পৌরসভার সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কে এম হুমায়ুন কবির, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুম বিল্লাহ, ব্যবসায়ী ওয়ালিউল ইসলাম, জাকির খান, বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, নিজামুল কবির মিরাজ, তুষার আহমেদ, রতন কর্মকার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ-জামায়াত মিলে ইদ্রিস আলী মহারাজকে সভাপতি ও কামরুল ইসলাম রিপনকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৯ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শামীম মিয়া মৃধা ও উপজেলা জামায়েতের আমির অধ্যাপক জলিল শরীফকে দায়ী করেন তারা।

অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শামীম মিয়া মৃধা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির নামধারী কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। আমাকে ও জামায়াত নেতা জলিল শরীফকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি এবং সহযোগিতা করেনি। বণিক সমিতি নির্বাচনের জন্য সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করে এ কমিটির মাধ্যমে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মর্গ্যান গার্লস স্কুলের দাতা প্রতিনিধি সদস্য পদে রিয়াদের মনোনয়নপত্র জমা 
  • গোপনে নির্বাচনী তৎপরতা, ফাঁস হওয়ায় সমালোচনা
  • নাট্যনির্মাতাদের ভোটযুদ্ধ আজ
  • রাত পোহালেই নাট্য নির্মাতাদের ভোটের লড়াই