চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের হাতাহাতি, অভিযোগ ছাত্রশিবিরের দিকে
Published: 24th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম কলেজের একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রোববার নগরীর চকবাজারের কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় জড়িত দিকে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদলের নেতা রিদুয়ান রিদুর নেতৃত্বে একটি দল ক্যাম্পাসে ঢুকে সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের দিকে তেড়ে আসেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে আরও কিছু শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করে। এ সময় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ কলেজে খেলা ছিল। তাই অনেকে খেলা দেখতে এসেছিল। তবে একটি পক্ষ কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া আমাদের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি করে। এক পর্যায়ে তারা খারাপ ব্যবহার করে; হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস সবার। কোনো গোষ্ঠী বা দলের নয় এটি।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ঝামেলা তৈরি করে বলে দাবি করেন তিনি। কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল করিম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের সব সময় ভালো সম্পর্ক ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের কয়েকজন কর্মী ক্লাস করতে গেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শিবিরের কয়েকজন তাদের ওপর হামলা করে। ছাত্রদলের কেউ কলেজে সদস্য ফরম বিতরণ করতে যায়নি বলে দাবি করেন তিনি।
ছাত্রশিবিরের মহানগর উত্তরের সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, আমাদের কেউ কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। একটি গ্রুপ উদ্দেশ্যমূলকভাবে শিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র ন ত র ন ত কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে পেয়ে আনন্দাশ্রু বাধ মানছে না তুষার-শান্তা দম্পতির
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপনে তখন ব্যস্ত সারাদেশ। চলছে শোভাযাত্রা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। কিন্তু এ দিনে একটি নবজাত শিশুকে ঘিরে আরও আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কুমিল্লায় আহসান হাবিব তুষার ও শামীমা আক্তার শান্তা দম্পতির ঘরে, তার কাছে যেন বাইরের সব আয়োজন ফিকে। পহেলা বৈশাখের সকালেই তাদের কোলজুড়ে এসেছে দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। শিশুটিকে ঘিরে আনন্দাশ্রু যেন বাঁধ মানছে না বাবা-মার। দাদার দেওয়া নামে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে সুফিয়া আহসান রোয়া। তুষার ও শান্তার চাওয়া, তাদের দুই মেয়ে প্রথমে হোক ভালো মানুষ, পরে একজন চিকিৎসক।
গত সোমবার ভোর সাড়ে ৬টায় দেবিদ্বার উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হসপিটালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শান্তা। এ হাসপাতালটি তুষারের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। এ দম্পতির ৯ বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তান আছে। ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স শেষ করা তুষার পেশায় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় পরিবেশক। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা তাঁর স্ত্রী শান্তা প্যাথলজি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছেন। তুষার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী মো. সেলিমের ছেলে। শান্তা একই উপজেলার বাঙ্গুরী এলাকার বাসিন্দা। তাদের তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে পরিণতি পায় ২০১৪ সালে। বিয়ের পর ২০১৬ সালে দেবিদ্বার সেন্ট্রাল হসপিটালেই তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম। এবার বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে ঘর আলো করে এসেছে দ্বিতীয় সন্তান রোয়া।
তুষার বলেন, নববর্ষের কাছাকাছি সময়ে আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় ছিল। কিন্তু পহেলা বৈশাখের বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এ দিনেই সিজার করতে আমরা চিকিৎসকের মতামত নিয়েছিলাম। চিকিৎসকও সিজারিয়ানের জন্য নববর্ষকেই বেছে নেন। এ দিনে সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ওর জন্মদিন উদযাপনে কাউকে আর তারিখ মনে করিয়ে দিতে হবে না।
তুষার আরও বলেন, আমাদের প্রথম বাচ্চা হয়েছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে। তাই দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের ঝুঁকি নেননি। শান্তার গাইনি সার্জন ছিলেন আমার চাচি ডা. হনুফা আক্তার। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে আমাদের বাসা হওয়ায় নিয়মিত ডা. হনুফার তত্ত্বাবধানে আমার স্ত্রী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতেন। তবু মনে শঙ্কা তো ছিলই। অপারেশন থিয়েটারের সামনে মা-বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মনে মনে আল্লাহকে ডেকেছি, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। আমার মা যখন বাচ্চা কোলে নিয়ে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হন, তখন সব দুশ্চিন্তা দূর হয়। বাচ্চার জন্য নতুন কাপড়, তোয়ালে উপহার দিয়েছে আমার বোনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
শান্তা বলেন, স্থানীয় রীতি অনুসারে আমি সন্তান সম্ভবা হওয়ার ৯ মাসের মাথায় আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে বিশেষ খাবার ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখন বাচ্চার জন্য দোয়া কামনায় সাত দিন বয়সের সময় আবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক গাইনি সার্জন হনুফা আক্তার বলেন, প্রসূতি শান্তা আমার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। যেন কোনো ঝুঁকিতে না পড়তে হয় এবং গর্ভের সন্তান যেন ভালো থাকে এ বিষয়ে শান্তা ও তুষার আগে থেকেই চেম্বারে এসে নিয়মিত ফলোআপ করতেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীদের যতটুকু সচেতন থাকা দরকার, তুষার তার শতভাগ ছিলেন। নবজাতকের ওজন সাধারণত আড়াই কেজি হলেও সমস্যা নেই। শান্তা ও তুষারের মেয়ের ওজন হয়েছে ২ কেজি ৯০০ গ্রাম; যা একজন সুস্থ নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ আছে।