‘অফিস থেকে ফেরার পথে ফুটপাত ধরে বাসায় ফিরি। কিন্তু পৌরবাজারের পুরো এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে।’ গতকাল রোববার দুপুরে ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমান উল্লাহ। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মতো হাজারো মানুষকে প্রতিদিন এই 
সড়কের পাশের ফুটপাত দিয়ে চলার সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আমান উল্লাহ বলছিলেন, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে হাঁটার জায়গাও থাকে না। বছরের পর বছর এই ভোগান্তি চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্থায়ী কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
পৌরবাজারের সামনের ফুটপাতটি পথচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, না-কি হকারদের জন্য– তা বোঝাই মুশকিল। ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী হকারদের সাজানো দোকানে পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও পৌর প্রশাসক বলছেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।
আড়াইহাজার পৌরসভার সূত্র জানায়, রমজান সামনে রেখে যানজট নিরসনে ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেনের নেতৃত্বে এদিন অর্ধশতাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের একদিনের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় প্রশাসন। 
এর আগে ফুটপাতে হকার বসতে নিষেধ করে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মানায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ করে যাওয়ার পরপরই ফুটপাত ও সড়ক আবারও চলে যায় হকারদের দখলে। রোববার দুপুরে দেখা গেছে, নতুন করে আড়াইহাজার উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ডাকবাংলো পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্ধশতাধিক দোকান বসেছে। এতে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
একটি বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল রাব্বি বলেন, ‘দেখছেন, কীভাবে যেতে হচ্ছে। ফুটপাতে আমাদের চলাচল করা খুবই কঠিন। হকার-ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতাদের যে ভিড়, এর মধ্যে হাঁটা সত্যিই কঠিন। একজন পথচারী হিসেবে চাই, অবশ্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করা হোক।’
রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় অনেক মানুষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছা করেই ধাক্কা দেয়। এতে খুবই বিব্রত হই। বিশেষ করে ফুটপাত ব্যবহারে নারীদের বিড়ম্বনা খুব বেশি।’
ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া একাধিক হকার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। পৌরবাজারের সামনে ফল বিক্রি করে সংসার চালান আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে তুলে দিয়েছিল। আবার পেটের দায়েই ফুটপাতে এসে বসেছেন।
একই কথা আরেক ফল ব্যবসায়ী জোবায়ের হোসেন ও মুসা মিয়ার। তাদের ভাষ্য, সরকার কোথাও ব্যবসা করার আলাদা ব্যবস্থা করে দিলে তারা ফুটপাতে বসতেন না। ফুটপাতে বসলে মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হয়, তা তারাও বুঝেন। কিন্তু তারা যাবেন কোথায়?
ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানান ইউএনও সাজ্জাত হোসেন। তিনি বলেন, আড়াইহাজার পৌরবাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। এতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটপাত দখলদার হকার ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে। কেউ নতুন করে দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় পথচ র ত দখল

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটপাত ও রাস্তা দখল, আগারগাঁও-উত্তরায় চারশ’ দোকান উচ্ছেদ  

রাজধানীর আগারগাঁও ও উত্তরায় ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে দুটি পৃথক অভিযানে প্রায় পাঁচশ’ অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
বুধবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীদুল ইসলাম।

অভিযানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের প্রথম গেট সংলগ্ন রাস্তার পশ্চিম দিকে ঢাকা-আরিচা সড়ক পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশের রাস্তা ও ফুটপাতের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। এর ফলে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়েছে। অভিযানে উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের হোটেল, অবৈধ টং দোকান এবং হকারদের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান।

এছাড়া রাজধানীর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাদেকুর রহমান এবং ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম। অভিযানে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর সুইস গেট থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত রানাভোলা সড়কের কাঁচা অংশ অবৈধভাবে গড়ে তোলা প্রায় দুই শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের ফলে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়েছে। অভিযানে উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের হোটেল, অবৈধ টং দোকান, বাঁশের আড়ত, নার্সারি, হকারদের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান।

উল্লেখ্য, ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নগরবাসীর সঙ্গে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন পহেলা বৈশাখের পর ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে ডিএনসিসি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এই অভিযান চলবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিরপুরে ফুটপাত দখলমুক্তে ডিএনসিসির টানা তিন দিনের অভিযান
  • রাজধানীতে ফুটপাত ও রাস্তা থেকে চারশ’ দোকান উচ্ছেদ
  • ফুটপাত ও রাস্তা দখল, আগারগাঁও-উত্তরায় চারশ’ দোকান উচ্ছেদ  
  • সন্তান জন্মের সময় ভেসে আসছিল নববর্ষের গান