উৎপাদন বন্ধ, সম্পত্তি নিলামে তবু ৬ দিনে শেয়ারদর বেড়েছে ৭৫%
Published: 23rd, February 2025 GMT
এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল কোম্পানির মালিকানা বদল হচ্ছে– এমন গুজব ছড়িয়ে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়াচ্ছে পুরোনো একটি কারসাজি চক্র। গত পাঁচ দিন সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে শেয়ারটি কেনাবেচা হয়েছে। মাত্র ছয় কর্মদিবসে শেয়ারটির দর ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। যতই শেয়ারটির দর বাড়ছে, ক্রয় আদেশের তুলনায় শেয়ার কেনাবেচা ততই কমছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারিও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের শেয়ার সর্বনিম্ন ৯ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়। গতকাল রোববার এ শেয়ারই ১৬ টাকা ৯০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রায় ১১ লাখ শেয়ার কেনাবেচা হলেও গতকাল তা ছিল ৯০ হাজারেরও কম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘মালিকানা বদল হবে’– এমন গুজব ছড়িয়ে এটিসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হচ্ছে। এটা কারসাজি ভিন্ন অন্য কিছু নয়।
শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এই দরবৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে আলোচিত শেয়ার কারসাজির হোতা আবুল খায়ের হিরো। আগের মতো নিজের অ্যাকাউন্টে নয়, প্রভাবশালী পরিবারের কয়েকজনসহ বহু সংখ্যক অনুসারীর মাধ্যমে শেয়ার কারসাজির নতুন কৌশল রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে আবুল খায়ের হিরোকে ফোন করা হলেও, সাড়া দেননি তিনি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট সব কোম্পানি সংকটাবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে। এর মধ্যে এ কোম্পানির টানা অস্বাভাবিক হারে শেয়ার দরবৃদ্ধি বেশ আলোচনার ঝড় তুলেছে শেয়ারবাজারে। এ দর বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তথ্য চাইলে কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কোনো কারণ তাদের জানা নেই।
উৎপাদন বন্ধ এবং অনাদায়ী ঋণ আদায়ে কোম্পানির সম্পত্তি নিলামে তোলা হচ্ছে– বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর বিষয়ে ডিএসই জানতে চাইলে গত ৩০ ডিসেম্বর কোম্পানিটি জানায়, ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে এলসি খোলার নিষেধাজ্ঞার ফলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক ও কাঁচামালের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে। যার কারণে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা। অনাদায়ী ঋণ আদায়ে সম্পত্তি নিলামে তোলার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে অপর একটি চিঠিতে কোম্পানিটি গত ৮ জানুয়ারি জানায়, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বন্ধক রাখা সম্পদ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে, যা দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকটের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে।
এদিকে গতকাল এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল ছাড়াও আরও চার কোম্পানির শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে। এগুলো হলো– বারাকা পাওয়ার, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, পদ্মা লাইফ এবং সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র এস আলম
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠাল তুরস্ক
যুক্তরাজ্যের সরকারি সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (বিবিসি) সাংবাদিক মার্ক লোয়েনকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্ক। তিনি দেশটিতে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করছিলেন। লোয়েনকে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে বিবিসি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে।
বিবিসি বলেছে, লোয়েনকে বুধবার ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার করা হয়। চলমান বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে কয়েক দিন তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
এক বিবৃতিতে বিবিসি বলেছে, ‘আজ (বুধবার) সকালে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদক মার্ক লোয়েনকে ইস্তাম্বুল থেকে ফেরত পাঠিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। যে হোটেলে তিনি অবস্থান করছিলেন, সেখান থেকে আগের দিন তুলে এনে তাঁকে ১৭ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে মার্ক লোয়েন তুরস্কে অবস্থান করছিলেন। আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হওয়ায় তাঁকে তুরস্ক ছাড়তে বলা হয়।’
দেশজুড়ে চলা সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ১ হাজার ৮৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তুরস্কের ১১ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
আরও পড়ুনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই একরেম ইমামোগলু২৬ মার্চ ২০২৫রোববার রাতে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা বাড়ে। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারীকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এর আগে ২০ মার্চ বিক্ষোভ দমনে পিপার স্প্রে ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
ইমামোগলুকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয়। তাঁকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। গ্রেপ্তারের পর ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।