Samakal:
2025-04-16@20:41:51 GMT

কীভাবে বেছে নেব পড়ার বিষয়

Published: 23rd, February 2025 GMT

কীভাবে বেছে নেব পড়ার বিষয়

পছন্দের বিষয়ে কেন পড়তে চাই। তবে কি সবসময় সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি কি সবসময় মিলে যায়। অনেক সময় হয়ে ওঠে না। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার স্বপ্ন থাকে সব পড়ুয়ারই। বয়সটা কম আর ইচ্ছা অনেক। স্বপ্নও আকাশছোঁয়া। তবে এর মধ্যেও থাকে নানা সমস্যা। উচ্চ মাধ্যমিক পেরিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছেন। সারাজীবন যে যোগ্যতা আপনাকে বিশ্বে পরিচয় করাতে জোরালো ভূমিকা রাখবে, সেই বিষয়ে খুবই সাবধানতার সঙ্গে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কেউ পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না, তো কেউ নিজের ভালো লাগার বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পায় না। আবার কোথাও থাকে মা-বাবার স্বপ্নভঙ্গের চাপ। তাই বলে কি থেমে যাবে স্বপ্নের ওড়ান, মোটেই নয়। এখান থেকেই শুরুটা করতে হবে নতুন করে। আবার অনেকেই পেয়ে যাই পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ। তাহলে তো আর কথাই নেই। পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে না পারার সমস্যাটা নতুন নয়। আবার ভালো লাগার বিষয় হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণাটাও ভয়াবহ। যে ছেলেটি সারাজীবন ডাক্তার অথবা প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নে মশগুল, তাকে যদি সাধারণ কোনো কোর্সে ভর্তি হতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তার পড়াশোনার ইচ্ছাটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যাই শেষ কথা নয়; তা থেকে উত্তরণের পথ তো খুঁজতে হবে নিজেদেরই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময় কোন বিষয়ে পড়ব– এ নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এই ‘যুদ্ধের’ অনিবার্য পরিণতি হিসেবে অনেকের মধ্যেই জন্ম নেয় হতাশা। শিক্ষার্থীর পছন্দ আর অভিভাবকের পছন্দ প্রায়ই এক হয় না। পছন্দের বিষয়ে সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে নিজেদের মেধার অপচয় করে। মনে রাখতে হবে প্রতিটি বিষয়েরই কোনো না কোনো বিশেষত্ব আছে, আছে নতুন করে জানা এবং তার সঠিক ও সময়োপযোগী বাস্তবায়নের সুযোগ। প্রশ্ন হলো, কোন বিষয়টা আপনাকে আলোড়িত করে, কোনটা আপনার ভেতরে আগ্রহ জাগায়। বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ভাষা, শিল্পকলা, সাহিত্য, ব্যবসা– যাই হোক না কেন। ভালো লাগার সঙ্গে মিলিয়ে আপনি নিশ্চয়ই কোনো না কোনো বিষয়ের খোঁজ পাবেন। প্রথম কাজই হলো, আপনার অনুপ্রেরণার জায়গাটা খুঁজে বের করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা শুধু বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করে না, বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় ক্ষেত্র। এখানে তারা সামাজিক আচরণ, যোগাযোগের ক্ষমতা, ভাষাগত দক্ষতা, সময় ব্যবস্থাপনা, দলবদ্ধভাবে কাজ করতে পারা, উপস্থাপন করতে পারা এবং নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি ‘সফট স্কিল’ আয়ত্ত করার সুযোগ পায়। বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা বাণিজ্য– যে বিভাগেই পড়ি না কেন, সফট স্কিল অর্জনের সঙ্গে আদতে পড়ার বিষয়ের খুব একটা সম্পর্ক নেই। ভবিষ্যতে সফল পেশাজীবন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই দক্ষতাগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে না পারলেও যেখান থেকে এই দক্ষতাগুলো ভালোভাবে অর্জন করা যাবে, বিষয় বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেটিও বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।  আপনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় যেসব বিষয়ের নাম আছে, খোঁজ নিয়ে দেখুন, এ বিষয়গুলোতে উচ্চশিক্ষায় কী কী সুযোগ আছে? অনেক সময় এমন হয়, দেখবেন বাংলাদেশে একটা বিষয় নতুন। অথচ হার্ভার্ড, এমআইটি, অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওই বিষয়গুলো খুব গুরুত্ব সহকারে পড়ানো হচ্ছে। বৈশ্বিক চিত্রটা দেখলে আপনি তুলনা করতে পারবেন। পরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতেও সহায়ক হবে। যে বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ হচ্ছে, তা নিয়ে মাথা ঘামানো জরুরি। ইন্টারনেটে সেই নতুন বিষয় নিয়ে ভালো করে খোঁজ করলে নানা সুযোগ সামনে আসবে। ফলে বিষয়টি সম্পর্কেও সম্যক ধারণা হবে। একই সঙ্গে তা নিয়ে ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার পথ চোখের সামনে খুলে যাবে। সব ধাপ পেরিয়ে এসে এবার বিষয় নির্বাচন করুন। যখন আপনি আপনার গন্তব্য জেনে গেছেন, তখন আর পেছনে তাকানোর উপায় নেই। সমস্ত আবেগ, একাগ্রতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। নিজের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকুন এবং পছন্দের বিষয়ে সেরা হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। যদি উদ্ভাবন বা গবেষণায় আপনার ঝোঁক থাকে, তাহলে যেসব বিষয়ে সুযোগ আছে, যেমন জেনেটিকস ও বায়োটেকনোলজি, ফার্মাসি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন– এ বিষয়গুলো বেছে নিন। আবার তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহ থাকলে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্সের মতো বিষয়গুলো পড়তে পারেন। আপনি যদি কৌশল ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা অথবা বাজার বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে চান, তাহলে কৌশল ও নেতৃত্ব, মার্কেটিং কিংবা আন্তর্জাতিক ব্যবসা নিয়ে পড়ুন। রাজনীতি, সাহিত্য ও দর্শন নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে, তারা নির্দ্বিধায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, শিল্পকলা, ভাষা– এ ধরনের কোনো বিষয়ে ভর্তি হতে পারেন। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ষয়গ ল আপন র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল

মায়ের কাছে এ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী উপহার তার নাড়ী ছেড়া ধন, সন্তান। সেই সন্তানের জন্ম যদি হয় বিশেষ কোনো দিনে, সেটি যোগ করে বাড়তি আনন্দ। পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে বিথী-মেহেদী দম্পত্তির কোল আলো করে ফুটফুটে পুত্র সন্তানের আগমন বাঁধ ভাঙা আনন্দে ভাসিয়েছে তাদের।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার রাড়িপাড়া ইউনিয়নের দোবারিয়া এলাকার ফারহানা আক্তার বিথি ও মেহেদী সরদার দম্পত্তির জীবনে সোমবার সকালটা স্মরণীয় হয়ে রইল।

এর আগে রোববার সন্ধ্যার দিকে ব্যথা উঠলে বিথিকে প্রায় ১৫ কিলমিটার পথ ইজিবাইকে করে এনে বাগেরহাট শহরের সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার বিথি ও দোবারিয়া গ্রামের মেহেদী। বিথি গৃহিণী, মেহেদী করেন মাছের ব্যবসা।

নবজাতকের খালা ফারজানা আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা দুই বোন, কোনো ভাই নেই। আমাদের বাবা সবসময় নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেন আমাদের ঘরে আল্লাহ প্রথম ছেলে সন্তান দেন। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেছেন। আমারও প্রথম ছেলে সন্তান, আমার বোনেরও ছেলে সন্তান হয়েছে। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে বের হওয়ার পর নার্সের কোল থেকে বাচ্চাকে প্রথম আমার কোলেই দিয়েছিল। আমি ওর জন্য আগে থেকে কয়েক সেট ড্রেস কিনে রেখেছিলাম। সেখান থেকে একটি পরিয়েছি।’

শিশুটির নানি হালিমা বেগম বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের দিনে আমার ছোট মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে, এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে। আমি খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। হাসপাতালে সকলে খুবই আন্তরিক। বেলা ১১টায় হাসপাতালের ম্যানেজার এসে শিশুর মা ও আমাদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সবাই সুস্থ আছে। ডাক্তার বলেছে কোন ধরনের ঝুঁকি নেই মা ও শিশুর। আর আমাদের বেশি চিন্তাও নেই, কারণ জামাই বাবাজি মেয়ের সুস্থতা নিয়ে বেশ সচেতন। আশা করি অনাগত দিনগুলো নতুন অতিথির সাথে সবার হাসি-আনন্দে কাটবে।’

নবজাতকের গর্ভধারিনী বিথি বলেন, ‘মা হওয়া যে কত আনন্দের তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। সন্তানকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মা কেন বুকে আগলে রাখেন তা এখন বুঝতে পারছি।’

অপারেশন টেবিলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত খুব বেশি লেবার পেইন ছিল না বলে জানান বিথি। তিনি আরো বলেন, এতদিন স্থানীয়ভাবে রাড়িপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলেছেন। সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ১৫ এপ্রিল, অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার। কিন্তু শরীরে কিছুটা পানিশূন্যতা থাকায় একদিন আগে সিজার করা হয়।

বৈশাখের প্রথম দিনে সন্তান জন্ম নিবে বলে আশা করেছিলেন কিনা–এমন প্রশ্নে বিথি বলেন, ‘আল্ট্রাসোনাগ্রাম রিপোর্টে উল্লেখ ছিল বৈশাখের দ্বিতীয় দিনের কথা, তবে একদম নববর্ষের দিনে হবে তা আশা করিনি। নববর্ষের দিনে প্রথম সন্তান হওয়ায় দিনটি আরো স্মরণীয় হয়ে রইল’– যোগ করেন তিনি।

নববর্ষে এমন এক উপহার পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিথি। তাঁর স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে একজন আদর্শবান ডাক্তার হবে সন্তান। যাতে সমাজ ও দেশের সেবা করতে পারে সে। বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও অসহায় মানুষদের পাশে তাঁর সন্তান দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা এই মায়ের।

সূর্যের হাসি ক্লিনিকের মেডিকেল অফিসার রিফাত আরা শীলা বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে বিথিকে তাদের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। তিনি বলেন, ‘নববর্ষের এই শুভদিনে নতুন প্রাণের আগমন আমাদেরও আপ্লুত করেছে। মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের যত্ন নিচ্ছি। বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। এখনও পর্যন্ত মায়ের দুধ যথেষ্ট। যেহেতু স্বাস্থ্য ভালো আছে এবং উভয়েই সুস্থ আছে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা জরুরি।’ পরিবারটিও সে বিষয়ে সচেতন রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

শিশুর বাবা মেহেদী সরদার বলেন, ‘প্রথম বার বাবা হওয়ায় অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। তাও আবার ঐতিহ্যবাহী দিনে। তবে রোববার রাতে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রথম সন্তান তো, স্ত্রীর কিছুটা ব্যথা হচ্ছিল। বিশেষ করে ক্লিনিকে নিয়ে আসার পথটুকু ১৫ কিলোমিটার হলেও মনে হচ্ছিল হাজার মাইল। রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাবা হওয়া একটি স্বপ্নের মত জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন মনে হচ্ছে মা-বাবার সঙ্গে অনেক ভুল করেছি। বিভিন্ন সময় বুঝে-না বুঝে তাদের কষ্ট দিয়েছি। যখন নিজের সন্তানের মুখ দেখলাম, তখন মনে হলো বাবা-মায়ের প্রতি আরো যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।’ মেহেদী জানান, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই রক্ত দিতে আসা তাহিদুল ইসলাম নবজাতককে আজান শুনিয়েছেন। শিশুটির কোনো নাম এখনো ঠিক করা হয়নি বা আত্মীয়-স্বজন কেউ প্রস্তাব করেনি বলে জানান তিনি। বাড়ি ফিরে আকিকা করে নাম রাখা হবে। আপাতত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে। আর সকলের কাছে শিশু ও শিশুর মা যেন সবসময় সুস্থ থাকে সেই দোয়া কামনা করেছেন তিনি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল