দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটেছে
Published: 23rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে আর্থিক খাতের এমন সর্বনাশ আর কোথাও হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশে আমি কাজ করেছি আইন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে। হ্যাঁ, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনা হয়, মূল্যস্ফীতি হয়, কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যাংক লুট করার ঘটনা একমাত্র বাংলাদেশেই ঘটেছে। শুধু একটা ব্যাংক নয়, সাতটা ব্যাংক। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে, অর্থ পাচার করা হয়েছে।’
নীলফামারী সরকারি কলেজের হলরুমে আজ রোববার সকালে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এ কথাগুলো বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। সভায় কলেজের শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন গভর্নর।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আপনারা জানেন একটা পরিবারের হাতেই ছিল সাতটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যেটা আইনবহির্ভূত। আইন অনুযায়ী একটি পরিবারের হাতে একটি ব্যাংকের ১০ শতাংশ শেয়ার থাকতে পারে, তার বেশি নয়। তারপরও কীভাবে তারা এতগুলো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিল। ইসলামী ব্যাংকের ৮০ শতাংশের বেশি শেয়ার এস আলম পরিবারের হাতে। এত শেয়ার কীভাবে তারা নিল? এটা পুরোপুরিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা। তারা ব্যাংকের পলিটিক্যাল ডাইরেক্টর হয়েছিল।’
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এস আলম পরিবারকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘কীভাবে তারা সাতটা ব্যাংক নিল এবং সবগুলোকে দেউলিয়া করল, এটা কি আমরা জানতাম না? অবশ্যই জানতাম। কিন্তু কিছু করা সম্ভব হয়নি। কেন হয়নি সেটাও আমরা জানি। কারণ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যদি সুরক্ষা দেওয়া হয়, গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সুরক্ষা দেওয়া হয়, তাহলে কীভাবে সাধারণ মানুষ এটি প্রতিহত করবে। তাই এস আলমকে প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি।’
ব্যাংকগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘কিছু ব্যাংক আছে যেগুলো ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তার মধ্যে ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। ব্যাংকটির আমানতকারীরা চায় ব্যাংকটা টিকে থাকুক। তারা জানে ব্যাংকটা ভালো ছিল। এই যে ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্থা, এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ব্যাংক খাতে যদি আস্থাটা দিতে পারি তাহলে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে।’
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা হচ্ছে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগে। আমরা দেখেছি নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট সম্পদ নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার ফেরত আনা হয়েছে। এটা সম্ভব, তবে সময় লাগবে। বর্তমান সরকারের পক্ষে পাচারের অর্থ ফেরত আনার কাজটি শেষ করা সম্ভব হবে না। তবে প্রক্রিয়া শুরুটা করা যাবে। আমরা শুরু করে যাব, শেষটা করতে হবে পরবর্তী সরকারকে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে আ’লীগের দোসররা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের দোসরা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছে। তারা দেশ থেকে প্রচুর টাকা লুট করেছে। এখন সেই টাকা ব্যবহার করছে।
সোমবার মধ্যরাত ৩টার দিকে রাজধানীর বারিধারার ডিওএইচএসে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিস্তারিত আসছে....