রাঙামাটিতে ছাত্রলীগের টর্চার সেলের সন্ধান
Published: 23rd, February 2025 GMT
রাঙামাটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নির্যাতন কেন্দ্রের (টর্চার সেল) সন্ধান পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, চাঁদা না পেলে এই সেলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবে এসব ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আলম ডকইয়ার্ড এলাকায় ছয় তলা ভবনের নিচ তলায় একটি কক্ষে ছিল টর্চার সেল। ছাত্রলীগের নেতারা ব্যবসায়ী, শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও চাঁদা নিতেন। এসব অপকর্মের হোতা হচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ছাওয়াল উদ্দীন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি হাবিবুর রহমান বাপ্পীর নেতৃত্বে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন কায়সার, ছাত্রলীগ নেতা মো.
এদিকে রোববার সকালে আলম ডকইয়ার্ডে টর্চার সেলটি সরেজমিন দেখাতে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে যায় এলাকাবাসী। এ ছাড়া ওই এলাকায় নবনির্মিত কোন কোন ভবন থেকে অভিযুক্তরা চাঁদা নিয়েছেন ও মারধর করেছেন, সেসব স্থানও দেখায়। সরেজমিন টর্চার সেল তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। কক্ষের মধ্যে টেবিল, চেয়ার ও বেঞ্চ দেখা গেছে।
ভুক্তভোগী মো. জাহাঙ্গীর জানান, হাবিবুর রহমান বাপ্পী, তাঁর দুই ভাই ও আনোয়ার হোসেন কায়সার তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে টর্চার সেলে বেঁধে ফেলে রাখেন। রাত ২টার দিকে চার লাখ টাকা দেওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে দেন। রেজাউল করিম জানান, নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল হাতিয়ে নেন ছাত্রলীগের কায়সার ও রাকিব। পরে ৩০ হাজার টাকা চান ও হয়রানি করেন।
দোকানদার আব্দুল হক জানান, মালপত্র নষ্ট করে দেওয়াসহ হয়রানি করেছেন ছাত্রলীগের কায়সার ও রাকিব। এ কারণে দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
ঠিকাদার রবিউল হোসেন বাবলু জানান, গত বছরের এপ্রিলে কায়সার, বাপ্পীসহ ১০-১২ জন নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের মারধর ও টাকাপয়সা কেড়ে নেন। এসবের হোতা হচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ছাওয়াল উদ্দীন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করলেও বিচার পাননি।
আরেক ভুক্তভোগী বদীউল আলম জানান, ২০১৬ সালের দিকে আলম ডকইয়ার্ডে তাঁর বাড়ি নির্মাণের সময় বাপ্পী, কায়সার, রাকিবসহ অন্যরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা চান। টাকা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেন ও ৩ শতাংশ জায়গা দখল করেন।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান বাপ্পীসহ অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহম্মেদ বলেন, ‘দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে বিশেষ অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাঙামাটিতেও অভিযান চলছে। আসামি গ্রেপ্তার ও তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হচ্ছে।’ টর্চার সেলের বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিবর্তনে জোর আপত্তি বিএনপির
সংবিধান সংস্কারে বিএনপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিতভাবে যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিল, গতকাল কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় নানা যুক্তি-ব্যাখ্যায় দলটি সে অবস্থানই প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি পরিবর্তনে কমিশনের করা সুপারিশগুলোতে বিএনপির জোরালো আপত্তি রয়েছে।
তবে দলটির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, কিছু কিছু বিষয়ে কমিশনের যুক্তিসংগত সুপারিশ গ্রহণের জন্য বিবেচনা করছে বিএনপি। সে বিষয়গুলো দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়। তবে আলোচনা শেষ হয়নি। আগামী রোববার আবারও আলোচনা হবে বলে ঐকমত্য কমিশন ও বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গতকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব (প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, আইন বিভাগ) নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে