জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলি বিশপ বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন এবং কক্সবাজারের শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করবেন।

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘের দূত এই তথ্য প্রকাশ করেন। খবর বাসসের

বৈঠককালে তারা রোহিঙ্গা সংকট, এর সমাধানের নতুন উপায় অনুসন্ধান এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শিবিরে বসবাসরত দশ লক্ষেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য নতুন দাতাদের সম্পৃক্ত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, জাতিসংঘ চলতি বছরের শেষের দিকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। তিনি এ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুখ্য ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।’ মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এ সম্মেলনের সহযোগী হতে সম্মত হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট লাঘব করতে এবং মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা নতুন শরণার্থীদের আগমন রোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের সহায়তা কামনা করেন।

বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির নতুন দিকনির্দেশনার প্রেক্ষিতে অনিশ্চয়তার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও দাতা সংগ্রহের বিষয়েও আলোচনা করা হয়।

বিশপ রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ব্যাপভাবে সফল করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সম্মেলনটি দশকব্যাপী সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনে যত চ্যালেঞ্জ

লাল রঙের মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তাই দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গল গ্রহকে প্রাণধারণের উপযোগী করতে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু বিজ্ঞানীরাই নন, মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য কাজ করছেন স্পেসএক্স, টেসলাসহ খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্কও। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে বসতি গড়ার জন্য ১০ লাখ মানুষকে নিয়ে যেতে চান তিনি। তবে মানুষ কি আদৌ মঙ্গল গ্রহের প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১০০ গুণ পাতলা এবং ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই–অক্সাইডে পরিপূর্ণ। অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকায় শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য উপযুক্ত নয়। তাই মঙ্গল গ্রহে মানুষের টিকে থাকার জন্য কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। শুধু তা–ই নয়, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল মানুষকে মহাজাগতিক ও সৌর বিকিরণ থেকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে পারবে না। এর ফলে মানুষের শরীরে ক্যানসারের পাশাপাশি স্নায়বিক ক্ষতি ও অন্যান্য মারাত্মক রোগ হতে পারে।

মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের আরেকটি ঝুঁকি হচ্ছে তাপমাত্রা। মঙ্গল গ্রহের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৬৫ থেকে মাইনাস ১২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মানুষের জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত কঠিন। তাই সেখানে বসবাস করতে হলে উষ্ণ আবাসস্থল ও বিশেষ পোশাকের প্রয়োজন হবে। আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মঙ্গল গ্রহের ধূলিঝড়। সেখানে ধূলিঝড় কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। ধূলিঝড়ের সময় পুরো গ্রহ ধুলায় ঢেকে যায়। এর ফলে সৌর প্যানেল বসানো হলে তা ধূলিঝড়ের সময় অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

মঙ্গল গ্রহে তরল পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই মানব বসতির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। শুধু তা–ই নয়, খাদ্য উৎপাদন করতে হবে মানুষকে, যা মঙ্গল গ্রহের প্রতিকূল পরিবেশে কঠিন হতে পারে। এ ছাড়া মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে মানুষের হাড় এবং পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

সূত্র: রয়েল মিউজিয়াম গ্রিনউইচ ও প্ল্যানেটারি সোসাইটি

সম্পর্কিত নিবন্ধ