পাবিপ্রবিতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তেজনা, খেলা স্থগিত
Published: 23rd, February 2025 GMT
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শহীদ জাহিদ আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের অভিযোগে খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খেলা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অর্থনীতি বিভাগ বনাম ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের মধ্যকার বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনাল ম্যাচে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নির্ধারিত ১০ ওভারে তারা অর্থনীতি বিভাগকে ১০৬ রানের টার্গেট দিলে খেলায় বৃষ্টি হানা দেয়। ফলে রবিবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের বাকী অংশ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দুপুর তিনটায় ১০৬ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে অর্থনীতি বিভাগ। ছন্দহীন খেলায় ৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান করে তারা। শেষ ওভারে অর্থনীতি বিভাগের প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ২৭ রান, হাতে ছিল ৩ উইকেট। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধিনায়ক সিজান বল হাতে তুলে দেন বাঁহাতি বোলার সজীবের হাতে। অর্থনীতি বিভাগের স্টাইকিংয়ে তখন ব্যাটসম্যান মনিরুল, নন স্টাইকিংয়ে আসাদুল।
স্টাইকিংয়ে থেকে মনিরুল সজীবের বলে পরপর তিনটি ছক্কা মারেন। এরপর এক রান নিয়ে আসাদুলকে স্টাইক দেন। আসাদুল আবার এক রান নিয়ে মনিরুলকে স্টাইক দেন। ফলে শেষ বলে প্রয়োজন হয় ৭ রান।
শেষ বলে করার জন্য বোলার সজীব দৌড় শুরু করেন। একই সময়ে ডিপ মিড উইকেট থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধিনায়ক সিজান ৩০ গজের মধ্যে দৌড়ে ঢুকে বোলার সজীবকে থামাতে এগিয়ে যান। কিন্তু অধিনায়ক সিজান সজীবকে থামানোর আগেই সজীব বল করে দেয় এবং ব্যাটিং মনিরুল কাভার অঞ্চল দিয়ে গড়িয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন। বল সীমানা পাড় হওয়ার পর আম্পায়ার চারের ঘোষণা দিয়ে দেন।
এ সময় বলটি নো দাবি করে অর্থনীতি বিভাগের খেলোয়াড় ও দর্শকরা আম্পায়ারের দিকে তেড়ে যান এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দর্শকরা জয়ের আনন্দে পাঠে নেমে পড়েন। এরপর দুই বিভাগের দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। মাঠে উপস্থিত শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও উত্তেজনা চলতে থাকে।
এরপর আয়োজক কমিটির মধ্যস্থতায় দুইদলের অধিনায়ক এবং শিক্ষকদের মাঠে ডাকেন দায়িত্বরত আম্পায়ারা। তারা জানান, শেষ বলে যে অধিনায়ক সিজান যে ডিপ মিড উইকেট থেকে দৌড়ে বোলারকে থামাতে আসেন, তারা এটা দেখতে পাননি। তাদের নজর বল আর ব্যাটসম্যানের দিকে ছিল। মাঠে কি হচ্ছে এটা তারা দেখননি।
পরে ঝামেলা শুরু হওয়ার পর তারা খেলার লাইভ দেখে নিশ্চিত হন অধিনায়ক সিজান ডিপ মিড উইকেট থেকে দৌড়ে এসে বোলারকে থামাতে চেষ্টা করেন। এজন্য তারা দুইজন দুই দলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এরপর তারা শেষের বলটিকে ডেঢথ ঘোষণা করে দুইদলকে মাঠে নামার অনুরোধ করেন। তবে অর্থনীতি বিভাগ আম্পায়ারের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি হয়নি। অর্থনীতি বিভাগের এই সিদ্ধান্তের ফলে শেষ পর্যন্ত বল মাঠে গড়ায়নি।
অর্থনীতি বিভাগের দাবি, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোলার বল শুরু করা থেকে বলটি মাটিতে ফেলা পর্যন্ত কোন খেলোয়ার তার জায়গা পরিবর্তন করতে পারবেনা। যদি কোন খেলোয়ার তার জায়গা পরিবর্তন করেন তাহলে বলটি নো হবে এবং পাঁচ রান পেনাল্টি হবে। কিন্তু ইইই এর অধিনায়ক বলারকে থামাতে পিচের মধ্যেই ঢুকে পরে। সে হিসেবে শেষের বলটি নো হয়েছে এবং ব্যাটসম্যান চার মেরেছেন। সে হিসেবে শেষ বলে ছয় রান হয় এবং পেনাল্টি পাঁচ রান হলে শেষ বলে মোট রান এগারো রান হয়। ফলে তারা ম্যাচে জয়লাভ করেন।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দাবি, খেলার সব সিদ্ধান্ত আম্পায়ারের কাছে। আম্পায়ার শেষ বলটি চার ঘোষণা করেছেন। আম্পায়ার বলটি চার ঘোষণার পরেই খেলার ফলাফল চূড়ান্ত হয়ে যায় এবং তারা ম্যাচে জয়লাভ করেন।
এদিকে, এ বিষয়ে সন্ধ্যার পরেও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি খেলা টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটি। তারা জানিয়েছেন, দুই একের মধ্যে দুই বিভাগের সঙ্গে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এ বিষয়ে টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক ড.
ঢাকা/আতিক/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম প য় র র মন র ল শ ষ বল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুর ওপর দুর্ঘটনায় যানচলাচল ব্যাহত, পরে স্বাভাবিক
যমুনা সেতুর ওপর দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় উত্তরাঞ্চল-ঢাকাগামী যান চলাচল ব্যাহত হয়। সেতুর ওপর দুর্ঘটনার পর পরই বেশ কিছু যানবাহন পেছনে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এরপর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা এবং সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত সেতুর উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী উত্তর দিকের লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। খুলে দেওয়ার পরও ২ ঘণ্টা পর অবস্থা স্বাভাবিক হয়। এর আগে সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পরে পুলিশ।
যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর সাইট ম্যানেজার ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জানান, চালকরা হুড়াহুড়ি করে যেতে উত্তর লেনে ভোরে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলগামী হানিফ পরিবহনের সঙ্গে আরেকটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। পরপরই আরেকটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে পিকআপের ধাক্কা লাগে। এরপর আরও কয়েকটি যানবাহনের ধাক্কা লাগে।
এতে উত্তর লেন দিয়ে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে সেতুর ওপর যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। পরে সকাল থেকে যানবাহন চলাচল খুলে দেওয়া হলো ১০টার পর স্বাভাবিক হয়। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনারুল ইসলাম জানান, ‘সেতুর ওপরে দুর্ঘটনার কারণে পরপর দুই দফা উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে লেনটি খুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলগামী ৪৫ হাজার ৪৮টি (ছোট, বড়, মাঝারি, হালকা ও ভারী ) যান সেতু পারাপার হয়েছে। যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা।
সিরাজগঞ্জ রোড হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ জানান, সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী লেনটি দুবার বন্ধ রাখায় ভোর রাত থেকে অবস্থা খুব খারাপ ছিল। যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পেরেশানির মধ্যে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টার পর লেন খুলে দেওয়ায় অবস্থা স্বাভাবিক হয়।