পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা কূটনীতিক হিসেবে চাকরি করাকালীন কোনো এক বিদেশি কূটনীতিক তার শারিরীক গঠন ও চেহারার আকৃতি দেখে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে নয়, বরং ভিন্ন দেশের নাগরিক হিসাবে আখ্যায়িত করতে চাইলে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা তাতে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “আমি নিজেকে বাংলাদেশি হিসাবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি।”

রবিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ভিন্টেজ কনভেনশন হলে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাতৃভাষার চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.

) সুপ্রদীপ চাকমা এমন স্মৃতিচারণ করেন।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “আমি ঐ কূটনীতিকের এমন প্রশ্নের আলোকে আরো বলেছিলাম, যদি আমাদের জীবনে ১৯৫২ ও ১৯৭১ না আসতো তাহলে আমি এখন তোমাদের কেরানি হয়ে থাকতাম। স্বাধীনতা যুদ্ধ হওয়ার কারণেই আজ আমি তোমাদের মতো কূটনীতিক হতে পেরেছি। তাই আমি ধন্য যে আমি বাংলাদেশি।” 

উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমাদের দায়বদ্ধতার পাশাপাশি সুন্দর মন থাকতে হবে। সবারই নিজের এলাকার প্রতি মায়া থাকতে হবে। সবাইকে আঞ্চলিক প্রীতির মুহূর্তগুলো স্মরণে রাখতে হবে। তবেই আমাদের স্বদেশ প্রেমবোধের পূর্ণতা পাবে।”

সুপ্রদীপ চাকমা আরো বলেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা প্রায়ই বলেন লোক দেখানো কোনো কিছু করে নয় বরং আমাদেরকে মনেপ্রাণে ভালোবাসা, সৌন্দর্য, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যই কাজ করে যাচ্ছি।”

উপদেষ্টা মাতৃভাষার চলচ্চিত্র নিয়ে সুন্দর এমন উৎসব এর আয়োজন করার জন্য এর আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এ উৎসবে থাকছে সর্বমোট ১৫টি চলচ্চিত্র। এর মধ্যে চাকমা, মারমা, ম্রো বম, গারো ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র রয়েছে। এ চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত হয়েছে ম্রো ভাষার চলচ্চিত্র ‘ক্লোবং ম্লা’ বাংলায় নামকরণ করা হয়েছে গিরিকুসুম। থাকছে খেয়াং ভাষায় দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত চলচ্চিত্র ‘খেতসু’ বা প্রেয়সী। বম ভাষায় দেশে প্রথম বারের মতো নির্মিত চলচ্চিত্র মুনখাত দুত হেন যার বাংলা নাম বন্ধন। নতুন এই তিনটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন ডা. মং উষা থোয়াই এবং পরিচালনা করেছেন প্রদীপ ঘোষ।

বাংলা ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের নির্মিত ‘রক্তকরবীর খোঁজে নন্দিনী’। এ চলচ্চিত্রে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেছে অবনী মিঠু। রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পোস্ট মাস্টার গল্প অবলম্বনে নূর আবসার প্রযোজিত ও শাঁওলি মজুমদার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ঘরে ফেরা’। মৃত্তিকা রাশেদ পরিচালিত কালারস অব হোপ। উৎসবে থাকছে নজমুল মুহাম্মদ পরিচালিত নেকলেস, এস এম শাফিনুর আলম পরিচালিত  আচিক ঐক্য, রাশেদুল ইসলাম রনি পরিচালিত নো ল্যান্ড’স টক, মোবারক হোসেন পরিচালিত  পৈতৃক ভিটা, ফিদেল দ্রং পরিচালিত ছাতা, পার্থ ফোলিয়া পরিচালিত আরো কিছু দিন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, এ বি এম শামসুল হুদা, ডা. দিবালোক সিংহ, ডা. মুশতাক হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলার চিকিৎসক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক ডা. মং উষা থোয়াই। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় শেষ হবে উৎসব।

ঢাকা/হাসান/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ম ত চলচ চ ত র পর চ ল ত ক টন ত ক উপদ ষ ট স ন দর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্য আবুধাবী শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী উৎসব ও বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে জাঁকজমকভাবে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈশাখী উৎসব ১৪৩২ উদযাপন করা হয়।

১৯ এপ্রিল (শনিবার) দিনব্যাপী আয়োজনে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রবাসীরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্কুলের অডিটোরিয়াম ছাড়াও পুরো মাঠ জুড়ে প্রবাসীদের আনন্দ উল্লাস ছিল দেখার মতো।

স্টলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘দূতাবাস কর্নার’, বাংলাদেশ সমিতি আবুধাবি, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান আবুধাবি, ইনডেক্স মানি এক্সচেঞ্জ, আহলিয়া এক্সচেঞ্জ সহ নানান সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিটি স্টল সাজানো হয় দেশীয় সাজে। উৎসব ঘিরে নানান ধরনের পিঠাপুলি, দেশীয় আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ছিল দেশীয় স্টলগুলো। দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন নাচ ও গান। সকাল ১০টা হতেই মেলায় জমে মানুষের ভিড়। ফিতা কেটে এই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদের সভাপতিত্বে ও মিশন উপ প্রধান শাহানাজ আক্তার রানুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বৈশাখী উৎসবে দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্মকর্তা, নিউজিল্যান্ড, মালেশিয়া, আর্মেনিয়া, গাম্বিয়া, বসনিয়াসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত পত্নী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়াও স্কুল শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, সাধারণ প্রবাসীরা উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে, মেলা দেখতে অনেকে আসেন প্রবাসে থাকা পরিবারের নিয়েও।

আয়োজন শেষে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদ বর্ষবরণের আয়োজনকে সকলের সহযোগিতায় সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শাহ জাহান/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর
  • ভেড়াডহর গ্রামে উরিগানের আসরে
  • এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে
  • প্রথম আলোর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব আগামী ১৫ ও ১৬ মে
  • পয়লা বৈশাখের পর বৈশাখী ভাতা পেলেন মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা
  • কানাডার টরেন্টোতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব
  • আরাকান আর্মির বাংলাদেশের আকাশীমা লংঘ‌নের প্রতিবাদ
  • অনুপ্রবেশ করে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে: জামায়াত
  • মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি মেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব
  • আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন