রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ফ্লাট। বড় রান হবে। বাংলাদেশ দলের হেড কোচ ফিল সিমন্সের আগে সংবাদ সম্মেলনে কথাটা বলে গেছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিশেল স্যান্টনার। ২০০ রানের নয় ৩০০’র বেশি রানের উইকেট সেটাও জানিয়ে দিয়ে গেছেন কিউই স্পিন অলরাউন্ডার।

সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের কোচও জানিয়েছেন, ৩০০’র বেশি রানের চিন্তা করছেন তারা। শুরুতে ব্যাট করলে তিনশ’ প্লাস রান করতে হবে। রান তাড়া করতে নামলেও তিনশ’ প্লাস রান লক্ষ্য ধরে রাখতে হবে।

রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে সিমন্স বলেন, ‘এটা বড় রানের মাঠ। আমরা বড় রান করার কথা চিন্তা করছি। ৩০০ প্লাস রানের কথা ভাবছি।’ দুবাইতে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর স্বভাবতই প্রশ্ন এসেছে, বাংলাদেশ কি বড় রান করতে পারবে? জবাবে সিমন্স জানিয়েছেন, তার শিষ্যদের সেই সামর্থ্য আছে।

বিগত সিরিজের কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি, ‘আমরা গত ৫ ম্যাচে কয়েকবার তিনশ’ রান করেছি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ওই সামর্থ্য আছে। গত ম্যাচে আমরা ভালো শুরু করিনি। ভালো শুরু পেলে বড় রান করতে পারবো।’

পাল্টা প্রশ্নের ওখানেই শেষ নয়। তিনশ’ রান করেও তো জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সিমন্সের এবার কাটা কাটা শব্দে উত্তর, ‘কারণ প্রতিপক্ষও তিনশ’ প্লাস রান করেছে। সেজন্য আমরা হেরেছি। এটাই ক্রিকেট। আপনাকে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে হবে এবং বোলিংয়ে তাদের আটকে রাখতে হবে।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ও আইসিসির টুর্নামেন্টের রেকর্ড প্রসঙ্গে সিমন্স জানান, এটা রেকর্ড স্মরণ করার কোন মঞ্চ নয়। আগামীকাল একটা ম্যাচ হবে। সেখানে ভালো করার ম্যাচ। তারা কেমন দল টুর্নামেন্টে তারা কেমন করছে তার ওপর নির্ভর করবে। ওই টুর্নামেন্টেও তো অসাধারণ খেলছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে সিমন্স জানান, কাল যেন সেটা তারা না পারে সেই চেষ্টা করবেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল স মন স র ন কর বড় র ন স মন স

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ