দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর পর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আর এই নির্বাচনে প্রথমবার বিধায়ক পদে জয় পেয়েই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দলটির নারী নেত্রী রেখা গুপ্ত।

এবারে দিল্লির শালিমার বাগ আসন থেকে বিধায়ক পদে জয়ী হন তিনি। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে ২৯ হাজার ৫৯৫ ভোটে জেতেন রেখা। আম আদমি পার্টির (আপ) বন্দনা কুমারীকে হারিয়ে দেন ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা এই নেত্রী।

সম্প্রতি রেখাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করান দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আরও ছয়জন বিধায়ক মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।  

আরো পড়ুন:

কোহলির ফিফটি, দেড়শ পেরিয়ে ভারত

মহারণের আগে সব বিভাগেই পিছিয়ে ‘আনপ্রেডিকটেবল’ পাকিস্তান

কিন্তু বিজেপিশাসিত এই রাজ্যে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধি থাকলেও একজনও মুসলিম মন্ত্রী নেই। যদিও তথ্য বলছে, দিল্লিতে সংখ্যালঘু মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১২ শতাংশ।

এর আগে জাতীয় কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি (আপ) সরকারের মন্ত্রিসভায় মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও এবার বিজেপি শাসনামলে মুসলিমশূন্য মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে।

মূলত, যে কোনো ইস্যুতেই লাগাতার সংখ্যালঘু উন্নয়নের বার্তা দেয় বিজেপি। কিন্তু চলতি বছরে শেষ হওয়া দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনে সেই বিজেপির প্রার্থী তালিকাতেই ছিল না কোনো মুসলিম মুখ।  

এমনকি দিল্লির যেসব বিধানসভা কেন্দ্র সংখ্যালঘু মুসলিম প্রভাবিত এলাকা হিসেবেই পরিচিত, অর্থাৎ তুঘলকাবাদ, সিলমপুর, ওয়াজিরপুর, মুস্তাফাবাদ, বাবরপুরের মতো দিল্লির বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসন।  

সেইসব আসনে কোনো মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করায়নি বিজেপি। ফলে স্বভাবতই জয়ী হওয়ারও কোনো প্রশ্নই নেই। ফলে এবারে দিল্লির সরকারে নেই কোনো মুসলিম প্রতিনিধি।

১৯৯৩ সালে প্রথমবার দিল্লিতে ক্ষমতা এসেছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মদন লাল খুরানা। সেবারও সেই মন্ত্রিসভায় কোনো মুসলিম সদস্য ছিলেন না। যদিও সেবার কোনো মুসলিম প্রার্থী ওই নির্বাচনে জয় পাননি।

এরপর ১৯৯৮ সালে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতায় আসে জাতীয় কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শীলা দীক্ষিত।  

তার শাসনামলে দিল্লি মন্ত্রিসভায় মুসলিম মন্ত্রী ছিলেন পারভেজ হাশমি। পরিবহন ও পাবলিক ওয়ার্কসের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

২০০৩ সালে দিল্লিতে দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হন শীলা দীক্ষিত। ওই মন্ত্রিসভায় বালিমারান কেন্দ্র থেকে জয়ী কংগ্রেস বিধায়ক হারুন ইউসুফকে জায়গা দেওয়া হয়।

২০০৮ সালে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস এবং তখনও শীলা দীক্ষিতের মন্ত্রিসভায় মুসলিম মুখ হিসেবে মন্ত্রী করা হয় হারুন ইউসুফকে। এরপর অবসান ঘটে কংগ্রেস জামানার।

২০১৩ সালে দিল্লিতে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় আসে আপ। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সেই সরকারে কোনো মুসলিম মন্ত্রী ছিল না। যদিও সেই সরকারের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৪৯ দিন।  

কিন্তু ২০১৫ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আপ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রী করা হয় আসিম আহমেদ খানকে। খাদ্য সরবরাহ, পরিবেশ এবং সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী করা হয় তাকে। কিন্তু পরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে বরখাস্ত করা হয়, তার জায়গায় মন্ত্রী করা হয় ইমরান হোসেনকে।

২০২০ সালে দিল্লিতে ফের আপ ক্ষমতায় আসার পর কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভায় জায়গা পান ইমরান হোসেন এবং শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ব সামলান।

এবারে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে মোট ৭০ আসনের মধ্যে বিজেপি জয় পায় ৪৮ আসনে। বাকি ২২ আসনে জয় পায় আম আদমি পার্টি।

ঢাকা/সুচরিতা/এনএইচ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র র মন ত র ব ধ নসভ ক ষমত য সরক র শপথ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া একটি লেমুর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া তিনটি লেমুরের মধ্যে একটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও বন বিভাগের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে লেমুরটি উদ্ধার করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এ ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. দেলোয়ার হোসেন (২২)। তাঁর বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার চরখারচর সাতানীপাড়া গ্রামে। এর আগে লেমুর চুরির ঘটনায় মো. জহিরুল ইসলাম ও নিপেন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাঁদের একজন পার্কের কর্মী ও অন্যজন স্থানীয় বাসিন্দা।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক আজ শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সাফারি পার্ক থেকে লেমুর চুরির ঘটনায় জামালপুরে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে ঢাকার শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে একটি পুরুষ লেমুর উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, প্রাণীটি উদ্ধার করে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। অন্য প্রাণীগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও বন বিভাগ সূত্র জানায়, লেমুর চুরির ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলা হয়। এরপর বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাণী উদ্ধারে কাজ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরের সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের দড়িহামিপুর আকন্দ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার শ্যামবাজার মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্জন স্থান থেকে খাঁচায় বন্দী অবস্থায় একটি লেমুর উদ্ধার করা হয়।

গত ২৪ মার্চ সকালে লেমুরের খাঁচা খালি দেখতে পান সাফারি পার্কের কর্মীরা। সেখানে তিনটি লেমুর ছিল। পরে লেমুরের খাঁচার পেছনের দিকে লোহার জালের প্রায় তিন বর্গফুট কাটা দেখা যায়। পার্ক কর্তৃপক্ষের ধারণা, ২৩ মার্চ রাতের যেকোনো সময় লোহার জাল কেটে প্রাণী তিনটিকে চুরি করা হয়। এ ঘটনায় ২৪ মার্চ শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দেয় পার্ক কর্তৃপক্ষ। পরে ৭ এপ্রিল এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এরপর ৯ এপ্রিল পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন, চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে সরাসরি ভোট না করার সুপারিশ
  • গাঁজা সেবন করে ধর্ষণের পরিকল্পনা, আদালতে স্বীকারোক্তি
  • পাবনার শিশুটিকে হত্যা ও মুখ ঝলসে দেওয়ার আগে ধর্ষণ করা হয়: পুলিশ
  • যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশ
  • গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি সেনা নিহত
  • গাজীপুরে সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া একটি লেমুর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১
  • কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে যুক্ত হলো সি-ট্রাক
  • কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলক চালু হলো সি-ট্রাক
  • কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে সি-ট্রাক চলাচল শুরু
  • প্রথমবার অন্তরঙ্গ দৃশ্যে, শ্রাবন্তী বললেন, ‘আমি আপ্লুত’