টিসিবির কার্ড নিয়ে রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে একপক্ষ রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে প্রায় এক ঘণ্টা আটকা পড়ে শত শত গাড়ি। পরে সেনা সদস্যরা এসে অবরোধ তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বিড়ালদহ মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানান, পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার সমর্থক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামে কাছে টিসিবি কার্ডের ভাগ চান উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এন্তাজুল হক বাবুর সমর্থক যুবদল নেতা মিঠুন। এর জের ধরে গতকাল রফিক মেম্বারের সঙ্গে মিঠুনের মারামারি হয়। এতে রফিক মেম্বার, মিঠুন, আহসানসহ পাঁচজন আহত হন। স্থানীয়রা রফিক ও মিঠুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এদিকে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জুম্মার সমর্থকরা। শুরু হয় দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় রফিক মেম্বারের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে তাঁর সমর্থকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে উভয় পাশে দুই কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় সেনা সদস্যরা এলে অবরোধকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন। 

বিএনপি নেতা জুম্মা বলেন, ‘তারা রফিক মেম্বারকে মারধর করেছে। আওয়ামী লীগ আমলে এক জ্বালা ছিল। এখন অনেক জ্বালা। এরা চাঁদাবাজি করবে, মাদক ব্যবসা করবে– কিছুই বলা যাবে না। রফিক মেম্বার মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। আইসিইউতে রেখে আসলাম।’ পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এন্তাজুল হক বাবু বলেন, দুপক্ষই আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থক। বিষয়টি আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। পুঠিয়া থানার ওসি কবীর হোসেন জানান, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র অবর ধ উপজ ল সদস য র সমর

এছাড়াও পড়ুন:

অভিযানের পরপরই ফের ফুটপাতে বসেন হকার

‘অফিস থেকে ফেরার পথে ফুটপাত ধরে বাসায় ফিরি। কিন্তু পৌরবাজারের পুরো এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে।’ গতকাল রোববার দুপুরে ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমান উল্লাহ। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মতো হাজারো মানুষকে প্রতিদিন এই 
সড়কের পাশের ফুটপাত দিয়ে চলার সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আমান উল্লাহ বলছিলেন, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে হাঁটার জায়গাও থাকে না। বছরের পর বছর এই ভোগান্তি চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্থায়ী কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
পৌরবাজারের সামনের ফুটপাতটি পথচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, না-কি হকারদের জন্য– তা বোঝাই মুশকিল। ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী হকারদের সাজানো দোকানে পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও পৌর প্রশাসক বলছেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।
আড়াইহাজার পৌরসভার সূত্র জানায়, রমজান সামনে রেখে যানজট নিরসনে ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেনের নেতৃত্বে এদিন অর্ধশতাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের একদিনের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় প্রশাসন। 
এর আগে ফুটপাতে হকার বসতে নিষেধ করে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মানায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ করে যাওয়ার পরপরই ফুটপাত ও সড়ক আবারও চলে যায় হকারদের দখলে। রোববার দুপুরে দেখা গেছে, নতুন করে আড়াইহাজার উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ডাকবাংলো পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্ধশতাধিক দোকান বসেছে। এতে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
একটি বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল রাব্বি বলেন, ‘দেখছেন, কীভাবে যেতে হচ্ছে। ফুটপাতে আমাদের চলাচল করা খুবই কঠিন। হকার-ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতাদের যে ভিড়, এর মধ্যে হাঁটা সত্যিই কঠিন। একজন পথচারী হিসেবে চাই, অবশ্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করা হোক।’
রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় অনেক মানুষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছা করেই ধাক্কা দেয়। এতে খুবই বিব্রত হই। বিশেষ করে ফুটপাত ব্যবহারে নারীদের বিড়ম্বনা খুব বেশি।’
ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া একাধিক হকার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। পৌরবাজারের সামনে ফল বিক্রি করে সংসার চালান আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে তুলে দিয়েছিল। আবার পেটের দায়েই ফুটপাতে এসে বসেছেন।
একই কথা আরেক ফল ব্যবসায়ী জোবায়ের হোসেন ও মুসা মিয়ার। তাদের ভাষ্য, সরকার কোথাও ব্যবসা করার আলাদা ব্যবস্থা করে দিলে তারা ফুটপাতে বসতেন না। ফুটপাতে বসলে মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হয়, তা তারাও বুঝেন। কিন্তু তারা যাবেন কোথায়?
ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানান ইউএনও সাজ্জাত হোসেন। তিনি বলেন, আড়াইহাজার পৌরবাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। এতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটপাত দখলদার হকার ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে। কেউ নতুন করে দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ