ব্যাট হাতে তিনি রেকর্ড গড়বেন, এ আর এমন কী! কত দ্রুত মাইলফলকে পৌঁছে যেতে পারছেন, বিরাট কোহলির জন্য এখন দেখার বিষয় হয়ে গেছে এটিই। পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি মাইলফলক ছুঁয়ে এগিয়ে থাকায়ও প্রথম হলেন তিনি। একটি রেকর্ড গড়লেন ফিল্ডিংয়েও।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচটি যখন খেলতে নামেন, তাঁর নামের পাশে ১৩ হাজার ৯৮৫ রান। এই ম্যাচে ১৫ রান করতেই ওয়ানডেতে ১৪ হাজার রান করা দ্রুততম ব্যাটসম্যান হয়ে গেছেন কোহলি।
আরও পড়ুনইমামের রানআউট নিয়ে ইনজামামকে খোঁচা আকরাম–শাস্ত্রীর১ ঘণ্টা আগেএত দিন এই রেকর্ডটা ছিল এমন একজনের দখলে, যাঁর সঙ্গে তুলনা করা হয় কোহলির। ৩৫০ ইনিংসে ওয়ানডেতে ১৪ হাজার রান করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। তাঁদের দুজনের বাইরে এই সংস্করণে ১৪ হাজার রানই অবশ্য আছে আর একজনের—শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা ৩৭৮ ইনিংস খেলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন।
এই ম্যাচেই একটি ভারতীয় রেকর্ড গড়েছেন কোহলি। সেটি অবশ্য ব্যাটিংয়ে নয়, ওয়ানডেতে এখন ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডটি কোহলির দখলে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের সমান ১৫৬ ক্যাচ ছিল তাঁর।
ফিফটি উদ্যাপন করছেন কোহলি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধের ৩ বছর: ‘ট্রাম্প একজন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী’
টোভ্যার শহরের ভেতর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমেই আমি যা লক্ষ করলাম, সেটি হলো সেনাবাহিনী। সবখানেই তারা—বিলবোর্ডে, ভবনের পাশে, বাসস্টপেজে; ‘রাশিয়ার নায়ক’ লেখা বিভিন্ন প্রতিকৃতিতেও।
কালাশনিকভ রাইফেল হাতে সেনাদের পোস্টারে রাশিয়াকে ভালোবাসতে, দেশকে নিয়ে গর্ব করতে ও দেশকে রক্ষায় উৎসাহিত করা হয়েছে জনসাধারণকে। অন্য কথায়, সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে ও ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
ক্রেমলিন শুরু থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে যুদ্ধ না বলে বিশেষ সামরিক অভিযান বলে আসছে। রাশিয়ার অনেক মানুষের কাছে এ যুদ্ধ এমন একটি ঘটনা, যা তাঁরা শুধু টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখেছেন। কিন্তু অ্যানার মতো মানুষের কাছে এটি অনেক বেশি বাস্তব।২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধের তিন বছর পূর্তি আজ। তবে এত দিন পরও রাশিয়া নতুন করে সেনা নিয়োগের চেষ্টা করছে।
আপনি যদি টোভ্যারে থাকেন, তবে বুঝতে পারবেন, শহরের চারপাশে সামরিক দৃশ্যপট ফুটে ওঠা সত্ত্বেও মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক। শহরটি সম্মুখসারির যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কয়েক শ মাইল দূরে।
মিখাইল নামের স্থানীয় একজন শিক্ষক বিবিসিকে বলেন, ‘আপনি শুধু চারপাশে তাকান। পাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। দোকানপাট সব খোলা। কোনো গোলা এসে পড়ছে না। আমাদের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক। সম্ভাব্য হামলার মুখে পড়া নিয়ে কোনো সাইরেনও শুনতে হচ্ছে না। ছুটতে হচ্ছে না কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে।’
ক্রেমলিন শুরু থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘যুদ্ধ’ না বলে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আসছে। রাশিয়ার অনেক মানুষের কাছে এ যুদ্ধ এমন একটি ঘটনা, যা তাঁরা শুধু টেলিভিশনের পর্দাতেই দেখেছেন। কিন্তু অ্যানার মতো কারও কারও কাছে এটি অনেক বেশি বাস্তব।
আপনি শুধু চারপাশে তাকান। পাশ দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে। দোকানপাট সব খোলা। কোনো গোলা এসে পড়ছে না। আমাদের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক। সম্ভাব্য হামলার মুখে পড়া নিয়ে কোনো সাইরেনও শুনতে হচ্ছে না। ছুটতে হচ্ছে না কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে।মিখাইল, রাশিয়ার নাগরিকবিবিসির প্রতিনিধির সঙ্গে রাস্তায় আলাপচারিতাকালে অ্যানা বলেন, ‘আমি এমন অনেক লোককে চিনি, যাঁরা যুদ্ধে গেছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আর বাড়ি ফেরেননি। আমি চাই (এ যুদ্ধ) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হোক।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমনটাই চান বলে দাবি করেছেন। ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে না ডেকে ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে রাশিয়ার নেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মস্কোর সঙ্গে তাঁর আলোচনা সম্পর্কে রুশদের মতামত কী—এ বিষয়ে অ্যানার মত, ‘(এ যুদ্ধে) ট্রাম্প একজন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী। আমি জানি না তাঁর কাছ থেকে কী আশা করা উচিত।’
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের দেওয়া শত শত কোটি ডলারের সহায়তা ফেরত চান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গতকাল শনিবার ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের বার্ষিক জমায়েতে এ কথা সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন তাঁর প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন তিনি। তবে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় ইউক্রেনকে যুক্ত করা হয়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে কয়েক দফা আক্রমণাত্মক কথাও বলেছেন ট্রাম্প।
ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে ট্যাংক নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন রুশ সেনারা