ঢাকায় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনী শুরু মঙ্গলবার
Published: 23rd, February 2025 GMT
ঢাকায় তিন দিনব্যাপী প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আগামী মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। ‘১০ম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৫’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ২২টি দেশের ২০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে।
রাজধানীর পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এর পাশাপাশি ‘১২তম অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৫’ এবং ‘ফুড ইনগ্রেডিয়েন্ট এক্সপো ২০২৫’ নামে আরও দুটি প্রদর্শনী চলবে। তিনটি প্রদর্শনী ২৭ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে। প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস (রিমস) যৌথভাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে।
প্রদর্শনী উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর পল্টনে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাপা। এতে সংগঠনটির নেতারা প্রদর্শনী ও দেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য শিল্প নিয়ে বিশদ তথ্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি মো.
মেলা আয়োজক কমিটির চেয়ারপারসন ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাত অত্যন্ত ভালো করছে। খাতটি দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি বিদেশে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে। ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাত আমাদের সক্ষমতাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে ভূমিকা রাখছে।’
বাপার সভাপতি মো. আবুল হাশেম বলেন, বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিশ্বের ১৪৫টির বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান ২২ শতাংশ। জিডিপিতে কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য খাতের অবদান ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে এই খাতের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাপার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এ খাতে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সহস্রাধিক। তবে বাপার সদস্য প্রায় ৪০০। এসব প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি ৫.৪%
বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রত্যাশাতীত প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময় দেশটিতে মানুষের ভোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি শিল্পোৎপাদনও বেড়েছে। যদিও দেশটির নীতিনির্ধারকেরা ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক গত কয়েক বছরে চীনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল তা স্থগিত করেন। কিন্তু চীনের শুল্ক স্থগিত করেননি তিনি। শুধু তাই নয়, চীনের পণ্যে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেছেন। চীনও মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে ১২৫ শতাংশ।
চীনের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বছরের প্রথম অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও রয়টার্সের জরিপে বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার ছিল যে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গত বছরের শেষ প্রান্তিকেও চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
তবে চীনের প্রবৃদ্ধি এই গতি থাকবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। ওয়াশিংটনের উচ্চ শুল্কের কারণে চীনের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি অর্থাৎ রপ্তানি মার খাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে চীনের নেতারা বড় ধরনের চাপে পড়বেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। রপ্তানি মার খেলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং অনেক মানুষের চাকরি যাবে, এই পরিস্থিতি সামলানো নেতাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে।
সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রকৃতি কিছুটা অসম। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ বেড়েছে এবং কারখানার কার্যক্রমেও এসেছে গতি; কিন্তু বেকারত্বের উচ্চহার ও মূল্যহ্রাসের কারণে চাহিদা নিয়ে শঙ্কা আছে।
মার্চে চীনের রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে কিছু কাঠামোগত কারণ আছে। বিষয়টি হলো, ট্রাম্পের শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে চীনের রপ্তানিকারকেরা মার্চে দ্রুততার সঙ্গে অনেক পণ্য জাহাজিকরণ করেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুল্ক–ঝড়ের প্রভাব অনুভূত হওয়ার আগে চীনের জিডিপির পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে। মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েক বছর ধরেই চীনের প্রবৃদ্ধির গতি কম। অর্থনীতি চাঙা করতে চীনের সরকার বেশ কয়েকবার প্রণোদনা দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সেই প্রণোদনা অনেকটা কাজে আসছে। কিন্তু যেভাবে ট্রাম্প চীনের পণ্যে শুল্ক আরোপ করে যাচ্ছেন, তাতে আরও প্রণোদনা প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
আগের প্রান্তিকের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, আগের প্রান্তিকের তুলনায় বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ; অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১ দশমিক ৬ শতাংশ। মার্চে দেশটির খুচরা বিক্রয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ; জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে যা ছিল ৪ শতাংশ।
এদিকে রয়টার্সের জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৪ সালে যেখানে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ শতাংশ। চলতি বছর চীনের সরকারি পূর্বাভাস ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। অর্থাৎ দেশটি সেই লক্ষ্যমাত্রা এবার অর্জন করতে পারবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।
এদিকে বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস ২০২৫ সালে চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যদিও আগের তাদের পূর্বাভাস ছিল ৪ শতাংশ। মূলত শুল্ক–যুদ্ধের প্রভাব বিবেচনা করে তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে।