আবাহনী লিমিটেড তাকে ধরে রাখতে চেয়েছিল। দেশের ক্রিকেটের সফলতম ক্লাবটির ভাবনা ছিল, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি লিটন দাস কিছুটা বুঝবেন! শেষ কয়েক মৌসুম চাহিদা অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাওয়ায় এবার অন্তত কিছুটা ছাড় দেবেন লিটন।

মোহাম্মদ মিথুন, মুমিনুল হকদের মতো ক্লাবটির পাশে থাকবেন। কিন্তু নিজের উচুঁ মূল্য লিটন ধরে রাখলেন। নিজের পারিশ্রমিকের যে স্ট্যান্ডার্ড ঠিক করেছেন সেটা থেকে নামতে চান না। এজন্য ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তার দলবদলের প্রক্রিয়া থমকে আছে।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদলের প্রক্রিয়া সম্পন্নের শেষ দিন ছিল আজ রোববার। দুদিনে মোট ১৬৫ ক্রিকেটারের দলবদল সম্পন্ন হয়েছে। দুদিনে নির্ধারণ হয়নি লিটনের ঠিকানা। আগামী ৩ মার্চ ঢাকা লিগের পর্দা উঠবে। এর আগ পর্যন্ত অবশ্য লিটনের সুযোগ আছে নতুন ক্লাবে নাম লিখানোর। কেননা দল পরিবর্তনের জন্য টোকেন গ্রহণ করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

সাকিবের ‘ইউটার্ন’

সাকিবসহ ১০৪ ক্রিকেটারের দলবদল সম্পন্ন, আগামীকাল করবেন তামিম

পুরোনো ক্লাবে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। খেলতে হলে নতুন করে চুক্তি করে খেলতে হবে। নয়তো নতুন ক্লাবে। শোনা গেছে, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ এবং প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব লিটনকে পেতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু তার উচুঁ পারিশ্রমিকের কারণে কোনো দলই তাকে এখন পর্যন্ত নেয়নি।

দলবদলের শেষ দিনে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, তাসকিন আহমেদ, তাওহীদ হৃদয়, ইবাদত হোসেন, তাইজুল ইসলামদের দলবদল হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই মোহামেডান শিবিরে গেছেন। আফিফ হোসেন আবাহনী থেকে গিয়েছেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে।

গতকাল প্রথম দিন সাকিব আল হাসান শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থেকে গিয়েছিলেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে সাকিব নিজের নাম তুলে নেন দলবদল থেকে। ফলে তাকে ছাড়াই হবে এবারের ঢাকা লিগ।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র দলবদল

এছাড়াও পড়ুন:

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে পা ফেলারও জো নেই, লাখো পর্যটক

চট্টগ্রামে মূল শহর থেকে কিছুটা দূরে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। বছরজুড়ে এই সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন শহর ও আশপাশের এলাকার লোকজন। দর্শনার্থীদের মধ্যে থাকেন বাইরের জেলার মানুষও। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে সৈকতে। ঈদের আনন্দ উদ্‌যাপনে সময় কাটাতে সমুদ্র দেখতে হাজির হন হাজারো মানুষ। সকাল থেকে বিকেল, সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতিতে মুখর সৈকত এলাকা।

আজ বুধবারও এই চিত্রের পরিবর্তন হয়নি। ঈদের দিন বিকেল থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে আসতে শুরু করেন নানা শ্রেণি-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ। আজও পর্যটকের ভিড় লেগেই ছিল।

সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের দল বেঁধে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। অনেকেই সৈকতের বালুচরে নেমে সমুদ্রে স্নান করেন। কেউ কেউ স্পিডবোটে চড়েন।

চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে কলেজপড়ুয়া ছয় বন্ধু আজ বিকেলে এসেছিলেন বেড়াতে। তাঁদের একজন সালেহ নকীব। তিনি বলেন, ঈদের সময় লম্বা ছুটি পাওয়া যায়। বন্ধুরাও গ্রামে আসেন। সবাই মিলে প্রতিবছর ঈদে একেক জায়গায় বেড়াতে যান। এবার অবশ্য বেশি দূরে যাননি। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে এসেছেন।

নগরের সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আউটার রিং রোড এবং পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের পর এই এলাকার আগের চেনা পরিবেশ পাল্টে গেছে। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে নির্মিত আউটার রিং রোডের পাশে এলাকাও দর্শনার্থীদের ঘুরে বেড়ানোর জায়গায় পরিণত হয়েছে।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন চাকরিজীবী শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, এবার ঈদে লম্বা ছুটি মিলেছে। তাই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছেন। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, টানেল ঘুরে দেখেছেন। তাঁদের ছোটবেলার সঙ্গে এখনকার সৈকতের পরিবেশ অনেক পাল্টে গেছে।

ঈদের দিন সোমবার থেকে বুধবার পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় এক লাখের বেশি মানুষ ঘুরতে এসেছেন বলে জানান পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটিতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে মানুষের ঢল নেমেছে। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। বিপুলসংখ্যক পর্যটক এলেও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। শুরু থেকে তাঁরা তৎপর ছিলেন।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে তিনটি পার্ক বন্ধ হয়ে যায়। আগ্রাবাদ, কাজীর দেউড়ি ও বহদ্দারহাট এলাকার এই তিনটি পার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দর্শনার্থীদের চাপ বেড়ে গেছে চালু থাকা বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক, কর্ণফুলী নদীর তীরেও ঘুরতে বের হওয়া মানুষের জমজমাট উপস্থিতি ছিল। চিড়িয়াখানায় তিন দিনে ৪০ হাজারের মতো মানুষ ঘুরতে এসেছিলেন। চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের বেশি আগ্রহ ছিল বাঘ, সিংহ, হরিণ, বানর নিয়ে। এসব প্রাণীর খাঁচার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই ছিল। পশুপাখি দেখতে শিশু-কিশোরদের আগ্রহই বেশি চোখে পড়েছে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের চাপ ছিল। তিন দিনে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ঘুরতে এসেছেন। ঈদের ছুটি এখনো শেষ হয়নি। আশা করছেন, আগামী দু-তিন দিন এই ভিড় থাকবে।

চিড়িয়াখানার পাশেই রয়েছে ফয়’স লেক। সেখানেও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে ছিল। এখানে তিনটি অংশ রয়েছে—ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট, সি ওয়ার্ল্ড ও বেজক্যাম্প। সবখানে মানুষের সরব উপস্থিতি। সি ওয়ার্ল্ডের সুইমিংপুলে শত শত মানুষ আনন্দে মেতেছেন। নানা বয়সী মানুষ মেতে উঠেছেন জলকেলিতে। পার্কের রাইডগুলোতেও চড়ে বসেছে অনেক শিশু-কিশোর।

ফয়’স লেক কমপ্লেক্সের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, এবার নতুন করে ছয়টি রাইড যুক্ত করা হয়েছে। এতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ