অগ্রদূত ক্রিকেট একাডেমির পুনর্মিলনী ও সম্মাননা প্রদান
Published: 23rd, February 2025 GMT
অগ্রদূত ক্রিকেট একাডেমির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পুনর্মিলনী ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শহরের খানপুর চৌরঙ্গী পার্কে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ক্রীড়াঙ্গণে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্নজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণকালে বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ এনামুল হক খোকা অনেকটা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, আমি দীর্ঘ প্রায় অর্ধশতাধীক সময় ধরে ক্রীড়াঙ্গণের সাথে জড়িত। আমি ৭১’র পূর্বে পাকিস্তান আমলে লীগ খেলতাম।
এত বছরে দেশকে শুধু দিয়েই গিয়েছি কিন্তু সেই তুলনায় সর্বনিম্ন সম্মানটুকুও তেমন পায়নি। জীবনের প্রথম আজ সম্মানিত হয়ে আনন্দে আমার দু’চোঁখ ভিজে যাচ্ছে। জানিনা, কিভাবে আমি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো।
শুধু এইটুকু বলতে পারি, যারা ক্রীড়াঙ্গণের সাথে জড়িত, খেলাধুলার সাথে জড়িত তাদেরকে যেন আমরা প্রাপ্য সম্মানটুকু দেই। কারণ, তাদেরকে সম্মান দিলে তারা আরও উৎসাহ্ হয়ে আরও ভালো কিছু করতে পারবে। নয়তো, গন্তব্যের আগেই মেধা থাকা সত্বেও ঝরে যাবে।
অনুষ্ঠানে অশোক কুমার দাশ বলেন, খেলোয়াড়দের সম্মান পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তবেই দেশে হাবিবুল বাসার সুমন, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, রফিক, মুন্না ও পাইলটদের মত খেলোয়ার তৈরি হবে। আর এ জন্য ক্রিকেট একাডেমি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্লাব, ক্রীড়া সংস্থা এবং সর্বপুরি সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
আমাদের এ নারায়ণগঞ্জের বহু কষ্টে ক্লাবগুলো পরিচালিত হচ্ছে। অর্থ অভাবে তারা ক্লাবগুলো চালাতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে। সমাজের বিত্তবানদের উচিৎ এ সমস্ত ক্লাবগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। ক্লাবই যদি না থাকে, একাডেমি যদি না থাকে তাহলে নতুন খেলোয়ার তৈরি হবে কি করে? তাই আগামীতে এ বিষয়টি মাথায় রেখে খেলোধুলার উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধাভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জলিসুর রহিম, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, জাকারিয়া ইমতিয়াজ, মশিউর রহমান সোহেল, নারায়ণ চন্দ্র সাহা তপু, জুয়েল হোসেন মনা, শ্রী বিশ্বজিৎ, মেহেদী হাসান বিল্লাল, মোঃ জুয়েল প্রমূখ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযানের পরপরই ফের ফুটপাতে বসেন হকার
‘অফিস থেকে ফেরার পথে ফুটপাত ধরে বাসায় ফিরি। কিন্তু পৌরবাজারের পুরো এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে।’ গতকাল রোববার দুপুরে ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমান উল্লাহ। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মতো হাজারো মানুষকে প্রতিদিন এই
সড়কের পাশের ফুটপাত দিয়ে চলার সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আমান উল্লাহ বলছিলেন, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে হাঁটার জায়গাও থাকে না। বছরের পর বছর এই ভোগান্তি চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্থায়ী কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
পৌরবাজারের সামনের ফুটপাতটি পথচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, না-কি হকারদের জন্য– তা বোঝাই মুশকিল। ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী হকারদের সাজানো দোকানে পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও পৌর প্রশাসক বলছেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।
আড়াইহাজার পৌরসভার সূত্র জানায়, রমজান সামনে রেখে যানজট নিরসনে ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেনের নেতৃত্বে এদিন অর্ধশতাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের একদিনের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় প্রশাসন।
এর আগে ফুটপাতে হকার বসতে নিষেধ করে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মানায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ করে যাওয়ার পরপরই ফুটপাত ও সড়ক আবারও চলে যায় হকারদের দখলে। রোববার দুপুরে দেখা গেছে, নতুন করে আড়াইহাজার উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ডাকবাংলো পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্ধশতাধিক দোকান বসেছে। এতে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
একটি বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল রাব্বি বলেন, ‘দেখছেন, কীভাবে যেতে হচ্ছে। ফুটপাতে আমাদের চলাচল করা খুবই কঠিন। হকার-ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতাদের যে ভিড়, এর মধ্যে হাঁটা সত্যিই কঠিন। একজন পথচারী হিসেবে চাই, অবশ্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করা হোক।’
রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় অনেক মানুষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছা করেই ধাক্কা দেয়। এতে খুবই বিব্রত হই। বিশেষ করে ফুটপাত ব্যবহারে নারীদের বিড়ম্বনা খুব বেশি।’
ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া একাধিক হকার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। পৌরবাজারের সামনে ফল বিক্রি করে সংসার চালান আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে তুলে দিয়েছিল। আবার পেটের দায়েই ফুটপাতে এসে বসেছেন।
একই কথা আরেক ফল ব্যবসায়ী জোবায়ের হোসেন ও মুসা মিয়ার। তাদের ভাষ্য, সরকার কোথাও ব্যবসা করার আলাদা ব্যবস্থা করে দিলে তারা ফুটপাতে বসতেন না। ফুটপাতে বসলে মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হয়, তা তারাও বুঝেন। কিন্তু তারা যাবেন কোথায়?
ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানান ইউএনও সাজ্জাত হোসেন। তিনি বলেন, আড়াইহাজার পৌরবাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। এতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটপাত দখলদার হকার ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে। কেউ নতুন করে দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।