দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমেছে। চলতি মাসে টানা পাঁচ দফা বাড়ানোর পর এবার দাম কিছুটা কমানো হলো। এ দফায় ভরিপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৫৫ টাকা দাম কমানো হয়েছে। তাতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭০ টাকা।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে।

সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারি সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জুয়েলার্স সমিতি। তাতে এক ভরির দাম বেড়ে হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকা। দেশের বাজারে এটিই ছিল সোনার সর্বোচ্চ দাম। এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি দাম বাড়ানোর পর প্রথমবারের মতো দেশের বাজারে সোনার ভরি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

নতুন দাম অনুযায়ী, আগামীকাল থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১.

৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭০ টাকা, ২১ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ২৫ হাজার ৪৮১ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম হবে ১ লাখ ৩ হাজার ৪০১ টাকা।

এদিকে আজ পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ২৬ হাজার ৪২৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৪ হাজার ২০৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সেই হিসাবে আগামীকাল থেকে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনায় ১ হাজার ১৫৫ টাকা, ২১ ক্যারেটে ১ হাজার ১০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ৯৪৫ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনায় ৮০৫ টাকা দাম কমবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ম কম

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিয়ে স্বার্থ আদায় করেছে

বিগত সময়ে ভারত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৈধতা দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ আদায় করেছে। বাংলাদেশকে ভারতীয় আধিপত্য থেকে বের হয়ে আসতে হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে চালু রাখতে হবে। একই সঙ্গে প্রশাসনকেও ঢেলে সাজাতে হবে নিরপেক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ: প্রসঙ্গ ভারত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ‘ন্যারেটিভ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসির (আইআইএলডি) পরিচালক শফিউল আলম শাহীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারত বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির পরিবর্তে দল কিংবা ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে; যে কারণে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত সংখ্যালঘু কার্ড খেলে তার স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে।

ভারতকে দল কিংবা ব্যক্তিভিত্তিক সম্পর্ক তৈরির নীতি থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতি মনোযোগী হতে আহ্বান জানান শফিউল আলম শাহীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক বলেন, জুলাই-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের নীতি কী হওয়া উচিত, সে বিষয়ে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মূল চিন্তার কারণ হচ্ছে তার উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের নিরাপত্তা।

ভারতের কেমন বাংলাদেশ নীতি হওয়া উচিত, সে বিষয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন দেশ সম্ভব হয়েছিল শুধু বাংলাদেশের মানুষের অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে। অন্য কোনো কারণে নয়। এটা ভারতকে অসাধারণ সুযোগ-সুবিধা তৈরি করে দিয়েছিল, তবে তারা সেটা হারিয়েছে। [ভারতের নদীর] পানির ন্যায্য হিস্যা, সীমান্তে হত্যাসহ নানান উদাসীনতা ছিল। তবে সেটি গত ১৬ বছরে নতুন মাত্রা যোগ করে। যার কারণে বাংলাদেশের মানুষকে ভারত স্থায়ীভাবে হারিয়েছে। তবে সেটা কবে ফিরে পাবে, ঠিক নেই।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য মুস্তাইন জহির বলেন, জুলাই-পরবর্তী নতুন প্রজন্মের ভারতবিষয়ক অভিজ্ঞতা এবং একাত্তরের সময়ের প্রজন্মের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে ক্ষেত্রে জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে নতুন প্রজন্মের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত। এ প্রজন্মকে ভারতনীতির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সায়মা হক বলেন, বিগত সময়ে ভারত অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৈধতা দেওয়ার মাধ্যমে তার স্বার্থ আদায় করেছে। বাংলাদেশকে ভারতীয় আধিপত্য থেকে বের হয়ে আসতে হলে যেমন স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত রেখে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে চালু রাখতে হবে, তেমনি প্রশাসনকেও নিরপেক্ষ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি দ্বারা ঢেলে সাজাতে হবে। পররাষ্ট্রনীতি তৈরিতে যোগ্য এবং দক্ষ লোকদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে বাংলাদেশ তার স্বার্থ রক্ষা করতে সক্ষম হবে।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক নায়েল রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভারতনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ-উপযোগী পররাষ্ট্রনীতি তৈরি করতে হলে দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ এবং জাতীয় স্বার্থকে সমন্বয় করতে হবে।

আলোচনা সভা পরিচালনা নুসরাত তাসনিম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ