নিজের রেকর্ড ভাঙতে ফুটবল মাথায় বাইসাইকেলে ২০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন মাগুরার হালিম
Published: 23rd, February 2025 GMT
মাথার ওপরে ফুটবল, দুই হাত হ্যান্ডেলে। এভাবে এক ব্যক্তি বাইসাইকেল চালাচ্ছেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু করে তিনি থামলেন দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে। এ সময়ে ৭১ দশমিক ৯ মিটার ল্যাপে তিনি চক্কর দিলেন ২৮০ বার। যা হিসাব করে দেখা গেল, ওই ব্যক্তি ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট সময়ে বাইসাইকেল চালিয়েছেন টানা ২০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব। এর মধ্যে একবারও বল মাথা থেকে পড়েনি, তিনি হাত দিয়েও নিয়ন্ত্রণ করেননি।
মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে শনিবার সকালে এই চিত্র দেখা গেল। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাতে এই কসরত দেখালেন মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের আবদুল হালিম (৪৯)। মাথার ওপর ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটা, বাইসাইকেল চালানো বা স্কেটিং করা তাঁর কাছে যেন কোনো ব্যাপারই নয়। ফুটবল নিয়ে যিনি অর্ধশতাধিক আকর্ষণীয় খেলা দেখাতে পারেন। এমন ফুটবল কসরত করেই ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
আবদুল হালিম বলেন, ‘ছোটবেলায় এক গোলকিপারের বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেখে এতে আগ্রহী হই। আজ প্রায় ৩৩ বছর ফুটবল নিয়ে নানা খেলা শিখেছি, প্রদর্শন করেছি। এটাই আমার পেশা। এটা করতে গিয়ে অন্য কোনো কাজ আর শেখা হয়নি।’
নিজেই ভাঙছেন নিজের রেকর্ডগিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ‘দ্য গ্রেটেস্ট ডিসট্যান্স ট্রাভেল্ড অন এ বাইসাইকেল ব্যালান্সিং এ ফুটবল অন দ্য হেড’ বা মাথায় ফুটবল রেখে সাইকেল চালিয়ে সবচেয়ে বেশি দূর যাওয়ার রেকর্ডের মালিক আবদুল হালিম। ২০১৭ সালের ৮ জুন ঢাকায় এই রেকর্ড গড়েন তিনি। তখন ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটে মাথায় বল নিয়ে ১৩ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়েছিলেন তিনি। সাত বছরের বেশি সময় রেকর্ডটি তাঁর দখলেই রয়েছে।
এবার নিজেই নিজের রেকর্ড ভাঙতে চলেছেন তিনি। শনিবার আবদুল হালিম চালিয়েছেন ২০ দশমিক ৬ কিলোমিটার পথ। রেকর্ড স্থাপনের জন্য গিনেসের কিছু নিয়ম আছে। সে নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে একটি কমিটির সামনে মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে ফুটবল মাথায় নিয়ে সাইকেল চালান হালিম। যার ভিডিও ধারণ করা হয়। এই ভিডিও ফুটেজ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সেগুলো যাচাই–বাছাই শেষে মিলবে স্বীকৃতি।
১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট মাথায় বল নিয়ে টানা ২০ কিলোমিটারের বেশি সাইকেল চালিয়েছিলেন আবদুল হালিম। শনিবার মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল হ ল ম র র কর ড বল ন য় ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
বিমানের টিকিট ভাড়া কমাতে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল আটাব
সৌদি আরবগামী ফ্লাইটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে এয়ারলাইন্সগুলোর টিকিট ভাড়া ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে সক্ষম হওয়ায় সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
রবিবার (২৩ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আটাবের একটি প্রতিনিধিদল সরকারের এই উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেন।
আটাবের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ।
আরো পড়ুন:
ওমরাহর ক্ষেত্রে বিমানের টিকিট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে: ধর্ম উপদেষ্টা
সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন
সাক্ষাৎকালে আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ বিমানের যাত্রীদের টিকিট প্রাপ্তি সহজ ও স্বল্প মূল্যের করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালের আইন পরিবর্তন করে এয়ারলাইন্সগুলোকে বাধ্যতামূলক ভাবে জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নামে যে বিধান রাখা হয়েছে তাতে এই খাতে সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যাত্রীরা যেমন অধিক মূল্যে টিকিট ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন তেমনি ভোগান্তিও বাড়ছে।
সম্প্রতি সরকার যাত্রীদের পাসপোর্ট ডিটেইল ছাড়া টিকিট বুকিং এর পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা অনিয়ম এবং যাত্রী হয়রানি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে আটাবের সভাপতি বলেন, “এখন সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোন প্রতিষ্ঠান এই আইনের ব্যত্যয় ঘটাতে না পারে।”
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “আইন উপদেষ্টা প্রফেসর আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একদিনের বৈঠকে সব সমস্যা শুনে তার সমাধানের পথ খুঁজে বের করে নতুন সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছিল। এখন এই সিদ্ধান্ত যাতে কেউ উপেক্ষা করতে না পারে তার জন্য আমরা কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করছি।”
২০১৭ সালের আইনটিকে পরিবর্তনের পক্ষে তার মতামত থাকবে জানিয়ে তিনি আইন ও বিধি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য আটাবকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক জন্য পরামর্শ দেন।
আকাশপথের যাত্রায় টিকিটের উচ্চমূল্য কমানো ও এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ দফা নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে।
এতে টিকিট বুকিংয়ের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা বরাদ্দ করা না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুকিং বাতিল করতে বলা হয়।পাশাপাশি গ্রুপ বুকিংয়ের নামে কোনো এয়ারলাইন্সের অনেকগুলো টিকিট একসঙ্গে ব্লক করা হলে পরে সাত দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ তা বিক্রি নিশ্চিত করার তথ্য দিতে বলা হয়। তা না হলে পরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেসব টিকিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করতে হবে এয়ারলাইন্সকে।
যাত্রীর নাম, পাসপোর্টের বিবরণ ও পাসপোর্টের ফটোকপি দিয়ে টিকিট বুকিংয়ের নির্দেশনার ফলে যেসব টিকিট নাম ছাড়া ‘ব্লক’ করে রাখা হত সেগুলো এয়ারলাইন্সগুলো ‘ওপেন’ করে দেয়। ফলে কম্পিউটার রিজারভেশন সিস্টেমে সিট সহজলভ্য হয়ে যায়। এতে এখন ট্রাভেল এজেন্সি ও যাত্রীরা ফ্লাইটে সিট খালি আছে কি না এবং কত ভাড়া তা অনলাইনে দেখতে পাচ্ছেন। সব দেখেশুনে চাহিদা মত টিকিট বুকিং করতে পারছেন যাত্রী এবং এজেন্সিগুলো।
এ পরিবর্তনের ফলে বাজারে টিকিটের যে কৃত্রিম সংকট ছিল সেটা কমে গেছে এবং ফ্লাইটের সিট সহজলভ্য হওয়ার কারণে এয়ারলাইন্সের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে ও টিকিটের মূল্য কমে এসেছে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ