ভারতের সঙ্গে  কী ধরনের সম্পর্ক চায়, সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ‘ভারতবিরোধী’ বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ আখ্যায়িত করেন।

শনিবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য উৎসবে বাংলাদেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এস জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি- আমরা এমন কোনো আচরণ দেখতে চাই না, যা ভারতের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ সংকেত দেয়। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়। ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক যেন স্বাভাবিক থাকে, ভারত সেটাই চায়। আমরা প্রতিবেশীদের সর্বদা শুভকামনা জানাই। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেবল দীর্ঘ নয়, এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এক বিশেষ ইতিহাস।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত বছর সেখানে যা ঘটেছে, তা সবাই জানে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির দুটি দিক ভারতের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’। প্রথমত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা। আমি মনে করি, এটি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে এবং এ বিষয়ে আমাদের কথা বলা প্রয়োজন। যা আমরা এরই মধ্যে করেছি। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক চায়। কারণ প্রতিদিন যদি বাংলাদেশের কেউ, যারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আছেন তারা যদি দাঁড়িয়ে সবকিছুর জন্য ভারতকে দোষারোপ করে এবং কিছু জিনিস যদি আপনি প্রতিবেদনগুলোতে দেখেন, তাহলে তা একেবারেই হাস্যকর। আমি যদি প্রতিদিন সকালে উঠেই আপনাকে দোষারোপ করতে থাকি, তখন আপনি একা একা বলতে পারবেন না যে, আমি আপনার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই। তাহলে এই সিদ্ধান্তটা তাদেরই নিতে হবে, তারা আমাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়।

জয়শঙ্কর আরও বলেন, আমরা চাই পরিস্থিতি শান্ত হোক, বাণিজ্য, পারস্পরিক যোগাযোগ ও অন্যান্য সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকুক। কিন্তু আমরা এমন কোনো বার্তা বা আচরণ দেখতে চাই না, যা বারবার ভারতের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ সংকেত দেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিক বিষয় না করে তোলে

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার প্রশ্নে ঢাকাকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সতর্ক করেছে দিল্লি। ওমানের মাসকাটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। 

শুক্রবার দিল্লিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, মাসকাটে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সার্কের বিষয়টি তোলা হয়েছিল। সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।

জয়সওয়াল বলেন, দক্ষিণ এশিয়াতে সার্কের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে একাধিক দেশ এবং তাদের কার্যকলাপ। বাংলাদেশকে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিকে সাধারণভাবে না দেখে, এর গভীরে গিয়ে সমাধান করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিক বিষয় না করে তোলে।

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের কয়েকজন উপদেষ্টার মন্তব্য এবং সে দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব কী পড়তে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করেছি। এসব (মন্তব্যগুলো) অবশ্যই সহযোগিতামূলক নয়। নির্দিষ্ট মন্তব্যের প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাবা উচিত।’

গত সপ্তাহে মাসকাটে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের অষ্টম অধিবেশনে তৌহিদ হোসেন ও জয়শঙ্করের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশ জানায়, সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডাকা অত্যন্ত জরুরি এবং সে জন্য তারা ভারতের সহায়তা চায়। বাংলাদেশ জানিয়েছে, সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের সঙ্গে আরও গভীর আলোচনা করতে চায়। বিশেষ করে, সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।

ভারত ও বাংলাদেশের এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, সার্কের সফল কার্যক্রমের জন্য পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো পাকিস্তান প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, সার্ককে কার্যকর করতে হলে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সম্পর্ক ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।

এদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে সার্ক ছাড়াও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে মুখ খুলেছেন জয়সওয়াল। তিনি বলেছেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী হচ্ছে, তা আমরা সবাই ভালোভাবে জানি। এ মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনায়ও এটি উঠেছিল। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে সমস্যা আছে এবং বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয়, পুলিশ সব নাগরিকের: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন
  • বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিক বিষয় না করে তোলে
  • সার্ক প্রশ্নে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সতর্ক করেছে ভারত