পুলিশ পরিচয়ে কুমিল্লা থেকে ৩০০ বস্তা চালসহ ট্রাক ছিনতাই, ৪০ দিন পর গাজীপুর থেকে উদ্ধার
Published: 23rd, February 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রায় ৪০ দিন আগে পুলিশ পরিচয়ে ৩০০ বস্তা চালবোঝাই একটি ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আজ রোববার সকালে ট্রাকটি গাজীপুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ছাড়া উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি চালও।
আজ বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উপজেলার মিরশ্বানী এলাকা থেকে গত ১৫ জানুয়ারি চালক ও হেলপারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ট্রাকটি ছিনতাই করা হয়েছিল। এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি ট্রাকের মালিক সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেছিলেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৪ জানুয়ারি বগুড়ার রেলগেটের তিনমাথা এলাকা থেকে কিবরিয়া ট্রেডার্স অটো রাইস মিলের ১৫ টন চাল (৩০০ বস্তা) নিয়ে ট্রাকটি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা করে। চালগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা। ১৫ জানুয়ারি ভোরে ট্রাকটি মহাসড়কের মিরাশ্বানী এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি মাইক্রোবাস ট্রাকটির গতি রোধ করে। এ সময় ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি পুলিশের পোশাক পরে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। একপর্যায়ে তারা চালক মো.
ট্রাকটির চালক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ট্রাক নিয়ে গেছে, তারা পুলিশের পোশাক পরা ছিল এবং তাদের হাতে পিস্তল ছিল। তারা গাড়ি থামিয়ে আমাকে ট্রাক থেকে নামতে বলে। এ সময় তারা বলে, আমার ট্রাকের ভেতরে নাকি অবৈধ মাদকদ্রব্য আছে। গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে বলে। আমি কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তারা আমি এবং আমার সহকারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করে তাদের ব্যবহৃত গাড়িতে তুলে চোখ এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ডাকাত দল আমাদের দৈলবাড়ি স্কুলের সামনে ফেলে দিয়ে ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। মহাসড়ক দিন দিন বেশি অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। চালকদের কোনো নিরাপত্তা নেই।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার সকালে ট্রাকটি খালি অবস্থায় গাজীপুর সিটির বাহাদুরপুর এলাকার বাংলাবাজারমুখী রাস্তার ওপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক বা লুট হওয়া চাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ছিনতাইয়ে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোক্কাছ আলী (৪৮)। তিনি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রুবি আক্তার (৩০)। তাঁর বাড়ি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামে।
ভুক্তভোগী রুবি আক্তার বলেন, তাঁর বোনের জমিজমাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় এই লিখিত অভিযোগের বাদী ছিলেন তাঁর বোন উর্মিলা খাতুন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় কর্মরত মুক্কাস আলী ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তে আসেন। তদন্তে এসে তিনি তাঁর বোনের কাছে মোটরসাইকেলের তেলের খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ৫০০ টাকা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরের দিন তিনি জমির কাগজপত্র নিয়ে মির্জাপুর বাজারে দেখা করতে বলেন। প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও পুলিশ কর্মকর্তা আসেননি। সন্ধ্যায় তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে জমির কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে আরও পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
রুবি আক্তার বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে দারোগা মুক্কাস আলী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। তবে অসাবধানতাবশত তিনি ফোন না কেটে রেখে দেন, যার ফলে আমি অপর প্রান্তে আমার বিবাদী রুবেল ও সোহেলের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। কৌতূহলী হয়ে আমি তাদের কথোপকথন শুনতে থাকি এবং জানতে পারি যে মুক্কাস আলী বিবাদীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন।’
এএসআই মোক্কাছ আলী ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনে তদন্ত করেছি। আগামী সোমবার বিকেলে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক করার কথা হয়েছে।’ এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (শেরপুর সার্কেল) কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।