যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত এই অভিযানে মোট ৮ হাজার ৬৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

আজ সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্টের পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার বিকেল থেকে আজ বিকেল) আরও ৯০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া একই সময়ে কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশে তৈরি এলজি, একটি ম্যাগজিন, ১০টি গুলি ও তিনটি কার্তুজ।

৭ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার শিকার হন ১৫ থেকে ১৬ শিক্ষার্থী। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ওই রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ডাকাতির খবর পেয়ে তা প্রতিহত করতে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘হিযবুত তাহ্‌রীরের ব্যানার নামাতে বলায় আমাকে ইচ্ছেমতো মারধর করা হয়’

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের ব্যানার নামানোর কথা বলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সানি সরকার নামে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার তিনি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সানি সরকার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

সোমবার ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরও হেনস্তার শিকার হন।

এ ঘটনায় আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদী কর্মসূচি ডেকেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা সানি সরকারের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন করবেন।

লিখিত অভিযোগে সানি সরকার উল্লেখ করেন, দুপুর একটার দিকে টিএসসিতে গিয়ে দেখেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রোগ্রাম করছে। সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের পতাকা ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে তিনি বাধা দেন।

সানি অভিযোগপত্রে লেখেন, ‘আমিও একজন মুসলমান, তবে অনুরোধ করব এই নিষিদ্ধ পতাকাটি নামিয়ে ফেলুন। রাজু ভাস্কর্যের সামনে যেকোনো আন্দোলন বা প্রোগ্রাম অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এসবের ছবি বা ভিডিও যদি আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, অনুরোধের পর দু–একজন পতাকা নামিয়ে পকেটে রেখে দেন। এরপর কাদের ভাই (আব্দুল কাদের), খালেদ ভাই ও তানভীর ভাইয়েরাও বাকিদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছু (নিষিদ্ধ সংগঠন) হিযবুত তাহ্‌রীরপন্থি বিষয়টি বুঝতেই চায়নি। তারা আমাদেরকে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে মারতে আসে। ভিড়ের মধ্যে আমাকে ইচ্ছেমতো মারধর করা হয়।’

প্রক্টর অফিসে দেওয়া অভিযোগে সানি সরকার আরও উল্লেখ করেন, ‘স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন কীভাবে প্রোগ্রাম করতে পারে? যেখানে বহিরাগতদের কোনো কর্মসূচি করার অধিকার নেই, সেখানে আমরা এতটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছি যে বাইরের কেউ এসে প্রোগ্রাম বা তাদের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

সানির ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন নিয়ে কর্মসূচিগুলোতে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের পতাকা উড়তে দেখা গেছে। এর আগেও ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ ধরনের পতাকা উত্তোলন আন্দোলনের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলেও তারা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয় এবং আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম প্রতিহত করতে দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

এ দিকে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেছেন, তারা একটি অভিযোগপত্র পেয়েছেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ