নেত্রকোনায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে জেলা বিএনপি এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। সংবর্ধনায় বাবর বলেন, দেশে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। দেশবাসী যেন ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দেন।

আরও পড়ুনমনোবল বাড়াতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গেলেন বাবর১৯ ঘণ্টা আগে

সংবর্ধনা নিয়ে প্রায় সাত মিনিট বক্তব্য দেন লুৎফুজ্জামান বাবর। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। কিন্তু একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে কারাগারে রাখা হয়েছিল। আল্লাহপাক আপনাদের দোয়া কবুল করে আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। দেশের জনগণের স্বার্থ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আমি কোনো কাজ করিনি। জনগণের স্বার্থ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমি জীবন দিতে প্রস্তুত।’

সত্যের জয় হয়েছে দাবি করে বাবর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমার নেতা তারেক রহমান ও নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি মিথ্যা সাক্ষী দিতে চাপ দিয়েছিল। কিন্তু আমি এসব পরোয়া করিনি। শুধু আল্লাহকে ডেকেছি। সত্যের জয় হয়েছে।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বাবর বলেন, ‘দেশে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে দলীয় নেতা-কর্মী, ভাই-বোনদের বলছি, আপনারা কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে আমি বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার যাতে আসতে পারে, সে জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকুন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা নতুন দেশ গড়ে তুলব। নির্বাচনে যদি আমরা জয়ী হই, আমার নিজ জেলা নেত্রকোনায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে।’

গণসংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপিনেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। রোববার বিকেলে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ষড়যন ত র ন ব বর

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই। এই গল্প যারা নতুন নতুন সংস্কার শিখেছে, তাদের মধ্যে আর আপনাদের মধ্যে রেখে দিন। ৩১ দফা সংস্কার আকাশ থেকে পড়েনি। এটি প্রণয়নের পেছনে অনেক বিতর্ক, আলোচনা ও প্রস্তাবনা এসেছে। সবার ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই আমরা ৩১ দফা প্রণয়ন করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আগামী দিনের পরিবর্তনের বার্তা এই ৩১ দফার মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছে। এই বার্তা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছি এবং সংস্কারের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

শুক্রবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পো‌রেশনের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, কোনো ব্যক্তির ভিশন বা কোনো গোষ্ঠীর মিশনের ভিত্তিতে সংস্কার হবে না। বাংলাদেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংস্কার হবে। ৩১ দফার জন্য আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যখন এসব দফার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ভোট দেবে, তখন আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারব।

বিএনপির ৩১ দফা ও অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তিনি বলেন, এখন যারা সংস্কারের কথা বলেন, তাদের কাছে কোনো ম্যান্ডেট আছে? তাদের পক্ষে কার সমর্থন আছে? তাদেরকে কে বলেছে? হ্যাঁ, প্রণয়ন করুন, কমিশন হয়েছে, ভালো কথা। এগুলো সব আমরা আগামী সংসদে প্রস্তাব আকারে উপস্থাপন করবো। আপনারা কষ্ট করে করেছেন, অনেক ধন্যবাদ। এগুলো আমরা আগামী সংসদে পেশ করব। ৩১ দফা সংসদে আলোচনা হবে। আমরা বলেছি, হয়ে যাবে, তা নয়, সংসদে আলোচনা হবে। অন্য কোনো দলের যদি কোনো প্রস্তাব থাকে, সেটাও সংসদে উপস্থাপন করুক। কারণ, আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। জনগণের চিন্তার প্রতিফলন রাষ্ট্র পরিচালনায় ও দৈনন্দিন জীবনে ঘটাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যে নতুন পথ তারেক রহমান দেখিয়েছেন, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের প্রতি সহনশীলতা ও সহানুভূতি দেখানো। অন্যমত হলেও সেটি গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু সংস্কার করলেই হবে না, রাজনৈতিক সংস্কারের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। আমার বিরুদ্ধে কেউ বললেও তাকে সম্মান জানাতে হবে, তার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। দ্বিমত পোষণ করবো, কিন্তু সম্মান দিতে হবে। আপনারা দেখেছেন, তারেক রহমানকে একটি পত্রিকায় কার্টুনের মাধ্যমে সমালোচনা করা হয়েছিল। পরে তিনি বলেছেন, এটার জন্যই তো আমরা যুদ্ধ করেছি, এ স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য। এ স্বাধীনতা পাওয়ার জন্যই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি।

আমীর খসরু বলেন, বইমেলা জিনিসটা আমি ভুলে গিয়েছি। কারণ, বিগত দিনে বইমেলা বলতে যা বোঝানো হতো, তা হলো, একটি দলের প্রতিষ্ঠাতা, তার মেয়ে, তার পরিবার, তাদের চিন্তা ভাবনা ও দর্শন প্রতিফলিত হতো সেই বইমেলায়। এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও তাদের পরিবারের দর্শন ও চিন্তা ভাবনা কারিকুলামের মাধ্যমে পড়তে, শিখতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনো বিশেষ দর্শন, চিন্তা বা পরিবার যেন বাংলাদেশের মনোজগতে এককভাবে প্রবেশ করতে না পারে, সেটা আমরা আগামী দিনে নিশ্চিত করবো। কাজ করুক, তাহলে বিএনপি লাভবান হবে। শেখ হাসিনার পথে হাঁটলে চলবে না।

নতুন নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতীয়তাবাদী চিন্তার অনুসারীদের আগামী দিনে এই স্বাধীনতার চেতনাতেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। আমরা সংঘর্ষের রাজনীতি চাই না, প্রতিশোধের রাজনীতি চাই না। হ্যাঁ, বিচার অবশ্যই করতে হবে, যারা খুন করেছে, গুম করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কাউকে বিচারের বাইরে রাখা যাবে না। একই সঙ্গে দেশ গঠনের প্রকল্পে বিএনপির যে চিন্তা রয়েছে, সেটিই মাথায় রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রকাশক শাহাবুদ্দিন হাসান বাবুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিছ মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লা আদালতে বাদীকে পিটিয়ে হাসপাতালে, আটক ২
  • আওয়ামী লীগের ভূত ঢুকেছে এই সরকারে: ব্যারিস্টার খোকন
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ পুনর্গঠন করবে: তারেক রহমান
  • সরকার বিভিন্ন কৌশলে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে
  • বিএনপির রাজনীতির মূললক্ষ্য জনগণ ও দেশ: তারেক রহমান
  • ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন কখন, ঠিক করবেন জনপ্রতিনিধিরা’
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই: আমীর খসরু
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে দেশে আজ চরম অরাজক পরিস্থিতি: সেলিমা রহমান