দেশে ক্যানসার কেয়ার ভিলেজের উন্মোচন করল ব্যানক্যাট
Published: 23rd, February 2025 GMT
ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার জন্য আবাসনসুবিধা দিতে দেশে প্রথমবারের মতো কেয়ার ভিলেজ উন্মোচন করল বাংলাদেশ ক্যানসার এইড ট্রাস্ট (ব্যানক্যাট)। গতকাল শনিবার দ্য ওয়েস্টিন ঢাকায় ব্যানক্যাট এবং ভ্যালর অব বাংলাদেশ প্রথম–এর ‘ফিলানথ্রফি কনক্লেভ ২০২৫-ফস্টারিং এ কেয়ার ইকোনমি’ শীর্ষক আয়োজনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, কেয়ার ইকোনমি শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এতে সবার মিলিত চেষ্টা দরকার। যেখানে কমিউনিটির সহায়তা, দক্ষ মানুষ তৈরি আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহানুভূতি একসঙ্গে কাজ করে সত্যিকারের পরিবর্তন আনে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রথম ২৫০ শয্যার ক্যানসার কেয়ার ভিলেজ ‘আলোক বসতি’ একটি সুপরিকল্পিত হসপিস ও প্যালিয়েটিভ কেয়ার সেন্টার; যেখানে রোগীদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, আত্মিক যত্ন, এবং ক্যানসার স্ক্রিনিং সুবিধা থাকবে। পরিবেশবান্ধব এই প্রকল্পে সৌরবিদ্যুৎ এবং জৈব কৃষির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। পাঁচ ধাপে ৩৭ মাসে বাস্তবায়িত এই প্রকল্প বছরে পাঁচ হাজারের বেশি রোগীকে সেবা দেবে, যা বাংলাদেশের ক্যানসার চিকিৎসাব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
এর সহযোগী হিসেবে রয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, সাজেদা ফাউন্ডেশন, সেভেন রিংস সিমেন্ট এবং আবদুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এবং ভ্যালর অব বাংলাদেশ।
গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যানক্যাটের নির্বাহী পরিচালক নাজমুস আহমেদ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি এবং সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সাজেদা ফাউন্ডেশনের সিইও জাহিদা ফিজা কবির, ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পীরগাছায় ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা
রংপুরের পীরগাছায় তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। রোববার (৩০ মার্চ) কল্যাণী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নেছার আহম্মেদ মামলাটি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, নেছারকে দিয়ে মামলাটি করান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন।
আসামিরা হলেন একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক সংবাদের পীরগাছা প্রতিনিধি আব্দুল কুদ্দুস সরকার, দৈনিক নতুন স্বপ্নের বার্তা সম্পাদক হারুন অর রশিদ বাবু এবং সাংবাদিক শাহীন মির্জা সুমন। এ ছাড়া ভিজিএফ বঞ্চিত আজগার আলী ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঈদের আগে কল্যাণী ইউনিয়নে সরকারিভাবে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু কয়েকজন সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করে একটি ভিডিও ধারণ করেন, যা ইউএনও, ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসক এবং ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।
বাদীর দাবি, তিনি ইউএনও কার্যালয়ে আইনি সহায়তার জন্য যাওয়ার পথে অভিযুক্ত সাংবাদিকরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তার ওপর আক্রমণ চালানো হয়। পরে ইউএনও নাজমুল হক সুমন ও ইউপি প্রশাসক ফারুকুজ্জামান ডাকুয়াকে বিষয়টি অবহিত করে মামলা করা হয়।
কল্যাণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্থলে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ফারুকুজ্জামান ডাকুয়া।
অভিযোগ উঠেছে, তিনি ইউএনওর নাম ব্যবহার করে ভিজিএফের স্লিপ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দেন। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ইউপি সদস্য ও সাংবাদিক শাহীন মির্জা সুমন।
সাংবাদিক আব্দুল কুদ্দুস সরকার বলেন, ইউএনও সুমন পীরগাছায় যোগদানের পর থেকেই একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন। আমরা এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। এমনকি তিনি নিজে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন।
আমি তথ্য অধিকার আইনে একাধিক ভুয়া প্রকল্পের তথ্য চেয়েছি বলেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের নামে মামলা করেন।
ইউএনও সুমনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে সাংবাদিক হারুন অর রশিদ বাবু বলেন, সুমনের বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ করেছি। সর্বশেষ, কল্যাণী ইউনিয়নে ভিজিএফ বিতরণে অনিয়মের খবর প্রকাশ করি। এই ঘটনায় স্থানীয় ভুক্তভোগীরা ইউএনও ও ইউপি প্রশাসকের বিরুদ্ধে জুতা ও ঝাড়ু মিছিল বের করে। আমি সেই মিছিলের লাইভ সম্প্রচার করি। এরপরই ইউএনও আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করালেন।
সাংবাদিক শাহীন মির্জা সুমন বলেন, ইউএনও মামলার বাদী করেছেন নেছারকে। আর কথিত সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজীব মুন্সিকে সাক্ষী করা হয়েছে।
ইউপি প্রশাসক ডাকুয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ইউএনও সুমনের সঙ্গেও মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।