ক্ষমতায় গেলে সবকিছুর তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘‘এ সরকারের কাজ ভালো নির্বাচন দেওয়া কিন্তু তারা নির্বাচন না দিয়ে নিজেরা দল বানাতে ব্যস্ত। ছোট ছেলেরা বলছেন, তারা খুব জনপ্রিয়; তাহলে নির্বাচনে আসেন। আপনাদের নামে এখন যা শোনা যাচ্ছে, রূপায়ন টাওয়ারে ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, এগুলো কার টাকায়? হেলিকপ্টার ছাড়া চলাফেরাই করেন না।’’

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি নিয়ে টানাটানি করবেন না। আমরা সব কিছুর হিসাব নেবো।’

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঠাকুরগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এবং পতিত ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জেলা বিএনপির আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

টিসিবির কার্ড নিয়ে বিএনপির ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধ

১৯ বছর পর সোমবার গোপালগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ, প্রস্তুতি সম্পন্ন

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডা.

মুহাম্মদ ইউনুসকে উদ্দেশ করে দুদু বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক খারাপ। দ্রুত একটি ভালো নির্বাচন দেন। যারা জিতবে তাদের হাতে ক্ষমতা দেবেন। আপনি বলছেন, শিক্ষার্থীদের একটা দল থাকা দরকার। তাহলে আপনি তো শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আপনি তো তাহলে নিরপেক্ষ না। আপনার পদত্যাগ এখনো কিন্তু আমরা দাবি করিনি। আপনি দুই নম্বরি করলে আপনার সুনাম পদদলিত হবে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘যে কোনো অবস্থায় বিএনপি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে। গণতন্ত্রের জন্য যত রক্ত লাগে, যত প্রাণ দিতে হয়, সব দেবে বিএনপি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিএনপি পিছু হটবে না।’’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘‘বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এটা অনেকে সহ্য করতে পারছেন না। বিএনপি ছাড়া বিকল্প কোনো দল নেই।’’

সমাবেশে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মির্জা ফয়সাল আমিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক ও মো. আমিনুল ইসলামসহ জেলা বিএনপির নেতারা।

ঢাকা/হিমেল/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন

ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির পাশাপাশি নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণহীন এবং জনপরিসরে নারীদের নিরাপত্তা যে ঝুঁকিপূর্ণ—এ ঘটনা তারই একটি উদাহরণ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা এবং সরকারের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’–এর একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসে ডাকাতি শুরু হয়। তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি এবং দু-তিনজন নারীকে যৌন নিপীড়ন করে ডাকাতেরা বাস থেকে নেমে যায়।

এরপর বাসের চালক, তাঁর সহকারী ও সুপারভাইজারের নানা টালবাহানা সত্ত্বেও যাত্রীরা বাসটি নিয়ে মামলা করার জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যান। সেখানে তখন থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ছিলেন না বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় ঢোকানো হলেও কোনো মামলা নেওয়া হয়নি।

ডাকাতির ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেছিল পুলিশ। নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতের সামনে হাজির করলে আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন। এদিকে গতকাল শনিবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, এমন খবর পাওয়া গেছে।

লক্ষণীয় হলো, ডাকাতি ও যৌন নিপীড়নের ঘটনাটি সোমবার রাতে হলেও পুলিশ এ-সংক্রান্ত মামলাটি নিয়েছে তিন দিন পর অর্থাৎ শুক্রবার। ‘ধর্ষণ’, যৌন নিপীড়ন এবং ডাকাতির এ রকম গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও মামলা নিতে বিলম্ব হলো কেন? পুলিশ কি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি আমলে নেয়নি—এ রকম প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের সময়ক্ষেপণ ও শৈথিল্য যে স্পষ্ট, তা প্রমাণিত হয়েছে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।

ডাকাতি ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তিন দিন পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় হওয়া মামলায় বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা। এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, মামলার বাদীকে পুলিশ এজাহারের বর্ণনা পড়ে শোনাননি। মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশের এ রকম ভূমিকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মামলার শুরুতেই এ রকম অবহেলা বা গাফিলতি করলে পরে নানা জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

বাসে ডাকাতি ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক এ রকম ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে এখন বেশ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

বিগত স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছিল। এ সরকারের মেয়াদ ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি কমেনি; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও প্রত্যাশিত উন্নতি লক্ষ করা যায়নি। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু হয়েছে। এরপরও অন্তর্বর্তী সরকার কেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

সরকারের উচিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। অন্তর্বর্তী সরকারের এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোনো শৈথিল্য গ্রহণযোগ্য নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: ছাত্রশিবির
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ
  • নির্বাচন কবে জানালেন সিইসি
  • দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ
  • সুনামগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার
  • ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তদের বিচার চান জাবি শিক্ষার্থীরা 
  • সারা দেশে ধর্ষণ, ছিনতাই ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ মিছিল
  • নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন
  • ‘বইয়ের অনুবাদ স্বত্ব কেনা মোটেও সহজ নয়’