তিন জাতি সিরিজ খেলার সুবাদে এ মাসের শুরু থেকেই পাকিস্তানে আছে নিউজিল্যান্ড দল। স্বাগতিক পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজটাও জিতেছে। এরপর করাচিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে ভালো শুরু হলো চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যুগল আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হয়েছে নিউজিল্যান্ডের। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এখানে থেকে পাকিস্তানের কন্ডিশনের সঙ্গে যেমন দারুণ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, যোগ হয়েছে স্বাগতিকদের হারিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে পাওয়া আত্মবিশ্বাসও।

তবে এর মধ্যেই আগামীকাল রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়ার আগে একটা ভয় মিচেল স্যান্টনারের মনে। তাঁর চোখে ‘ভালো দল’ বাংলাদেশ অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে যেকোনো বড় দলকে হারিয়েই। আজ রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে অনুশীলনের আগে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই বলেছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলীর প্রসঙ্গ টেনেই বলেছেন, ‘গত ম্যাচে দারুণ ইনিংস খেলেছে হৃদয়। জাকের আলীও বেশ ভালো ইনিংস খেলেছে। কাজেই দলটাকে আমরা হালকাভাবে নিচ্ছি না। এ রকম বড় আসরে তারা যেকোনো দলকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে। আশা করি, সেটা আমরা হব না।’

ভারতের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে স্যান্টনারের মন্তব্য, ‘এই মুহূর্তে তারা খুব ভালো দল।’ অবশ্য কথাটা তিনি বলেছেন বাংলাদেশের পেস বোলারদের দিকে ইঙ্গিত করে, ‘স্পিন দিয়ে সব সময় তারা কাজ চালাত। কিন্তু এখন তাদের বেশ কয়েকজন ভালো দ্রুতগতির বোলার আছে। আমরা জানি, ফিজ (মোস্তাফিজ) কতটা ভালো করতে পারে। রানার মতো গতিময় বোলারও এসেছে দলে। দেশে ও দেশের বাইরে দলটার বিপক্ষে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। কাজেই আমরা তাদের ভালোই জানি, ওরাও আমাদের সম্পর্কে জানে।’

নিউজিল্যান্ডের নতুন অধিনায়ক স্যান্টনার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স য ন টন র

এছাড়াও পড়ুন:

হিজরতের ৫টি শিক্ষা

সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:

১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালন

হিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)

২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ

হিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।

আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বে

ওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা

হিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতা

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।

হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ