সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গত আগস্টে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলমান অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম প্রকাশ করে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে জুলাই মাসে হঠাৎ কমে যায় রেমিট্যান্স। তবে দেশের পট পরিবর্তনের পর পরই চাঙ্গা হয়ে উঠে প্রবাসী আয়ের গতিপথ। এরপর টানা ছয় মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি করে রেমিট্যান্স আসে।

তারই ধারাবাহিকতা রয়েছে চলতি মাস ফেব্রুয়ারিতেও। মাসটির প্রথম ২২ দিনে ১৯২ কোটি ৯৯ লাখ ৪০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশিয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা।

অর্থাৎ চলতি মাস ফেব্রুয়ারিতেও দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে রেমিট্যান্স। এর আগে নতুন বছরের প্রথম মাসের (জানুয়ারি) পুরো সময়ে ২১৯ কোটি (২.

১৯ বিলিয়ন ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আর অর্থবছরের হিসাবে গত আগস্ট থেকে টানা ৬ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম ২২ দিনে প্রায় ১৯৩ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৮ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৪৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

তবে আলোচিত সময়ে কোন রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক। আর বিদেশিখাতের ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এর আগে ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার বেশি। একক মাস হিসাবে আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বরে) এক হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮০ কোটি ডলার।

এএ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: র র ম ট য ন স এস ছ র র প রথম ড স ম বর

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে পেঁয়াজের দাম কমতে পারে, লোকসানের শঙ্কায় কৃষকেরা

প্রায় দেড় বছর ধরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল ভারত সরকার। পেঁয়াজের মজুত বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর এই বিধিনিষেধ থেকে বেরিয়ে এল দেশটি। গত শনিবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী ১ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে সব শুল্ক তুলে নিচ্ছে দেশটি। এত দিন ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।

এমন সময়ে ভারত শুল্ক প্রত্যাহার করছে, যখন দেশের বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজে ভরপুর। উৎপাদন মৌসুমের কারণে দেশি পেঁয়াজের দামও তুলনামূলক কম। দেশের বাজারে দাম তুলনামূলক কম থাকায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিও কমেছে। আগে যেখানে প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হতো, সেখানে গত জানুয়ারিতে আমদানি হয়েছে ২৯ হাজার টন। ফেব্রুয়ারি মাসে তা আরও কমে নেমেছে ২৪ হাজার টনে।

আমদানিকারক ও উৎপাদকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তার দুটি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের বাজারে। প্রথমত ভারতের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। অর্থাৎ ক্রেতারা বর্তমানের চেয়ে আরও কম দরে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। দ্বিতীয়ত দেশি পেঁয়াজ উৎপাদকেরা ভালো দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন। ভালো দাম না পেলে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হতে পারেন কৃষকেরা।

* বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৪১ থেকে ৪২ টাকা। * শুল্ক প্রত্যাহার করায় ২৫ থেকে ৩০ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করা যাবে। * বাজারে এখন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, পেঁয়াজের দামে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে কৃষি বিভাগ। কারণ, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি বিভাগ। এখন ভারত থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত আমদানির অনুমতির মেয়াদ রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে এই ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে কৃষি বিভাগ; যাতে ভোক্তাদের পেঁয়াজ কিনতে বেশি দাম দিতে না হয়, আবার উৎপাদকেরাও যেন ন্যায্য দাম পান।

আমদানি খরচ কমবে ৯-১০ টাকা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানির দাম পড়ছে ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ খালাসের সময় শুল্ক–কর দিতে হচ্ছে ৫ টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৪১ থেকে ৪২ টাকা। এর বাইরে রয়েছে পরিবহন খরচ। তবে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা জানান, ভারতের রপ্তানি শুল্কের কারণে এত দিন পেঁয়াজ আমদানিতে প্রতি কেজিতে বাড়তি খরচ পড়ত ৯ থেকে ১০ টাকা। শুল্ক প্রত্যাহার করায় প্রতি কেজিতে এই খরচ কমবে। তাতে ভারত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানিতে ২৬ থেকে ২৭ টাকা খরচ পড়তে পারে।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মারিয়া করপোরেশনের কর্ণধার মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভারত শুল্ক প্রত্যাহার করায় ২৫ থেকে ৩০ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করা যাবে। এতে পেঁয়াজের দামে অস্থিতিশীলতার শঙ্কা থাকবে না।

শুল্ক প্রত্যাহারে শঙ্কায় কৃষকেরা

ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করায় এখন দেশি উৎপাদকেরা শঙ্কায় আছেন। কারণ, উৎপাদন মৌসুমের কারণে এমনিতেই পেঁয়াজের দাম কম। নতুন করে কম দামে আমদানি হলে উৎপাদকদের ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এতে লোকসানেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির হিসাবে, বাজারে এখন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। গত বছর এই সময়ে দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এবার কৃষকেরা পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়িয়েছেন। তবে বাজারে দাম কমে যাওয়ায় এখন তাঁদের মাথায় হাত।

কৃষকেরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে যে পেঁয়াজের দাম, তাতে তাঁদের উৎপাদন খরচও উঠছে না। নতুন করে দাম আরও কমলে তাঁরা লোকসানের শিকার হবেন।

পাবনার সাঁথিয়ার বায়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি আবদুল হাই সরকার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বাজারে বর্তমানে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তাতে উৎপাদন খরচই উঠবে না। এমনিতে বৃষ্টির কারণে এবার ফলনের ক্ষতি হয়েছে। এখন দামের কারণেও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। প্রতি কেজি হালি পেঁয়াজ উৎপাদনে ৪৫ টাকার মতো খরচ পড়েছে। অথচ বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। ভারত রপ্তানি শুল্ক তুলে নেওয়ায় দাম আরও কমলে কৃষকেরা বড় ক্ষতিতে পড়বেন।

পেঁয়াজের তথ্যে অস্পষ্টতা

দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ও উৎপাদন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অস্পষ্টতা চলে আসছে। যেমন কৃষি বিভাগের হিসাবে গত অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৯ লাখ টন। পরিসংখ্যান ব্যুরো কৃষি বিভাগের হিসাব থেকে ২৫ শতাংশ বাজারজাতজনিত ক্ষতি বাদ দিয়ে হিসাব করে। তাদের হিসাবে, গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ২৯ লাখ ১৭ হাজার টন। আবার ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে, বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন।

চাহিদার বাড়তি উৎপাদন হওয়ায় পেঁয়াজ রপ্তানি হওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিবছর পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। যেমন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার টন।

দেশে প্রতিবছর কী পরিমাণ পেঁয়াজের প্রয়োজন, তার কত অংশ দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব এবং কত অংশ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে, এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য নেই। আর সেই সুযোগটাই নেন মজুতদারেরা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন তাঁরা। ফলে এই সময় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন উৎপাদকেরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২৪ দিনে এল ২৭০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়
  • ন্যাশনাল ফিডের লোকসান বেড়েছে ১৬৬.৬৭ শতাংশ
  • ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে ইস্টার্ণ ব্যাংক
  • ‘সিগারেটে মূল্যস্তর তিনটি হলে রাজস্ব বাড়বে, ব্যবহার কমবে’
  • সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ পাচ্ছেন ইমাম-মুয়াজ্জিনরা
  • সিগারেটের মূল্যস্তর তিনটি করার দাবি প্রজ্ঞা-আত্মার
  • সুদমুক্ত ঋণ পাচ্ছেন ইমাম-মুয়াজ্জিনরা
  • দেশে পেঁয়াজের দাম কমতে পারে, লোকসানের শঙ্কায় কৃষকেরা
  • সামিট পাওয়ারের অর্ধবার্ষিকে মুনাফা কমেছে ৩৭ শতাংশ
  • প্রথম দুই প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে সামিট পাওয়ারের