সম্প্রতি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের ভাষ্য, দেশব্যাপী ছিনতাই, হামলা, ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে গেছে। দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান তাঁরা।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত সরকারের আমলে ধর্ষণসহ নানা অপরাধের বিষয়ে কোনো বিচার হয়নি। সে জন্য অপরাধীরা সাহস পেয়ে গেছে। এসব বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে শক্ত হাতে অপরাধীদের দমন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাঁরা দাবি জানান।

প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান সানি বলেন, দেশে হঠাৎ করে ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত, অপরাধীদের দ্রত আইনের আওতায় আনা এবং শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসা।

মানুষের জীবনের নিরাপত্তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নিরাপদে বাঁচতে চাই। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা রাষ্ট্রের দিতে হবে।’ এ সময় তিনি ধর্ষণকারীদের আইনের আওতায় আনতে অপারেশন ডেভিল হান্টের মতো ‘অপারেশন রেপিস্ট হান্ট’ শুরু করতে সরকারের কাছে দাবি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরে আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতা উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। ক্রমবর্ধমান অপরাধমূলক কার্যকলাপ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার ভয় তৈরি করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী খায়রুল আহসান মারজান বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব হলো দেশের মানুষের জান, মাল ও সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কিন্তু তিনি তা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তিনি মিডিয়াতে দায়সারা বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি যদি কাজ করতে না পারেন, তাহলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদ থেকে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ আলী, ইয়াসিন আরাফাত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত সরক র র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

‘বইয়ের অনুবাদ স্বত্ব কেনা মোটেও সহজ নয়’

মুম রহমান গল্পকার, ঔপন্যাসিক। অনুবাদক হিসেবে তার আলাদা পরিচিতি রয়েছে পাঠক সমাজে। পাশাপাশি তিনি শিল্প সমালোচক, নাট্যকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। গদ্যকার হিসেবে গণমাধ্যম সম্পাদকদের কাছেও তিনি সমাদৃত। প্রকাশিত গ্রন্থ ৫০-এর অধিক। শিক্ষকতা, বিজ্ঞাপন কর্মকর্তা, সাংবাদিকতা, এনজিও ইত্যাদি নানা পেশা ছেড়ে বর্তমানে পূর্ণকালীন লেখক। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে অনুবাদ প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন অলাত এহ্‌সান। 

অলাত এহ্‌সান: দেশে অনূদিত বইয়ের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনুবাদক হিসেবে আপনি কী বলেন? 

মুম রহমান: আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের মতোই। আমিও লক্ষ্য করেছি, অনুবাদ হওয়া বই সংখ্যায় বাড়ছে এবং সেইসব বইয়ের প্রতি পাঠক, সমালোচক, প্রকাশক এবং ক্রেতা-বিক্রেতার আগ্রহ বাড়ছে।

আরো পড়ুন:

একুশে ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হবে সকাল ৭টায়

‘অনুমতি ছাড়া অনূদিত বই প্রকাশ সম্পূর্ণ অবৈধ’ 

অলাত এহ্‌সান: এ প্রসঙ্গে যে প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো- বইগুলোর অনুবাদ স্বত্ব। আমাদের এখানে অধিকাংশ অনূদিত বইয়ের অনুবাদ স্বত্ব নেয়া হয় না। এর কারণ কী বলে মনে করেন?

মুম রহমান: এর প্রথম কারণ অনেকটাই অর্থনৈতিক। এটা তো স্বীকার করতে হবে আমাদের দেশে একটা বই ছাপা হয় ৩০০ থেকে ৫০০ কপি। সব কপিও এক বছরে বিক্রি হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে বই ছাপানোর খরচ, অনুবাদকের পারিশ্রমিক দিয়ে প্রকাশককে লাভের মুখ দেখতে বেগ পেতে হয়। আদতে প্রকাশনা ব্যাপারটা এ দেশে এখনও বুটিক ইন্ডাস্ট্রি বা কুটিরশিল্প পর্যায়ে রয়ে গেছে। যেসব বই আমরা অনুবাদ করি, মূল ভাষায় বা ইংরেজিতে তা ছাপা হয় লাখ লাখ কপি। ফলে সেখান থেকে লেখক, প্রকাশক একটা বড় অঙ্কের আর্থিক সাফল্য আশা করতে পারেন। সচরাচর দেখা যায়, আমরা খুব আলোচিত বইগুলোই অনুবাদ করি। এইসব বইয়ের বৈশ্বিক বাজার বিশাল। কিন্তু বাংলাদেশে সেই বই ৫০০ বা বড় জোর ১০০০ কপি বিক্রি হতে পারে। এখন ১০০০ বই প্রকাশ করতে ১ বছরে ধরে নিন ১ লাখ টাকা লগ্নি করলেন, তাতে বছর শেষে কতো টাকাই-বা উঠে আসতে পারে? 

দ্বিতীয়ত আমাদের প্রকাশনা যেহেতু এখন বিশ্ব প্রকাশনার সঙ্গে সংযুক্ত নয়, আমাদের প্রকাশনা এখনও বড় মাপের ব্যবসায়িক পূঁজির নয়, সেহেতু বাইরের বইয়ের স্বত্ব কেনাটা চাইলেও সহজ নয়। ধরুন আমি বা আপনি সদ্য নোবেলজয়ী কোনো লেখকের বই অনুবাদ করতে চাই এবং কপিরাইট নিয়েই; তাহলেও কিন্তু ব্যাপারটা কঠিন। বিশ্বে বই প্রকাশনা পেশাদার এজেন্ট নির্ভর। সেই এজেন্টদের সঙ্গে আমাদের সংযোগ নেই। আর একজন সদ্য নোবেল লরিয়েটের কাছে পৌঁছানো, তার বইয়ের অনুবাদ স্বত্ব কেনা মোটেও সহজ নয়। আমি এখনও বাংলাদেশে দেখিনি, শুনিনি যে নোবেলজয়ী কোনো লেখকের অনুমতিসাপেক্ষে তার অনুবাদ দেশে প্রকাশিত হয়েছে। 

অলাত এহ্‌সান: অনুবাদ স্বত্ব না কেনায় আমাদের অনুবাদকেরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। এমনকি উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, কলকাতায় কিছু বই অনুবাদ হয়, পাঠক সমাদর পায় এই কারণে। তাতে আমরা কি পিছিয়ে পড়ছি না? 

মুম রহমান: পিছিয়ে তো পড়েছি। সবচেয়ে বড় কথা, পাঠক হিসেবেই আমরা পিছিয়ে আছি। তারপর প্রকাশক, আন্তর্জাতিক অনুবাদ সংগঠকদের সঙ্গে যোগাযোগেও আমরা পিছিয়ে আছি। আর এই পিছিয়ে থাকার মূল কথাটা অর্থনৈতিক। এর ব্যাখ্যা আমি একটু আগেই দিয়েছি। যেখানে বই মূদ্রিত হয় ৫০০ কপি সেখানে অনুবাদককে যদি ১৫% রয়্যালটি দেন আর মূল লেখক বা যিনি অনুবাদ করেছেন তাকে যদি ১৫% দেন তাতে বইয়ের দাম হয়ে যাবে অনেক। তাছাড়া আপনি একজন বিদেশি লেখককে কতো টাকা দেবেন? আমরা একটা ভালো বিক্রি হওয়া বই থেকে সারা বছরে হয়তো ১০ হাজার টাকা রয়্যালটি পাই, ডলার বা পাউন্ডে তার পরিমাণ কতো? এখন একজন নোবেল লরিয়েট কিংবা বেস্ট সেলার লেখককে কি আপনি ২০০ বা ৪০০ ডলার বা পাউন্ডে সম্মানী দেবেন? ওটা তো ওদের কাছে খুচরো টাকার মতো। না হয় আপনি দিলেন, কিন্তু আপনি এ দেশের মার্কেট থেকে টাকা উঠিয়ে আনবেন কীভাবে? আপনি তো হাজার হাজার পাঠক, ক্রেতা তৈরি করতে পারেননি। 

অলাত এহ্‌সান: দেশে একটা বইয়ের পাঁচ-সাতটা পর্যন্ত অনুবাদ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পাঠক কোনটা বেছে নেবেন? অনুবাদ স্বত্ব নিলে এমনটা হতো না। অনুবাদের মান নিয়েও কিছু বলার থাকত না।  

মুম রহমান: মান নির্ধারণ কে করবে? পাঠক তো? তো সেটা পাঠকই ঠিক করে নেবে, কোন অনুবাদটার মান কেমন? সে কার বই কিনে পড়বে। পাঠক হিসেবে আপনি-আমিও মতামত দিতে পারি, প্রচার করতে পারি অনুবাদের মান নিয়ে। আসলে যে কোনো দেশের যে কোনো ভাষার সাহিত্যিকের ক্ষেত্রেই আমরা দেখতে পাই পুরস্কার পাওয়ামাত্র তার বই অনূদিত হচ্ছে, ছাপা হচ্ছে। এটা বাণিজ্যিক কারণেই হয়। বাজারে যার চাহিদা আছে তার সাপ্লাই সবাই দিতে চায়। 

অলাত এহ্‌সান: অনুবাদ বইয়ের প্রকাশনা এখন বিকাশমান একটা ক্ষেত্রে। কিন্তু মানহীন প্রকাশনার কারণে পাঠক নিজেদের প্রতারিত বোধ করে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তাহলে প্রকাশনাও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। আবার প্রকাশনীগুলোতে এখনো অনুবাদ বইয়ের পাণ্ডুলিপি দেখার মতো দুই ভাষাতেই দক্ষ ব্যক্তি কম। তাহলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

মুম রহমান: আপনার নিশ্চয়ই ধারণা থাকার কথা এ দেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে। তারা লেখকের রয়্যালটি দিতেই গড়িমসি করে, দামাদামি করে, সেখানে আপনি আশা করতে পারেন না যে একেকটা প্রকাশনীতে অনুবাদ বইয়ের পাণ্ডুলিপি দেখার জন্য একেক ভাষার বিশেষজ্ঞ রাখবেন তারা। এটা অর্থনৈতিকভাবেও সম্ভব না, চিন্তাটাও অবাস্তব। এমন তো নয় যে আমাদের দেশে হাজার হাজার ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ পয়দা হয়েছেন। এক সময় বলতো- যার হয় যক্ষা তার নাই রক্ষা। এখন যক্ষা কোনো রোগই না। আমাদের প্রকাশনার ক্ষেত্রে আপনি রক্ষা পাওয়ার যে প্রশ্ন তুলছেন তা একদিন আপোষেই উত্তর পেয়ে যাবেন। সহজ কথাটা হলো, আপনার বাজারে ক্রেতা থাকলে পণ্য আসবেই। বইকে যদি পণ্য ধরেন, আর পর্যাপ্ত বইয়ের ক্রেতা যদি থাকে তাহলে নানা দেশ থেকে নানা ভাষার অনুবাদক, বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসা যাবে। প্রকাশনাশিল্প রক্ষার একমাত্র উপায় পাঠক বৃদ্ধি করা। মানহীন হলে তা এমনিতেও টিকবে না। মানসম্মত অনুবাদ হলে এবং তার পর্যাপ্ত বাজার চাহিদা হলে প্রকাশকরা লগ্নি করবেন। তাতে পাঠক, প্রকাশক কেউই ঠকবেন না। 

অলাত এহ্‌সান: দেশে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে লেখক-প্রকাশক চুক্তি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। অনুবাদের ক্ষেত্রেও কথাটা বলা যায়। অনেক ক্ষেত্রে অদক্ষ কাউকে দিয়ে, আবার ‘গুগল ট্রান্সলেট’ বলেও শোনা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রকাশকের ভূমিকা কেমন হওয়া দরকার মনে করেন?

মুম রহমান: প্রথমত প্রকাশককে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি সচেতন হতে হবে। আমাদের প্রকাশনায় জড়িত একটা বিরাট জনগোষ্ঠীর কিন্তু শিল্পসাহিত্য জ্ঞান নেই। প্রকাশকের কাজ তো বই ছাপা না। ভালো প্রোডাকশন, ভালো ছাপাখানা, ভালো কাগজ, চকচকে প্রচ্ছদ একটা বইকে ভালো চেহারা দেয়, কিন্তু বইয়ের ভেতরের খবর রাখাটা হলো প্রকাশকের আসল কাজ। সঠিক পাণ্ডুলিপি নির্বাচন করা প্রকাশকের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। ‘গুগল ট্রান্সলেট’ যদি কোন প্রকাশক ছেপেও থাকেন তাকে আমি প্রকাশক বলবো না, মূদ্রাকর বা বই ছাপা-বাঁধাইয়ের লোক বলবো।  

অলাত এহ্‌সান: অনুবাদগ্রন্থে একটা বিশেষ দিক চোখে পড়ছে, প্রবাসী অনেকে অনুবাদ করছেন। এটা দারুণ! কিন্তু যে আলাপটা নানাভাবে সামনে আসছে— প্রকাশকরা তাদের বই প্রকাশে খুশি হচ্ছেন দুই কারণে— ১. অনুবাদ বইয়ের বিক্রি ও ২. অনুবাদকের সম্মানী এড়ানোর সুযোগ। আপনি কী বলবেন? 

মুম রহমান: আপনার কথার সঙ্গে আমি এটুকু যোগ করবো, ভাষা জ্ঞান আর সাহিত্য জ্ঞান এক না। শিক্ষিত হলেই সাহিত্যিক হওয়া যায় না। আবার দুটো ভাষা জানলেই এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় অনুবাদ করা যায় না। অনুবাদ আসলে কেবল শব্দার্থ ধরে এগিয়ে যাওয়া নয়, বরং এটা আরো অনেক বেশি গভীরতর সাংস্কৃতিক, শৈল্পিক কর্মকাণ্ড। আপনি পোলান্ডে থাকলেন, সেখানে বিয়ে করলেন, সংসার পাতলেন, বাচ্চা-কাচ্চা হলো এবং আপনি ও আপনার শিশুরা অনুবাদ শুরু করে দিলেন, পোলিশ থেকে বাংলায় বা বাংলা থেকে পোলিশে— সেক্ষেত্রেও কিন্তু গ্যারান্টি দেয়া যায় না যে আপনি ও আপনার পরের প্রজন্ম ভালো অনুবাদক হবে। 

একটা জায়গায় বা সংস্কৃতি বলয়ে থাকলে হয়তো কিছু সুবিধা হয়, কিন্তু সবার আগে তো নিজের মাতৃভাষা; মা, মাটিকে চিনতে হয়। শেকড় মজবুত হতে হবে, নইলে গাছ টিকবে না। এরপর অনুবাদক হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট লেখক এবং সেই লেখকের প্রতি একান্ত আনুগত্য, প্রেম থাকা জরুরি। বইয়ের বিক্রি আর সম্মানী এড়ানোর ফায়দাটা তো প্রকাশক দেখেনই, সেটা শুধু অনুবাদ নয়, মৌলিক বইয়ের ক্ষেত্রেও। বাংলাবাজারে কারো কারো মুখে শুনেছি প্রবাসী লেখক ধরার জন্য নাকি এক শ্রেণীর প্রকাশক আছে যাদেরকে বলা হয় ‘মুরগি ধরা লেখক’। মানে এই লেখকদের অগল্প, অকিবতা, অপন্যাস বা অপঅনুবাদ প্রকাশকরা ছাপছেন লেখকদের কাছ থেকে ডলার নিয়ে কিংবা লেখকের আমন্ত্রণে বিদেশ ভ্রমণ করে। কিন্তু এগুলো খুবই খণ্ডচিত্র। এসব কখনো মূলধারা প্রকাশকরা করেন না। আপনি খাদ্য, ওষুধ, দরকারি পণ্য ব্যবসাতেও তো অসততা দেখেন, প্রকাশনায় কি থাকবে না? তারা আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুর লোক নন। উপরন্তু প্রবাসেও আমাদের অনেক বড় বড় লেখক আছেন। কাজেই ঢালাওভাবে সব কিছুকে খারাপ বলা যায় না। 

অলাত এহ্‌সান: প্রকাশনা ও লেখালেখির ক্ষেত্রে একটা বিরাট ঝুঁকি হয়ে গেছে বই পাইরেসি। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখি না।

মুম রহমান: আপনার ধারণা নেই, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কী পরিমাণ শ্রম দিতে হয়। একটা বিশৃঙ্খলতার মধ্যে আমরা আছি। খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ডাকাতি, চুরিসহ নিত্যনতুন উপায়ে অপরাধ হচ্ছে দেশে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো স্বভাবতই বড় বড় অপরাধ আর অন্যায় রোধেই ব্যস্ত থাকবে। বইয়ের পাইরেসি, সিনেমার পাইরেসি নিয়ে কাজ করতে গেলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিসর আরো বড় করতে হবে। এ বিষয়ে আরো বিশেষজ্ঞ লোক নিয়োগ দিতে হবে। আগে তো ভাত, ডাল খাবো, পরে না হয় সালাদের কথা ভাববো। দেশে নানা ক্ষেত্রেই আগে নিরাপত্ত আসা জরুরি, তারপর না হয় বইয়ের কথা আসবে। 

তারা//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: ছাত্রশিবির
  • আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ
  • নির্বাচন কবে জানালেন সিইসি
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবকিছুর তদন্ত হবে: দুদু 
  • ঝিনাইদহে জাসদ গণবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
  • পোপ ফ্রান্সিসের অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’
  • রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • ‘বইয়ের অনুবাদ স্বত্ব কেনা মোটেও সহজ নয়’
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে দেশে আজ চরম অরাজক পরিস্থিতি: সেলিমা রহমান