চেক প্রত্যাখ্যানের মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ভাইয়ের কারাদণ্ড, জরিমানা সাড়ে ৩ কোটি টাকা
Published: 23rd, February 2025 GMT
মেহেরপুরে চেক প্রত্যাখ্যানের মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা সরফারাজ হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ড পাওয়া সরফারাজ হোসেন মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ৪ আগস্ট মেহেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় গত ৭ জানুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার চেক প্রত্যাখ্যানের মামলা করেন সরফারাজের ঠিকাদারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের একসময়ের অংশীদার দেবাশীষ বাগচি। ওই মামলায় আজ তাঁর সাজা হলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসনে ফরহাদ হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিবেশী দেবাশীষ বাগচিকে অংশীদার হিসেবে নিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন তাঁর ছোট ভাই সরফারাজ হোসেন। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ, শিক্ষা কার্যালয়, হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৫টি ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেন। ১১টি ঠিকাদারি কাজে দেবাশীষকে অংশীদার হিসেবে রাখেন। পরে দেবাশীষের পাওনা ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার চেক দিয়ে তাঁকে ব্যবসা থেকে সরিয়ে দেন সরফারাজ। তবে সরফারাজের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা ছিল না। টাকা তুলতে গিয়ে দেবাশীষ প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন।
আজ আদালত শুনানি শেষে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন। আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন খ ম ইমতিয়াজ বিন হারুন ও আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এম এ মতিন।
আইনজীবী ইমতিয়াজ বিন হারুন বলেন, আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছেন দেবাশীষ বাগচি। সরফারাজ হোসেন তাঁর কাছে যে চেকটি দিয়েছিলেন, সেই চেক আমলে নেন আদালত। এরপর তাঁর বাড়িতে হামলা ও তাঁকে এলাকাছাড়া করার অপরাধ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী এম এ মতিন বলেন, ‘এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের পরিবারে নেমে আশে মহাবিপদ। অথচ এই মানুষগুলোই সারা দিন তাঁদের পাশে থাকত একটু সুবিধা নেওয়ার জন্য।’
আদালত চত্বরে কথা হয় মামলার বাদী দেবাশীষ বাগচির সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা পাওনা টাকা দিতে চাননি। এমনকি আমাকে ছেলেমেয়ে নিয়ে মেহেরপুর ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আজ আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়ার পর সব কষ্ট হালকা মনে হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যারাডোনাকে হত্যা করা হয়েছে
বুয়েনস এইরেসের সান ইসিদরো আদালতে চলছে মামলার শুনানি। ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যু অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু, নাকি অবহেলা ছিল চিকিৎসকদের, তা খতিয়ে দেখছেন আদালত। কিংবদন্তির শেষ দিনগুলোয় তাঁর চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিলেন যে আটজন চিকিৎসক, তাঁদের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলাজনিত অপরাধের অভিযোগে চলছে বিচার কার্যক্রম।
বাদীপক্ষ ম্যারাডোনার দুই মেয়ে দালমা ও জিয়ান্নিনার হয়ে আদালতে লড়ছেন আর্জেন্টাইন আইনজীবী ফের্নান্দো বার্লান্দো। এক টিভি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘পশুর সঙ্গে যেমন আচরণ করে, ডিয়েগোর সঙ্গে সেটাই করা হয়েছে। আদালতে যা কিছু দেখা গেছে, সেটাই প্রমাণ করে।’
আরও পড়ুনমেসির দেহরক্ষীকে নিষেধাজ্ঞা৪ ঘণ্টা আগেআর্জেন্টিনার টিভি চ্যানেল এলত্রেসে প্রচারিত অনুষ্ঠান ‘লা নোচে দে মিরথা’য় বার্লান্দো ব্যাখ্যা করেন, ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ম্যারাডোনাকে হত্যা করা হয়েছিল—এটা প্রমাণ করাই তাঁর আইনি দলের লক্ষ্য, ‘অবহেলার বিষয়টি আমরা আগেই পেরিয়ে এসেছি। এখন তা বিচারিকভাবে প্রমাণের চেষ্টা করছি।’
এই পৃথিবীতে ডিয়েগোর অনুপস্থিতিতে লাভটা তৃতীয় পক্ষের, যারা তাঁর উত্তরাধিকার নয়। কিছু লোক আছে, যারা কিছু সন্দেহজনক চুক্তিপত্র সইয়ের মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর পরও লাভবান হচ্ছে, এমনকি তাঁর ওপর ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে।ফের্নান্দো বার্লান্দো, ম্যারাডোনার মেয়ে দালমা ও জিয়ান্নিনার পক্ষের আইনজীবীবার্লান্দোর দাবি, পরিকল্পনা করে ছিয়াশির বিশ্বকাপ কিংবদন্তিকে মেরে ফেলা হয়েছে। চিকিৎসাজনিত অবহেলা তাঁর মৃত্যুর কারণ নয়, ‘আমি একমত, কোনো সন্দেহ নেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা আর্জেন্টাইন অভিনেত্রী ও সঞ্চালক মিরথা লেগ্রান্দ আইনজীবী বার্লান্দোর কাছে জানতে চান, ম্যারাডোনাকে মৃত্যুমুখে পতিত করা হয়েছে, নাকি হত্যা করা হয়েছে?’ বার্লান্দোর উত্তর, ‘ম্যারাডোনার মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা আটজন ইচ্ছাপ্রসূত হত্যার দায়ে জড়িত। কেউ যখন সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, এ ক্ষেত্রে যেটা মৃত্যু এবং তাদের আচরণে মনে হয় কিছুই হয়নি, তখন এটা হত্যা।’
ম্যারাডোনার দুই মেয়ে দালমা ও জিয়ানিন্নার পক্ষের আইনজীবী ফের্নান্দো বার্লান্দো